• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
সংসদে প্রধানমন্ত্রী

মাদক পৃষ্ঠপোষকরাও শাস্তি পাবে নতুন আইনে


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২১, ২০১৮, ০৪:২০ পিএম
মাদক পৃষ্ঠপোষকরাও শাস্তি পাবে নতুন আইনে

ঢাকা : মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। এ নীতি বাস্তবায়নে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাদক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বর্তমানে চলমান মাদকবিরোধী কার্যক্রমের ফলে মাদকদ্রব্যের চোরাচালান ও ব্যবহার বন্ধ করে যুবসমাজকে সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হব।

জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বুধবার (২০ জুন) তিনি এ কথা বলেন। অধিবেশনে এ-সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্ন উত্থাপন করেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, মাদক অপরাধ সংক্রান্ত মামলার বিচার কার্যক্রম আলাদা কোনো আদালতের মাধ্যমে পরিচালনার বিষয়টি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ব্লু-ইকোনমি কর্তৃপক্ষ গঠনের জন্য একটি আইন প্রণয়নের কাজ চলছে বলেও তিনি জানান। স্বতন্ত্র দলীয় সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিদ্যমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ অনুযায়ী মাদক অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রয়েছে। তবে বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যক্তির কাছে মাদকদ্রব্য পাওয়া না গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ কম। এই মাদক ব্যবসায় জড়িত মাস্টারমাইন্ডরা সহজেই পার পেয়ে যায়।

তিনি আরো জানান, মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতাকারী ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হচ্ছে। সংশোধিত আইনে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষক ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হবে। তা ছাড়া এ আইনে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষক ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকেও আইনের আওতায় আনার জন্য মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ তদন্তে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, মাদকদ্রব্য ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকার সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। মাদকের আগ্রাসন প্রতিরোধে মাদক চোরাকারবারি, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।  তিনি জানান, যানবাহন ও মাদকের স্পটগুলোয় তল্লাশি অভিযান চলছে। তা ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ যাতে ভয়াবহ মাদকের প্রতি আকৃষ্ট না হয় সেজন্য মাদকের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।

ব্লু-ইকোনমি কর্তৃপক্ষ গঠন : সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের বিষয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের মাধ্যমে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি ২০০৯ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের গতিশীল কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের এক অন্যতম অর্জন।

তিনি আরো জানান, এ দুটি রায়ের ফলে বঙ্গোপসাগরে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চল লাভ করে, যা মূল ভূখণ্ডের আয়তনের প্রায় ৮১ ভাগ। এ সমুদ্র এলাকাকে ঘিরে আমরা সমুদ্র অর্থনীতি বা ব্লু-ইকোনমিকে সম্ভাবনার নতুন ক্ষেত্র হিসেবে শনাক্ত করেছি। সমুদ্রবিষয়ক অর্থনীতি বা ব্লু-ইকোনমির ব্যাপ্তি বিশাল।

প্রধানমন্ত্রী জানান, আমরা সমুদ্র বিজয়ের পর ব্লু-ইকোনমি কার্যক্রম জোরদার করার জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ব্লু-ইকোনমি সেল গঠন করা হয়েছে। ব্লু-ইকোনমি কর্তৃপক্ষ গঠনের জন্য একটি আইন প্রণয়নের কাজ চলছে।  

বাংলাদেশ আজ সফল রাষ্ট্র : সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য সেলিনা জাহান লিটার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায় থেকে উত্তরণের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আমরা বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে একটি সফল রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিচিতি লাভ করেছে।

স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার যতবারই ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দৃশ্যমান ভূমিকা রেখেছে। পূর্বের ধারাবাহিকতায় আমাদের সরকারের বর্তমান আমলেও উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সক্ষমতার বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বহির্বিশ্বে যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষণীয় হয়েছে তা এই অর্জনের মাধ্যমে আরো সুদৃঢ় হবে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফোরামে ও বৈশ্বিক নানা ইস্যুতে স্বীয় অবস্থান যথাযথভাবে তুলে ধরে আমরা আরো বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হব। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও নতুন মাত্রা যোগ হবে।  

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!