• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মসজিদের শহর ঢাকার ১০ প্রাচীন মসজিদ


ফিচার ডেস্ক জুন ২, ২০১৭, ১২:৫৫ পিএম
মসজিদের শহর ঢাকার ১০ প্রাচীন মসজিদ

ঢাকা: রাজধানী ঢাকা ছোট অলি-গলি থেকে শুরু করে বড় রাস্তার পাশেও মসজিদ পাওয়া যায়। ঢাকায় কতগুলো মসজিদের সঠিক সংখ্যা জানা না গেলেও, বলা হয় মসজিদের শহর। মূলত মুঘল আমল থেকেই মসজিদের শহরে পরিণত হয় ঢাকা। বর্তমানে নতুন অনেক মসজিদ নির্মাণ হলেও প্রাচীন মসজিদের সৌন্দর্যের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি। চলুন দেখে নিই সেই প্রাচীন মসজিদগুলো

বিনত বিবির মসজিদ
পুরনো ঢাকার নারিন্দা এলাকায় অবস্থিত মধ্যযুগীয় মসজিদ। মসজিদটি দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি ঢাকার প্রথম মসজিদ। মোগল সেনাপতি ইসলাম খানের ঢাকা আগমনের প্রায় ১৫০ বছর আগে বাংলার স্বাধীন সুলতান নাসির উদ্দিন মাহমুদ শাহের আমলে ১৪৫৭ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মিত হয়। তবে এখন এ মসজিদের বেশ বেহাল দশা। মসজিদ কমিটির অবহেলা আর প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের উদাসীনতার কারণে এটির আদল ও কাঠামো হারিয়ে যেতে বসেছে। বদলে ফেলা হচ্ছে এটির পুরনো ঐতিহ্য।

মুসা খাঁর মসজিদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের উত্তর-পশ্চিম কোনে মুসা খাঁর তৈরি মসজিদটি তার একটি দৃষ্টান্ত। সেই আমলে শহীদুল্লাহ হল এলাকাটি বাগ-ই-মুসা খাঁ বা মুসা খাঁর বাগান নামে পরিচিত ছিল। তিনি ছিলেন বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম ঈসা খাঁর পুত্র। মসজিদের পাশেই রয়েছে তার কবর। তবে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন এটি মুসা খাঁর আমলে তৈরি হয়নি। এর স্থাপত্যরীতি দেখে তারা ধারণা করছেন এটি শায়েস্তা খাঁর আমলে নির্মিত। তাদের মতে, মসজিদটি নির্মাণ করেছেন মুসা খাঁর পুত্র দিওয়ান মুনওয়ার খান। আনুমানিক ১৬৭৯ সালের দিকে তিনি এটি নির্মাণ করেন।

চক বাজার শাহী মসজিদ
পুরানো ঢাকার চকবাজারে অবস্থিত মুঘল আমলের মসজিদ। মুঘল সুবেদার শায়েস্তা খান এটিকে ১৬৭৬ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ করেন। তিনটি গম্বুজ আর বিশাল মিনার এ মসজিদটির মূল আকর্ষণ।

কর্তালাব খান মসজিদ
পুরনো ঢাকার বেগম বাজারে অবস্থিত এ মসজিদটি বেগম বাজার মসজিদ নামেও পরিচিত। ১৭০১ থেকে ১৭০৪ সালের মধ্যে নির্মিত এই মসজিদটি তৎকালীন দেওয়ান মুর্শিদ কুলি খানের নামে করা হয়। মুর্শিদ কুলি খান কর্তালাব খান নামেও পরিচিত ছিলেন।

তারা মসজিদ
মুঘল স্থাপত্যশিল্পের ঐতিহ্যকে ধারণ করে পুরান ঢাকায় নির্মাণ করা হয় তারা মসজিদ। সতেরো শতকের দিল্লি, লাহোর আর আগ্রায় নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনার আদলেই এটি নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটির অবস্থান পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ৬/৩ আবুল খয়রাত রোডে। ‌পরে ১৯২৬ সালে ঢাকার ব্যবসায়ী আলী জান ব্যাপারী মসজিদটির সংস্কার করেন।

হাজী শাহবাজ মসজিদ
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদ। মুঘল শাসনামলে শাহজাদা আযমের সময়কালে ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মিত হয়। হাজী শাহবাজ নামে একজন অভিজাত ধনী ব্যবসায়ী এটি নির্মাণ করেন।

লালবাগ শাহী মসজিদ
ঢাকার লালবাগ কেল্লার পাশে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদ। ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন ঢাকার উপ-শাসক সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রপৌত্র ফররুখশিয়রের পৃষ্ঠপোষকতায় এটি নির্মিত হয়।

খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ
লালবাগ কেল্লার আধা কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল ১৭০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দে। মসজিদে পাওয়া দুটি ফার্সি অনুলিপি অনুযায়ী খান মোহাম্মদ মৃধা নামক জনৈক ব্যক্তি মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।

কসাইটুলি মসজিদ
পুরান ঢাকার কসাইটুলির কে পি ঘোষ রোডের এ মসজিদ ‘কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ’ নামে পরিচিত। এর আরেক নাম ‘চিনির টুকরা মসজিদ’। হিজরি ১৩৩৮ সনে জনৈক ব্যবসায়ী আবদুল বারি এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
রাজধানী ঢাকায় একটি বৃহৎ মসজিদ নির্মাণ এবং এর মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষার প্রচার ও প্রসার, ইসলামী পুস্তক ও সাময়িকী প্রকাশ, মুসলিম বেকারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, দারুল উলুম ও দারুল ইফতা প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি ব্যাপক কর্মসূচীকে সামনে রেখে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাময়িক আইন প্রশাসক মেজর জেনারেল ওমরাও খান এর পৃষ্ঠপোষকতায় এবং আলহাজ্জ আবদুল লতিফ ইবরাহীম বাওয়ানী প্রমুখ শিল্পপতির উদ্যোগে ১৯৫৯ সালে ‘বায়তুল মুকাররম সোসাইটি’ নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়।

পরবর্তীতে ১৯৬০ সালের ২৭ জানুয়ারি এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই মসজিদে একসঙ্গে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। বায়তুল মোকাররম মসজিদের মূল অবকাঠামো মক্কা শরীফ এর কাবা এর মতো। সূত্র: উইকিপিডিয়া ও ইসলামী ফাউন্ডেশন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!