• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মামলার কারণে নির্বাচন বঞ্চিত হচ্ছেন বিএনপির দেড়ডজন নেতা


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১৪, ২০১৭, ০৩:২৪ পিএম
মামলার কারণে নির্বাচন বঞ্চিত হচ্ছেন বিএনপির দেড়ডজন নেতা

ঢাকা : দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা একাধিক মামলা নিয়ে আতঙ্কে বিএনপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এসব মামলার রায়ে নেতারা চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত হলে দল হুমকির মুখে পড়বে দলটি। নিম্ন আদালতের সাজা আপিলে বহাল হলে সংশ্লিষ্টদের কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

আর এই না পারার তালিকায় রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকাসহ দলের প্রায় দেড়ডজন শীর্ষ নেতা।

এদিকে, নির্বাচনের আগেই বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া প্রায় ২৫ হাজার মামলার চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দলটি। মুখে আন্দোলনের হুংকার শোনা গেলেও, মামলা সামলাতে ব্যতিব্যস্ত কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলের সিংহভাগ নেতা।

দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেই মামলাকে ব্যবহার করা হচ্ছে হাতিয়ার হিসেবে। বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নামে দায়ের ২০ শতাংশ ফৌজদারি ও দুর্নীতির মামলা সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে। এসব মামলায় কমপক্ষে দুই বছর সাজা হলে, অনেকেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

সিনিয়র আইনজীবীদের মতে, এসব মামলা দ্রুত বিচারের জন্য যদি কোনো পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ করা না হয়, তবে ৫ থেকে ৭ বছরের আগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে না। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুটি মামলার বিচার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অনেক জ্যেষ্ঠ নেতার মামলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।

ইতোমধ্যে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার সাজা হওয়ায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত। আর কেন্দ্রীয় কমিটি এবং স্থায়ী কমিটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ ট্রাইব্যুনালেও অনেক মামলার বিচার চলছে। ওয়ান-ইলেভেনের পর দায়ের করা মামলা নিয়েও নেতারা উদ্বিগ্ন। উচ্চ আদালতে স্থগিত ওই মামলাগুলো ফের চালু হচ্ছে। এছাড়া আরো কিছু মামলা চালুর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপির নেতাদের বিভিন্ন মামলায় দ্রুত সাজা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাত বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। চেয়ারপারসনের মামলাগুলোর কার্যক্রমও দ্রুত শেষ করা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, দলের সিনিয়র নেতাদের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে যাতে বিএনপি অংশ নিতে না পারে সে জন্যই সরকার তাড়াহুড়ো করে মিথ্যা মামলায় সাজা দিতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় যে নীলনকশা হয়েছিল তারই ধারাবাহিকতা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সফল হতে পারবে বলে মনে হয় না।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এই সরকার মামলাবাজ। আমাদের প্রায় প্রত্যেককেই আদালতেই পড়ে থাকতে হয়। একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এইরকম অগণতান্ত্রিক আচরণ অতীতের কোনও সরকারই করেনি। এমনকি পাকিস্তান আমলেও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ৫০ থেকে ১০০টি মামলা ছিল না।

একই প্রসঙ্গে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র নেতাদের নামে দায়ের করা মামলার কার্যক্রম সরকার দ্রুতগতিতে শেষ করতে চাচ্ছে। সিনিয়র অনেক নেতার নামে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। আবার কোনো কোনো মামলার সাক্ষ্য গ্রহণও শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এসব মামলার দ্রুত বিচার নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকার বিএনপিকে মামলার ফাঁদে ফেলতে চাচ্ছে। মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নেতাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!