• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মসজিদে বসে ইয়াবা বেচাকেনা, হাফেজ গ্রেপ্তার!


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ৫, ২০১৮, ০৮:৩১ পিএম
মসজিদে বসে ইয়াবা বেচাকেনা, হাফেজ গ্রেপ্তার!

ঢাকা : মাদক বিরোধী অভিযানের মধ্যেও চলছে ইয়াবা পাচার ও সরবরাহ। আর এজন্য মাদক ব্যবসায়ীরা বেছে নিচ্ছেন ধর্মীয় পবিত্র স্থানকে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকার ওয়াক্তিয়া মসজিদ থেকে এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে হাতেনাতে আটকের পর তার দেয়া তথ্যে ধরা পড়ে আরো তিনজন। উদ্ধার হয় ২৮ হাজার পিস ইয়াবা।

পুলিশ বলছে, ধর্মীয় লেবাস নিয়ে মসজিদে বসে ইয়াবা পাচার করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্দেহ করবে না- এমন ধারণা থেকেই নামাজের স্থানকে বেছে নিচ্ছে ইয়াবা কারবারীরা।

 টেকনাফ থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে ঢাকায় আসছে একটি চক্র- এমন খবরে সোমবার (৪ জুন) সন্ধ্যা থেকে যাত্রাবাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামে। তৎপরতা বাড়ে গোয়েন্দা পুলিশের। খবর আসে যাত্রাবাড়ি থেকে পোস্তগোলার দিকে যেতে একটি সিএনজি পাম্পের কাছে হাত বদল হবে ইয়াবার।

সে অনুযায়ী অবস্থান নেন গোয়েন্দা সদস্যরা। এ সময় এক পাম্পের পাশের নামাজের স্থানে প্রবেশ করেন এক ব্যক্তি। তবে, তার পিছু পিছু আরেকজনকে আসতে দেখে সন্দেহ হয় গোয়েন্দা পুলিশের। অবশেষে সেখান থেকে ইয়াবার হাত বদলের সময় হাতেনাতে আটক হয় দুজন। উদ্ধার হয় ১৩ হাজার পিস ইয়াবা।

ইয়াবা পাচারকারী শহিদুল্লাহ বলেন, ‘যখন টাকা ঢুকেছে, তখন মালিক ফোন দিয়ে বলেছেন গাড়িটা ঢুকেছে, মাল অমুক জায়গায় রাখা হবে। অমুক জায়গা থেকে আরেকজনকে স্থানান্তর করা হবে।’

এছাড়া ইয়াবা পাচারকারী আরো বলেন, ‘এসব ইয়াবা আরো ৫ জায়গায় স্থানান্তর হবে। স্টেডিয়ামে পাঠানো হবে।’

পরে শহিদুল্লাহর দেয়া তথ্যে- ‘যে ট্রাকে টেকনাফ থেকে ইয়াবা নিয়ে আসা হয়েছিলো জব্দ করা হয় সেটিও। ট্রাকের নিচের অংশে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা অবস্থায় উদ্ধার হয় আরো ১৫ হাজার পিস ইয়াবা। যদিও শহিদুল্লাহর দাবি, ঢাকা থেকে ইয়াবাগুলো একজন দিয়েছে তাকে। তবে, ট্রাকের চালক ও সহকারী বলছে ভিন্ন কথা।

ট্রাক চালক বলেন, ‘আমি মাল লুকানোর কথা কিছু জানি না। আমারে গাড়ি যে জায়গায় রাখতে বলে আমি সেখানেই রাখি।’

পুলিশ বলছে, ‘শহিদুল্লাহ ইয়াবার বড় বড় চালান নিয়ে এর আগেও বেশকবার ঢাকায় এসেছিল। তার কিছু নিয়মিত ক্রেতাও রয়েছে। এখন কড়াকড়ির মাঝেও পুরনো গ্রাহকদের ধরে রাখতেই ২৮ হাজার ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় আসেন তিনি।’

ঢাকা মহানগরের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘আমরা জেনেছি, মসজিদে বিভিন্ন সময় মানুষ জঙ্গিবাদের জন্য বিভিন্ন বার্তা দিতেন। আর এখন দেখি এসব পাপী আলেমেরা মসজিদকেও ব্যবহার করে ইয়াবা বিক্রির কেন্দ্র হিসেবে। উনি ১ লাখ হাজার ইয়াবা পর্যন্ত বিক্রি করেছে।’

পুলিশ জানায়, ‘গ্রেফতার শহিদুল্লাহ টেকনাফের একটি মাদ্রাসা থেকে হাফেজি পড়া শেষ করে চট্টগ্রামের পটিয়া এবং ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। অল্প সময়ে অধিক টাকা আয়ের লোভ থেকে জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা ব্যবসায়।’

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!