• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মশায় অতিষ্ঠ নগরবাসী, নেই নিধন কার্যক্রম


নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর মে ২৫, ২০১৭, ০৭:৪৭ পিএম
মশায় অতিষ্ঠ নগরবাসী, নেই নিধন কার্যক্রম

রংপুর: মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে রংপুর মহানগরবাসী। ২০৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মহানগরীতে মাত্র চারটি ওষুধ ছিটানোর ফগার যন্ত্র দিয়ে মশা নিধনে হিমশিম খাচ্ছে রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক)।

তবে নগরবাসীর অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনে তেমন কোনো কার্যক্রম নেই।

এদিকে মশার প্রধান উৎপত্তিস্থল নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত শ্যামাসুন্দরী ক্যানেল ঝোপ-জঙ্গলে পরিণত হওয়ার কারণে মশার উপদ্রব অনেক গুণ বেড়ে গেছে বলেও অভিযোগ নগরবাসীর।

ক্যানেলটি মশার প্রধান উৎপত্তিস্থল হওয়ায় মেয়র সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু বলেছেন, দিন দিন এই ক্যানেলটি যেন নগরবাসীর আপদ হয়ে উঠেছে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনে রূপান্তরিত হওয়ার আগে পৌর এলাকার আয়তন ছিল ৫২ বর্গকিলোমিটার, যা বর্তমানে বেড়ে ২০৩ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। এই বিরাট এলাকায় মশা নিধনের জন্য ওষুধ স্প্রে করতে মাত্র চারটি ফগার যন্ত্র রয়েছে। এক অঞ্চলে ওষুধ স্প্রে করতে গিয়ে অনেক সময় লেগে যায়। অন্য অঞ্চলে করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে মশার বিস্তার রোধ করা যায় না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার শ্যামাসুন্দরী ক্যানেলটি নিয়মিত সংস্কার না হওয়ায় ঝোপ-জঙ্গলে ভরে গেছে। আবার কোথাও পানি জমে আছে। নেই কোনো পানিপ্রবাহ। অনেক স্থানে দেখা গেল মানুষজন তাদের বাসাবাড়ির বর্জ্য ক্যানেলের মধ্যে ফেলে রেখেছে। ফলে পুরো খাল মশার উৎপত্তিস্থল হয়ে উঠেছে।

এছাড়া নগরের বেশির ভাগ এলাকায় আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত স্থান না থাকায় যেখানে-সেখানে আবর্জনা স্তূপ করে রাখা হয়। নিয়মিত পরিষ্কার হয় না নগরীর নর্দমাগুলো। এসব কারণে মশা থেকে রেহাই পাচ্ছে না নগরবাসী।

নগরীর শাপলা চত্ত্বর এলাকার আবু সালেহ মো. মুসা বলেন, গত এক বছরে এক দিনও চোখে পড়ল না সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনের জন্য ওষুধ ছিটানোর কাজ। এখন মশার যন্ত্রণায় দিলের বেলায়ও ঘরে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে।

সচেতন নাগরিক কমিটি রংপুর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি মলয় কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, মশা নিধনের বিষয়ে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নজরে পড়ছে না। তবে নগরবাসীর এ দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে সিটি করপোরেশনকেই এগিয়ে আসতে হবে। নগর পরিচ্ছন্ন রাখার কোনো বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর দাবি জানান তিনি।

রংপুর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন শাখার প্রধান কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করা হয় না এমন অভিযোগ ঠিক নয়। নর্দমাগুলো পরিষ্কার করা হলেও বাসাবাড়ির আশপাশ থাকে অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন।

তিনি আরো বলেন, মাত্র চারটি ফগার যন্ত্র দিয়ে মশা নিধন করা সম্ভব নয়।

রসিক মেয়র সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু বলেন, ‘শ্যামাসুন্দরী খালটি সংস্কার না হওয়ায় মশার দৌরাত্ম্য বেড়েছে। এটির রক্ষণাবেক্ষণ সিটি করপোরেশনের কাছে ছিল। কিন্তু সংস্কারের নামে সাড়ে চার বছর আগে এটি এলজিইডিকে দেয়া হয়। তারা এই খালটি নতুন করে আমাদের কাছে হস্তান্তরও করেনি যে আমরা দেখভাল করবো।’

এ বিষয়ে এলজিইডি রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন বলেন, খালটি অনেক আগে সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু এখনো সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!