• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মানুষ নয় গরুর জন্য অ্যাম্বুলেন্স, তাই মরদেহ কাঁধে!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মে ৩, ২০১৭, ০১:৩২ পিএম
মানুষ নয় গরুর জন্য অ্যাম্বুলেন্স, তাই মরদেহ কাঁধে!

বামে গরুর জন্য অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন, ডানে সন্তানের মরদেহ কাঁধে এক বাবা

ঢাকা: ভারতে গরুকে দেয়া হয়েছে মানুষের মর্যাদা। এমন কি গো-হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তাহলে গরুর জন্য অ্যাম্বুলেন্স সেবা কেন নয়? হ্যাঁ, এবার তাও হলো উত্তরপ্রদেশে। কিন্তু আপত্তি রাজ্যে যেদিন গরুর জন্য এই সেবা চালু হলো, সে দিনেই অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে মৃত সন্তানের দেহ কাঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক বাবা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজ্যের এটাওয়ার সরকারি হাসপাতালে ১৫ বছরের গুরুতর অসুস্থ ছেলেকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন দিনমজুর উদয়বীর সিং। জরুরী বিভাগ থেকে জানানো হয় তার ছেলে পুষ্পেন্দ্রর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।

কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিককে উদয়বীর সিং জানিয়েছেন, ডাক্তার মাত্র ৫ মিনিট দেখেই বলে দিল যে ছেলে মারা গেছে, ওকে নিয়ে যাও। দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল থেকে কোন অ্যাম্বুলেন্স বা কোনও গাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়নি। গাড়ি ভাড়ার সক্ষমতা আমার নেই, তাই বাধ্য হয়েই ছেলের দেহ কাঁধে চাপিয়ে বাড়ি ফিরেছি।

হাসপাতালে প্রধান রাজীব যাদবের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সে সময়েই একটা সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সম্ভবত চিকিৎসকরা তাদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়াতেই ওই কিশোরের জন্য মৃতদেহ বহনকারী গাড়ির ব্যবস্থা করা যায়নি। 

যে সময়ে উদয়বীর সিং কাঁদতে কাঁদতে হাসপাতাল থেকে বের হচ্ছিলেন, তখন কেউ একজন সে ছবিটা মোবাইলে তুলে নেয়। তারপরে সেটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে বলে জানান স্থানীয় সাংবাদিক দিনেশ শাক্য।

উদয়বীরকে ছেলের মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হল এমন এক দিনে, যখন এটাওয়া থেকে প্রায় তিনশো কিলোমিটার দূরে রাজধানী লখনৌতে রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য উদ্বোধন করছিলেন গরুদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স পরিসেবার।

‘গো-বংশ চিকিৎসা মোবাইল ভ্যান’ নামের সে পরিসেবা আহত এবং অসুস্থ গরুকে গোশালা বা পশু চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছিয়ে দেবে। সঙ্গে একজন পশু চিকিৎসক এবং একজন সহকারীও থাকবেন। চালু হবে গো-সেবা বিনা শুল্কের টেলিফোন নম্বরও। মৌর্য সে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

এর আগে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে ওড়িশা রাজ্যে দানা মাঝি নামের এক গরীব নিজের স্ত্রীর মরদেহ নিয়ে হাসপাতাল থেকে ১২ কিলোমিটার হেঁটে বাড়িতে ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন। পাশে তাঁর কিশোরী কন্যা কাঁদতে কাঁদতে ফিরেছিল।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!