• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাগুরায় কামান্না দিবস পালিত


মাগুরা প্রতিনিধি নভেম্বর ২৬, ২০১৬, ০৫:৫৭ পিএম
মাগুরায় কামান্না দিবস পালিত

মাগুরা : কামান্নার বীর শহীদদের দেহাবশেষ মাগুরায় স্থানান্তরের দাবিসহ তাদের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা আর শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে আজ শনিবার (২৬ নভেম্বর) কামান্না শহীদদেরকে স্মরণ করল মাগুরার মুক্তিযোদ্ধাসহ সর্বস্তরের মানুষ।

১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর মাগুরার ২৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশমাতৃকার ২৮ জন বীর সন্তান পাক হানাদার বাহিনীর অতর্কিত হামলায় পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার কামান্না গ্রামে শহীদ হন।

কামান্নার বীর শহীদদের স্মরণে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মাগুরা জেলা ও উপজেলা ইউনিটগুলো যৌথভাবে বিভন্ন কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচির মধ্যে প্রথমেই ছিল সকাল ১১টায় জেলা ইউনিট কমান্ডার মোল্যা নবুয়ত আলীর নেতৃত্বে মাগুরা সদর উপজেলার হাজীপুর গ্রামে কামান্নার শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা ছাড়াও সর্বস্তরের জনসাধারণ সেখানে সমবেত হয় বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।
 
দুপুরে হাজিপুর ডা. লুৎফর রহমান লাইব্রেরী মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা জহুর-ই-আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য ও সংসদ সদস্য কামরুল লায়লা জলি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রোস্তম আলি, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এ এফ এম আব্দুল ফাত্তাহ, মুন্সি রেজাউল হক এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রহমান।

আলোচনা সভায় উপস্থিত বক্তারা সরকারের কাছে দাবি করেন যে, যেহেতু কামান্না যুদ্ধে ২৮ শহীদের ২৭ জনই মাগুরার সন্তান সেহেতু কামান্না গ্রাম থেকে তাদের দেহাবশেষ মাগুরায় এনে সমাধিস্থ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। আলোচনা সভা শেষে শহীদ পরিবারের সদস্যেদের মধ্যে আর্থিক সাহায্য ও শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়।
 
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মাগুরা জেলা ইউনিটের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোল্যা নবুয়ত আলি জানান, ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর বিকেলে হাজীপুর বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল মাগুরার হাজীপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বিশেষ অপারেশনের উদ্দেশে কামান্না গ্রামে গিয়ে অবস্থান করে। কিন্তু  গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মাগুরা ও ঝিনাইদহ থেকে পাক হানাদার বাহিনী গভীর রাতে ওই বাড়িতে অতর্কিতে হামলা করে গুলি চালাতে থাকে। ঘুমন্ত অবস্থায় আক্রমণের কারণে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আগেই তাদের গুলিতে ২৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। আহত হন আরও অনেকে। এছাড়া কেউ কেউ পালিয়ে যেতেও বাধ্য হন। এখানে যে ২৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ তার মধ্যে ২৭ জনের বাড়িই মাগুরা জেলায় বলে জানিয়েছেন প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধারা।

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর মাগুরার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের কাছে এক অবিস্মরণীয় দিন। কারণ কামান্না গ্রামে এদিন পাক হানাদারদের বুলেট, বেয়নেটের আঘাতে যে ২৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন তাদের মধ্যে ২৭ জনই মাগুরার বীর সন্তান’।

কামান্নায় যারা শহীদ হন তারা হলেন- আলমগীর হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, অধীর কুমার শিকদার, গৌর চন্দ্র রায়, সহিদুল ইসলাম, মমিনউদ্দিন, ওহিদুজ্জামান, হোসেন আলী, শরিফুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, মাছিম মিয়া, মুন্সি আলিমুজ্জামান, মনিরুজ্জামান, মো. আলী হোসেন, গোলাম কাউছার, শেখ, মুন্সি আব্দুল আেতালেব, সোলায়মান শিকদার, রিয়াত আলী মন্ডল, মো. রাশেদ, সেলিম বিশ্বাস, নির্মল কুমার বিশ্বাস, মো. তাজুল ইসলাম, মো. গোলজার রহমান, মো. আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুস সালেক, কাদের এবং গোলাম আকবর।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!