• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
বিশ্ব মা দিবস

মাকে ভালোবাসলেই কমবে ধর্ষণ


হৃদয় আজিজ, নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৪, ২০১৭, ০১:৪৮ এএম
মাকে ভালোবাসলেই কমবে ধর্ষণ

ঢাকা: মার মমতা, ভালোবাসা নিয়ে কত কবিতা, কত গল্প লেখা হয়েছে। কিন্তু ছোটবেলায় পড়া কবি কাজী কাদের নেওয়াজের সেই বিখ্যাত কবিতা কার না মনে পড়ে-

মা কথাটি ছোট্ট অতি,
কিন্তু জেনো ভাই, 
ইহার চেয়ে নামটি মধুর
তিন ভূবনে নাই
সত্য ন্যায়ের ধর্ম থাকুক
মাথার ‘পরে আজি
অন্তরে মা থাকুক মম
ঝরুক স্নেহরাজি।...

মাত্র একটি অক্ষরের শব্দ ‘মা’। অথচ বিশ্বের সবচে মধুর, শ্রেষ্ঠ শব্দ। অর্থে অনবদ্য আর শ্রুতিতে মধুময়। মা ডাক শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মায়াবী সুন্দর একটি মুখ। যে মুখে লেগে থাকে স্নেহ, মমতা আর অফুরন্ত ভালোবাসা।

মা শব্দের মধ্যেই পৃথিবীর সব ভালোবাসা, আবেগের সম্মিলন। সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে প্রিয় তার মা। বিশ্বের সব মানুষের মনে রয়েছে মায়ের প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা।

সম্পর্কের বেড়াজাল ছিন্ন করে সবাই দূরে সরে যেতে পারে। চলে যেতে পারে প্রেমাবেগের বন্ধনের চিরসঙ্গী প্রিয়সীও। কিন্তু মায়ের স্নেহ-ভালোবাসার বন্ধন কখনই ছিন্ন হওয়ার নয়। মা এমন একজন, যিনি সারাজীবন সন্তানকে বুকের মধ্যে আগলে রাখেন। মা হল পৃথিবীর সবচেয়ে আপনজন। তার ভালোবাসার মধ্যে আছে প্রকৃত সুখ।

দূর গাঁয়ে ফেলে আসা মায়ের মুখ, স্নেহ ছায়ায় বেড়ে ওঠার সুখ, মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকার বেদনা, কিংবা আকাশের ওপারে আকাশ, বাতাসের ওপারে বাতাস পেরিয়ে দূর অজানায় পাড়ি জমানো মায়ের স্মৃতি- এসবই আমাদের পোড়ায় প্রতি নিয়ত। হু হু করে ওঠে বুকের ভেতরটা। আর যখনই মায়ের কথা মনে পড়ে মনের অজান্তেই ভিজে যায় চোখ। খুব ইচ্ছে করে ছুটে যাই মায়ের কাছে, তার শীতল মায়াবী আঁচলের নিচে আশ্রয় পেতে।

আজ রোববার (১৪ মে) বিশ্ব মা দিবস। মা দিবসের মূল উদ্দেশ্য, মাকে যথাযথ সম্মান দেয়া। যে মা জন্ম দিয়েছেন, লালন-পালন করেছেন, তাকে শ্রদ্ধা দেখানোর জন্য দিনটি পালন করা হয়। দিনটি উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাকে ভালোবাসা জানাচ্ছেন বহু মানুষ।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে দিনটি পালন করা হয়। নরওয়েতে মার্চের চতুর্থ রোববার। আয়ারল্যান্ড, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাজ্যে মা দিবস পালন করা হয় ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় রোববার। তবে বাংলাদেশে মা দিবস নির্ধারণ করা হয়েছে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার। বিশ্বের অনেক দেশে কেক কেটে মা দিবস উদযাপন করা হয়।

তবে বাংলাদেশে আজ দিবসটি পালন করতে গিয়ে আমাদের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ছে। দেশে বিরামহীন ভাবে নারীদের ওপর চলছে নির্যাতন। খুন আর ধর্ষণ যেন নারীদের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নানা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে নারীরা দিনযাপন করছেন এখানে। তাই আজকের দিনটিতে শপথ নিতে হবে আমাদের মায়েদের ভালোবাসার পাশাপাশি অন্য নারীদেরও সম্মান করবো। সব নারীকে মর্যাদার আসনে বসাবো। তাহলেই মাকে ভালোবাসা স্বার্থক হবে। কেননা, মা যে নারী জাতিরই প্রতিনিধি।

বিশ্ব মা দিবসের ইতিহাস
মা দিবসের প্রবক্তা আনা জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের বিরোধিতা করে তিনি বলেছিলেন, মাকে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো তাকে দুই কলম লেখার সময় হয় না। চকলেট উপহার দেয়ার অর্থ হলো, তা নিজেই খেয়ে ফেলা।

আনা জার্ভিসের মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারাজীবন ব্যয় করে গেছেন অনাথ-আতুরের সেবায়। মেরি ১৯০৫ সালে মারা যান। লোকচক্ষুর অগোচরে কাজ করা মেরিকে সম্মান দিতে চাইলেন মেয়ে আনা জার্ভিস। অ্যান মেরি রিভস জার্ভিসের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচার শুরু করেন। সাত বছরের চেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় মা দিবস। 

সোনালীনিউজ/এন

Wordbridge School
Link copied!