• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান বাড়াতে ১৫ সুপারিশ


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২৯, ২০১৬, ১০:৪৫ এএম
মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান বাড়াতে ১৫ সুপারিশ

মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান বাড়াতে কিছু বিষয় বাদ দিয়ে অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়াসহ ১৫ দফা সুপারিশ করেছেন শিক্ষাবিদরা। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, সম্প্রতি দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে দুই দিনের এক কর্মশালায় এসব সুপারিশ উঠে এসেছে।

গতকাল সোমবার (২৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব সুপারিশের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, পাবলিক পরীক্ষার সময় চাপ কমাতে শিক্ষাবিদরা বিষয় কমানোর সুপারিশ করেছেন।

এসএসসি পর্যায়ে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও খেলাধুলা, চারু ও কারুকলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলোকে পাবলিক পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত না করে বিদ্যালয়ে নিচু শ্রেণিতে ধারাবাহিক সেগুলো পড়ানোর সুপারিশ এসেছে ওই কর্মশালায়।

তবে কবে থেকে এসব বিষয় এসএসসি থেকে বাদ যেতে পারে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি মন্ত্রী। বর্তমানে এসএসসিতে মোট কতটি বিষয় ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে নেয়ার সুযোগ আছে, তাও জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মন্ত্রী জানান, ২০১৯ সাল থেকে সব বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নে পাবলিক পরীক্ষা নেয়ার সুপারিশ এসেছে কর্মশালায়।

পাশাপাশি পরীক্ষার এমসিকিউ ও সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরির জন্য ‘আইটেম ব্যাংক’ তৈরি, বইপড়া দিবস পালন, যথাসময়ে শিক্ষকদের ‘টিচার্স গাইড’ সরবরাহেরও সুপারিশ করেছেন শিক্ষাবিদরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও বোর্ড চেয়ারম্যানরা গত ২৫-২৬ নভেম্বর কক্সবাজারের এক হোটেলে ওই কর্মশালায় অংশ নেন।

সুপারিশ

১. ২০১২ সালের কারিকুলাম পর্যালোচনা করতে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন।

২. পাবলিক পরীক্ষার সময় চাপ কমাতে এসএসসি পর্যায়ে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও খেলাধুলা, চারু ও কারুকলা, ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলোকে পাবলিক পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত না করে এ বিষয়গুলো বিদ্যালয় পর্যায়ে সম্পূর্ণভাবে ধারাবাহিক মূল্যায়নের আওতায় আনা। এসব বিষয় স্কুল পর্যায়ে যথাযথভাবে পড়ানো এবং শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় করতে কার্যকর পদ্ধতি উদ্ভাবন।

৩. স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বই পড়ার জন্য ‘কো-কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজ’ অন্তর্ভুক্ত করা। বছরের একটি দিনকে বইপড়া দিবস হিসেবে পালন করা।

৪. পাঠদানে শিক্ষকদের সহায়তায় উপযুক্ত ‘শিক্ষক গাইডলাইন’ যথাসময়ে প্রণয়ন ও মানোন্নয়ন করা।

৫. এমসিকিউ ও সৃজনশীল প্রশ্নের মানোন্নয়নে আইটেম ব্যাংক (প্রশ্ন ব্যাংক) তৈরি করা।

৬. শিক্ষার্থীদের উত্তর লেখায় সহযোগিতা করতে প্রশ্নের সঙ্গে নমুনা কিছু উত্তর যাচাই-বাছাই করে সরবরাহ করা।

৭. যশোর শিক্ষা বোর্ড প্রাথমিকভাবে যে প্রশ্ন ব্যাংক তৈরি করেছে, তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আইটেম ব্যাংক প্রণয়নে ধারণাপত্র তৈরি করা।

৮. সব শিক্ষককে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নে আবশ্যিকভাবে সম্পৃক্ত করা।

৯. ২০১৯ সাল থেকে সব বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া।

১০. বিশ্বে প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশে ‘র স্কোর’-এর পরিবর্তে ‘স্ট্যান্ডারাইজড স্কোর’ ব্যবহার।

১১. ‘স্ট্যান্ডারাইজড স্কোর’ ব্যবহার করে ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে একটি পরীক্ষামূলক ফল তৈরি।

১২. ফলাফল মূল্যায়নে নতুন পদ্ধতিতে যাওয়ার আগে অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময় করা।

১৩. নবম-দশম শ্রেণির নির্বাচিত কয়েকটি পাঠ্য বই পরিমার্জন করে সুখপাঠ্য, আকর্ষণীয় ও সহজবোধ্য করতে শিক্ষাবিদ ও লেখকদের নিয়ে একটি প্যানেল তৈরি করা। এই প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শ্রেণি শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা।

১৪. পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জনের জন্য ‘টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করতে হবে, যাতে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারির আগেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তক পৌঁছানো নিশ্চিত হয়।

১৫. শিক্ষার মানোন্নয়নের অপরিহার্য শর্ত হিসেবে শিক্ষা বাজেট ‘পর্যাপ্ত পরিমাণে’ বাড়ানো।

এসব সুপারিশ কাজে লাগানো হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সুপারিশই শেষ না। যে কাজ করে আসছি সেগুলোকেও এগিয়ে নেয়া হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!