• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাঠে ঢুকলেন কয়েকশ সৌদি নারী


ক্রীড়া ডেস্ক সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭, ০৭:১৩ পিএম
মাঠে ঢুকলেন কয়েকশ সৌদি নারী

ঢাকা: সৌদি আরবের নারীদের কঠোর বিধি নিষেধ মেনে চলতে হয়। কেবল চোখ ও হাত ছাড়া আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হয়। পরিবারের বাইরে অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি নেই। শুধু বাড়িতেই নয়, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি কর্মস্থলেও রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। ধর্মীয় পুলিশ বিষয়টি নজরদারি করে। তবে শনিবার সৌদি আরবের কিং ফাহাদ স্টেডিয়াম ঐতিহাসিক এক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকলো

কাচের দেয়াল ভেঙে প্রকাশ্যে খেলার মাঠের কনসার্ট, লোক নৃত্য ও আতশবাজির ঝলকানি উপভোগ করলেন সৌদি আরবের নারীরা। দেশটির জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠন উপভোগ করথে প্রথমবারের মতো খেলার মাঠে ঢুকলেন কয়েকশ সৌদি নারী। ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো রক্ষণশীলতার দেয়াল টপকে উপভোগ করলেন কনসার্ট, লোক নৃত্য ও আতশবাজির ঝলকানি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতদিন যে খেলার মাঠে কেবল পুরুষরাই যেতে পারতো সেই মাঠে প্রথমবারের মতো পরিবার পরিজন নিয়ে ঢুকে সাংস্কৃতিক আয়োজন ও নাটক উপভোগ করেছেন সৌদি নারীরা। দেশটির অভিভাবক ব্যবস্থা অনুযায়ী, পরিবারের পুরুষ সদস্য যেমন বাবা, ভাই কিংবা স্বামীর অনুমতি ছাড়া নারীরা পড়াশোনা, ভ্রমণ কিংবা অন্য কোনো কার্যক্রম করতে পারে না। আগে খেলার মাঠেও তাদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ছিল।

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রস্তাব করা অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের ভিশন- ২০৩০ বাস্তবায়নে সৌদি রাজতন্ত্র তাদের আগের করা কঠোর আইনগুলো শিথিলের চেষ্টা করছে; এরই অংশ হিসেবে খেলার মাঠে নারীদের এই প্রবেশাধিকার। আশা করছি অদূর ভবিষ্যতে মাঠে ঢুকতে আমাদের কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হবে না বলে মন্তব্য করেন উৎফুল্ল উম আবদুলরহমান; প্রথমবারের মত মাঠে বসে অনুষ্ঠান দেখতে উত্তরপশ্চিমের জেলা তাবুক থেকে এসেছেন তিনি। পুরুষদের সমান সুযোগ থাকবে নারীদের- এমন প্রত্যাশা বহুবছর ধরে লালন করে আসার কথাও জানান তিনি।

গণমাধ্যম বলছে, খেলার মাঠে ঢোকা নারীদের মধ্যে দেখা গেছে বাঁধভাঙা উল্লাস, অনেকের হাতে ছিল সৌদি আরবের পতাকা, কেউ কেউ বোরকার সঙ্গে জড়িয়েছেন রঙিন পরচুলা। অনুষ্ঠানের উদ্দামতার সঙ্গে পুরো মাঠজুড়ে ছিল নারীদের আনন্দ চিৎকার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেক সৌদি পুরুষ ঐতিহাসিক এই মুহুর্তকে স্বাগত জানিয়েছেন; গেয়েছেন প্রশস্তি। মনে হচ্ছে নারীরাই সব টিকেট কিনে নিয়েছেন, টুইটারে এক সৌদি পুরুষের সরস মন্তব্য।

বান্ধবীদের নিয়ে মাঠে আসা সুলতানারও তেমনটাই প্রত্যাশা। প্রথমবারের মতো স্টেডিয়ামে এসেছি, মনে হচ্ছে যেন আমি সৌদি নাগরিকের চেয়েও বেশি কিছু; এখন আমি আমার দেশের যে কোনোখানে যেতে পারি।  দুই গালে জাতীয় পতাকার সবুজ ও সাদা এঁকে সরব চিৎকারে সুলতানার মতো কয়েকশ নারী জানান দিচ্ছেন ‘কাঁচের দেয়াল’ ভাঙার অনুভূতি। স্বপ্ন তাদের আরও বড়। আল্লাহ চাইলে কালকেই হয়তো নারীরা গাড়ি চালাতে কিংবা ভ্রমণের মতো আরও বড়, আরও ভালো কিছুর অনুমতি পাবে।

প্রসঙ্গত কট্টর-রক্ষণশীল সৌদি আরবেই নারীদের জন্য সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ; এটাই বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে নারীরা গাড়ি চালাতে পারেননা। তবে সৌদি সরকার সামাজিক সংস্কারের যে কর্মসূচি নিয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে সরকারি চাকরিতে নারীদের উপস্থিতি বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!