• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মাদক গডফাদারদের শাস্তি নিশ্চিত করবে নতুন আইন


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১২, ২০১৮, ০১:৪৭ পিএম
মাদক গডফাদারদের শাস্তি নিশ্চিত করবে নতুন আইন

ঢাকা : বছরের প্রথম তিন মাসে তিন কোটির বেশি ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এই মাদক পাচার বন্ধে মিয়ানমার সহায়তা করছে না। মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালেই সোমবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে এ কথা বলেন তিনি।

বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে আলোচিত মাদক ইয়াবা মূলত মিয়ানমার হয়ে চোরাই পথে এসে থাকে। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফেনসিডিলের মতো মাদক পাচার বন্ধে ভারতের সহযোগিতা পাওয়া গিয়েছিল বলে সংসদকে জানিয়েছিলেন। তখনো মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছিলেন তিনি।  

মন্ত্রী সংসদকে আরো জানান, মাদক সম্রাট বা মাদক গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা ধরে অভিযান চালানো হচ্ছে। মাদক ব্যবসায় জড়িত মাস্টারমাইন্ডরা সহজে যাতে পার না পায়, সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা রেখে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮-এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। ওই আইনে মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।  

মন্ত্রী বলেন, ইয়াবা পাচার রোধে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে তিনটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মিয়ানমারকে ইয়াবার উৎপাদন ও প্রবাহ বন্ধে ব্যবস্থাগ্রহণসহ মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত ইয়াবা তৈরির কারখানা সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।

মন্ত্রী জানান, ২০১৬ সালে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ১৭৮ এবং ২০১৭ সালে ৪ কোটি ৭৯ হাজার ৪৪৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত উদ্ধার হয় ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬১১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট। ইয়াবার প্রবাহ বন্ধে কক্সবাজারের টেকনাফে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি বিশেষ জোন স্থাপনের কথাও মন্ত্রী জানান।

তিনি আরো জানান, ২০১৬ সালে ৮৭ হাজার ১৪ জন মাদক বিক্রেতার বিরুদ্ধে ৬৯ হাজার ৬৩৯টি মামলা হয়েছে। ২০১৭ সালে ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৮৩ জনের বিরুদ্ধে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৩৬টি মামলা হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ২৭ হাজার ৩৪০টি মামলায় ৩৫ হাজার ১১২ জনকে গ্রেফতারের তথ্যও সংসদকে জানান আসাদুজ্জামান খান কামাল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গত বছর ১২ হাজার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মাদক সংক্রান্ত ৫ হাজার ৯৯১টি মামলা করা হয়েছে। চলতি বছর মে পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৫৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ২ হাজার ৪১৬টি মামলা করা হয়েছে। এ সময় ২ হাজার ৬৫৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী জানান, বিদ্যমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০-এ মাদক অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রয়েছে। তবে বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যক্তির দখলে/ কর্তৃত্বে/ অধিকারে মাদকদ্রব্য না পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ নেই। ফলে মাদক ব্যবসায় জড়িত মাস্টারমাইন্ডরা সহজেই পার পেয়ে যায়। এ কারণেই নতুন আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। এ আইনে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতাদানকারী কোনো ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠানকেও আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ তদন্তে অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়িত করা হচ্ছে।

সরকারি দলের সদস্য ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, মাদক একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও মাদকদ্রব্যের ভয়াল থাবায় আক্রান্ত। বাংলাদেশে হেরোইন, কোডিন মিশ্রিত বিভিন্ন মাদক- যা ফেনসিডিল হিসেবে পরিচিত, ইয়াবা ও গাঁজা আমদানি করা হয় না। এগুলো বিভিন্নভাবে আমাদের দেশে পাচার হয়ে আসে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!