‘মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে বিচারবহির্ভূত মানুষ হত্যা হচ্ছে’

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশব্যাপী নতুন করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অভিযান শুরু হয়েছে। আমরাও চাই, মাদকমুক্ত হোক।

তিনি বলেন, যারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচারের ব্যবস্থা করা হোক, এই মাদক নির্মূল করা হোক। কিন্তু তার অর্থ এই নয়, বিনা বিচারে মানুষকে হত্যা করা হবে।

সোমবার (২১ মে) বিকেলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনের ‘পুস্পদাম রেস্টুরেন্টে’ ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক খেলাফত মজলিশের আয়োজিত ইফতার পার্টিতে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, মাদক অভিযান হচ্ছে ভালো কথা। তবে সবার আগে নিজের ঘরের মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।

তিনি বলেন, আপনাদের নিজ দলের কক্সবাজারের টেকনাফের এমপি (আবদুর রহমান বদি) তাকে তো জামিন দিয়ে দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি মহানন্দে এই ব্যবসা শুরু করেছেন। একজন দুই নয় অসংখ্য, প্রায় প্রত্যকটি জায়গায় তাদেরকেই আজকে আপনারা (সরকার) ছেড়ে দিয়েছেন যারা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্রসফায়ারে হত্যাকান্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ৬টি জেলায় ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। আজকে গোটা দেশে ক্রসফায়ারের নামে বিচারবর্হিভুত হত্যার নামে বহু বিরোধী পক্ষকে হত্যা করা হয়েছিলো। আপনারা দেখেছেন কীভাবে গুম করা হয়েছে। ইলিয়াস আলীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, চৌধুরী আলমকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৫/৬ বছর পার হয়ে গেছে-এরকম অসংখ্যক মানুষকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে, বিচারের নামে যা খুশি তাই করছেন। দেখুন কত সংকীর্ণ এরা (সরকার)।

দেশের অর্থনীতি ও আর্থিকখাতে দুর্নীতি, মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট, শিক্ষা ব্যবস্থার অনিয়ম তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যদি এই দানবীয় শক্তিকে সরাতে না পারি তাহলে আমার দেশের অস্তিত্ব রক্ষা করা কঠিন হবে।

মাহফিলের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন, সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক আহমেদ আবদুল কাদের ও নায়েবের আমীর মাওলানা শফিক উদ্দিন।

খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমীর মাওলানা সৈয়দ মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ইফতারে জামায়াতে ইসলামীর মিয়া গোলাম পারওয়ার, কল্যাণ পার্টিও সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুর রকীব, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তফিজুর রহমান মোস্তফা, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, লেবার পার্টির মোস্তফিজুর রহমান ইরান, এমদাদুল হক চৌধুরী, শামসুদ্দিন পারভেজ, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম চৌধুরী, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের শেখ মুজিবর রহমান, খেলাফত আন্দোলনের মাওলানা মাওলানা জাফরুল্লাহ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বিএনপির মেহেদি আহমেদ রুমি, মজিবর রহমান সারওয়ার, সাংবাদিক মহিউদ্দিন আলমগীর, আবদুল হাই শিকদার, রুহুল আমিন গাজী, এম আবদুল্লাহ, শহীদুল ইসলাম, বাসির জামাল প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন।

ইফতারের আগে কারাবন্দি জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং খেলাফত মজলিশের অসুস্থ আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাকের আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম