ঢাকা : মাদকের হাট হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে র্যাব। ক্যাম্পে ঢোকার ৬টি পথ বন্ধ করে ডগস্কোয়াড দিয়ে তলাশি চালিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও বয়সের ১৫৩ নারী-পুরুষকে আটক করা হয়েছে। আটকদের র্যাব-২-এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চলে। জেনেভা ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত আটকেপড়া পাকিস্তানি জনগোষ্ঠীর ওই ক্যাম্প এখন পুরুষশূন্য।
আটকদের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, র্যাব রমজানের দিনে অমানবিক কাজ করেছে। তাদের দাবি, প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীরা গা ঢাকা দিয়েছে। সাধারণ, নিরীহ খেটেখাওয়া মানুষকে ধরেছে র্যাব। অবশ্য র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের প্রধান মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন, যাচাই-বাছাইয়ের পর যাদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের আটক রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হবে। সারা দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালায় র্যাব। ক্যাম্পে প্রবেশের প্রধান পথ ৬টি।
এ ছাড়া ছোট ছোট অনেক পথ রয়েছে। এগুলো সব বন্ধ করে ৩৬টি টিম, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে অভিযান চালায় র্যাব। র্যাব-২-এর অধিনায়ক আনোয়ার উজ জামান বলেন, জেনেভা ক্যাম্প দীর্ঘদিন ধরে মাদকের আখড়া হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এখানকার বেশিরভাগ লোকই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এরা প্রায়দিনই প্রকাশ্যে মাদকের হাট বসায়। এর আগে থানা পুলিশ একাধিবার অভিযান পরিচালনা করেছে। কেউ পুলিশি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে, কেউ জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো মাদক ব্যবসায় যুক্ত হয়।
তিনি আরো বলেন, জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা অনেক পুরনো। ঘনবসতির কারণে এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা কঠিন। আমরা সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে একাধিক টিম নিয়ে অভিযান চালিয়েছি। এর আগে ক্যাম্পে কখনো এমন অভিযান হয়নি। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা ভালো না। এজন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ছিল আজকের অভিযানে।
গতকাল জেনেভা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে ক্যাম্পের সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান আঞ্জুর (২৪) স্ত্রী রুপা সাংবাদিকদের জানান, সকাল ১০টার দিকে হুমায়ুন রোডের বাসার বাইরে থেকে র্যাব তার স্বামীকে ধরে নিয়ে গেছে। রুপার দাবি, তার স্বামী একান্তই নিরীহ মানুষ। কোনোদিন মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। সকালে নাশতা আনতে বাইরে গেলে র্যাব তাকে আটক করে। ক্যাম্প থেকে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইদুল হাওলাদার নয়নকে (২৩) আটক করেছে র্যাব। তার ভাবি সুলতানা টগর বলেন, নয়ন তার ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিল। সেখান থেকে র্যাব তাকে ধরে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের প্রধান মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আটকদের ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। যারা মাদক ব্যবসায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে এসব যাচাই-বাছাই করতে সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :