• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘মাস্তানি’ আইওয়াশ, আর দেশের টাকা নিয়ে যাবে ‘চ্যাম্প’


বিনোদন প্রতিবেদক জুলাই ৬, ২০১৭, ০২:২১ পিএম
‘মাস্তানি’ আইওয়াশ, আর দেশের টাকা নিয়ে যাবে ‘চ্যাম্প’

ঢাকা: চলতি মাসেই দেশের সিনেমা হলে মুক্তি পেতে চলেছে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা দেব অভিনীত নতুন ছবি ‘চ্যাম্প’। সাফটা চুক্তির ভিত্তিতে ‘চ্যাম্প’-এর বিণিময়ে কলকাতার সিনেমায় যাচ্ছে দেশি নির্মাতা ফিরোজ খান প্রিন্স পরিচালিত মারুফ হায়াত অভিনীত ছবি ‘মাস্তানি’। এমনিতেই যৌথ প্রযোজনা নিয়ে বর্তমানে তুমুল সমালোচনা তৈরি হয়েছে। তার উপর সাফটা চুক্তির ভিত্তিতে কলকাতার ছবি দেশের বাজারে আসাকে কিছুটা হুমকি মনে করছেন দেশের সিনেমা সংশ্লিষ্ট মানুষেরা।

চলতি ঈদে কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে দেব অভিনীত বিগ বাজেটের ছবি ‘চ্যাম্প’। কলকাতার সংবাদ মাধ্যমে যতোটুকু জানা যায়, ছবিটি কলকাতার সিনেমায় এখন পর্যন্ত ভালোই ব্যবসা করেছে। একজন বক্সারের জীবন নির্ভর দেব-রক্ষ্মিনী অভিনীত ছবিটি বেশ গুছানো। শুধু তাই না, হল রেশিও অনুযায়ি ছবিটি জিত অভিনীথ যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘বস-২’কেও টেক্কা দিয়েছে। অথচ কলকাতায় মুক্তির একমাসের মধ্যেই এবার সাফটা চুক্তির বেড়াজালে দেশের সিনেমা হলে মুক্তি পেতে চলেছে ছবিটি। 

অথচ এমন ঝকঝকে বাণিজ্যিক একটি ছবির বিণিময়ে বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছে মারুফ হায়াত ও মৌসুমী হামিদ অভিনীত গেল বছরের একটি পুরনো ছবি। শুধু তাই না, ‘মাস্তানি’ নামের ওই ছবিটি মানের দিক থেকে এবং নির্মাণের দিক থেকে মোটেও দেব অভিনীত বাণিজ্যিক ছবি ‘চ্যাম্প’-এর ধারেকাছেও নেই। আর দেশের সিনেমা হলেও ছবিটি মুক্তি পায় গেল বছরের আগস্টে। এফডিসি কেন্দ্রীক প্রাগৈতিহাসিক গল্প, নির্মাণের ছবি ‘মাস্তানি’ যখন মুক্তি পায়, তখন ছবিটির পোস্টার থেকে শুরু করে কাহিনীর বিরুদ্ধেও ওঠেছিলো নকলের অভিযোগ। অথচ এমন মানহীন একটি ছবিকে ‘সাফটা’ চুক্তির দোহায় দিয়ে এক্সচেঞ্জ করা হচ্ছে বাণিজ্যিক এবং মানসম্পন্ন ছবি ‘চ্যাম্প’-এর সঙ্গে। 

আর এমন ঘটনাতেই আপত্তি জানিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শক, নির্মাতা, অভিনেতা থেকে শুরু করে অন্যান্য কলাকুশলীরাও। তারা মনে করছেন, বাংলাদেশ থেকে সাফটা চুক্তির মাধ্যমে যে সিনেমায় কলকাতায় যাচ্ছে তা মূলত দেশেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। এখন ‘মাস্তানি’র মতো নকল ছবির অভিযোগ ওঠা, এবং দেশের সিনেমা হলেই যা বাণিজ্যিকভাবে চরমভাবে ফ্লপ হয়েছে সেটাকে কলকাতার বাণিজ্যসফল কোনো সিনেমার সঙ্গে বিণিময় করানো কতোটা যৌক্তিক। এমন প্রশ্ন করছেন বাংলা চলচ্চিত্রমোদীরা।

শুধু তাই না, অনেকে মনে করছেন ‘সাফটা’ চুক্তির মধ্য দিয়ে কলকাতার সঙ্গে চুপিসারে অনেকে লিয়াজু করছেন। যার ফলে কলকাতার ভালো সিনেমাটি এখানে মুক্তি দিয়ে দেশের টাকা নিয়ে যাচ্ছেন, অন্যদিকে নামে মাত্র একটা বাংলাদেশি ছবি কলকাতায় মুক্তি দিয়ে লোক দেখানোর চেষ্টা করছে একটা পক্ষ। যার ফলে বিণিময় নিয়ে যাতে পরবর্তীতে কোনো কথা না ওঠে। আর এমনটি ঘটেছে চ্যাম্প ও মাস্তানি ছবির ক্ষেত্রেও। 

অন্তত এমনটা মনে করছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা অনিমেষ আইচ। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, চ্যাম্পের সঙ্গে কি করে মাস্তানির মতো একটি মানহীন ছবির বিণিময় হতে পারে? সাফটা চুক্তি যে স্বার্থান্বেষী একটা পক্ষকে সুবিধা দিতেই এখন ব্যবহার হচ্ছে সেদিকে ইঙ্গিত দিয়ে এই নির্মাতা বলেন, আবারো আমরা চরম দেশাত্ববোধের বিণিময় চুক্তির পক্ষে(আমরা মানে তথ্য মন্ত্রনালয় এবং বি এফ ডি সি)। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত চ্যাম্প=মাস্তানি!

এরপর এমন চুক্তির বিণিময়ে যেসব ছবি এক্সচেঞ্জ হচ্ছে সেদিকটি নিয়ে কিছুটা যেনো প্রহসনই করলেন অনিমেষ। বলেন আয়নাবাজী, মনপুরা, গেরিলা, জিরো ডিগ্রী, অজ্ঞাতনামা এবং বিবিধ...চরম হচ্ছে বিণিময়। চরমভাবে উপরে উঠছে চলচ্চিত্র! ‘চ্যাম্প’ নামক ছবি ব্যবসা করে কোটি টাকা নিয়ে যাবে, আর মাস্তানি এক ধরনের আই ওয়াশ। কোন এক প্রেক্ষাগৃহে হয়তো দু'একদিন চলবে। মীরজাফরের গুষ্টি!

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিএল

Wordbridge School
Link copied!