• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মিতু হত্যা : প্রশ্ন অনেক, মেলে না উত্তর


চট্টগ্রাম ব্যুরো জুন ৬, ২০১৬, ০৫:৩৮ পিএম
মিতু হত্যা : প্রশ্ন অনেক, মেলে না উত্তর

সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলছে না। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। এতে জঙ্গি গোষ্ঠী জড়িত বলে তারা ধারণা করছেন।
 
এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অনেক প্রশ্ন সামনে এসেছে। প্রথমতঃ মিতু সাধারণত ছেলে মাহিরকে স্কুল বাসে তুলে দিতে বাসার বাইরে আসতেন না। প্রতিদিন ভোরে স্কুল বাসে তুলে দিয়ে আসতেন পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন। কিন্তু ঘটনার দিন সাদ্দাম হোসেন বাসায় আসেন নি। তার পরিবর্তে মিতুই স্কুল বাসে মাহিরকে তুলে দিতে রাস্তায় আসেন। ঘটনার দিন কনস্টেবল সাদ্দামের অনুপস্থিতি এবং মিতুর বাসার বাইরে আসার কথা ঘাতকরা আগে থেকেই জানলো কিভাবে?
 
সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র বলছে, মিতুকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, বাচ্চাকে নিয়ে প্রতিদিনই বাসার বাইরে বের হলে সে ক্ষেত্রে ঘাতকদের এ ধরনের পরিকল্পনা থাকার কথা। কিন্তু হঠাৎ একদিন তিনি বের হলেন আর সে দিনই খুন হয়েছেন। মিতুই যে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে আসবেন এবং বাবুল আক্তার চট্টগ্রামের বাইরে আছেন- এই বিষয়গুলি ঘাতকদের জানালো কে?
 
পুলিশ সূত্র জানায়, এসপি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার বাসার গেইটে সবসময় একজন কিংবা দুজন কনস্টেবল পাহারায় থাকেন। এ ছাড়া বাবুল ও তার পরিবারের ওপর জীবনের হুমকি রয়েছে, এটা পুলিশ সদর দপ্তর ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সি্েমেপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতেন। বাবুল ঢাকায় হেডকোয়ার্টারে যোগদান করতে যাওয়ার সময় তার পরিবারকে দেখে রাখার জন্য পাঁচলাইশ থানার ওসি ও তার সহকর্মীদের বলেও গিয়েছিলেন। কিন্তু ঘটনার দিন বাবুল আক্তারের বাসার নিচে পুলিশের কোনো নিরাপত্তা প্রহরা ছিল না। এমনকি কনস্টেবল সাদ্দামও সকালে বাসায় আসেননি।
 
রোববার (৫ জুন) স্ত্রী হত্যার খবর পেয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছেই বাবুল আক্তার আহাজারি করতে করতে সহকর্মী পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলছিলেন ‘আমি আপনাদের বলে গিয়েছিলাম আমার পরিবারকে দেখে রাখতে, কেন আপনারা আমার পরিবারকে দেখে রাখেননি?’
 
কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন স্যারের ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিয়ে আসি। কিন্তু শনিবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় বাসা থেকে পুলিশ লাইনে গিয়ে সেখানেই অবস্থান করি। রোববার (৫ জুন) সকালে ম্যাডাম আমাকে ফোন না করায় আমি স্যারের ছেলেকে বাসে তুলে দিতে আসিনি।’
 
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেছেন, ‘আমরা সবগুলো বিষয় খতিয়ে দেখছি। প্রতিটি বিষয় পর্যালোচনা করা হয়েছে। যে কোনো মূল্যে খুনিদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে আমরা কাজ করছি।’

আটক ৪, মামলা ডিবিতে : পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে চারজনকে ইতিমধ্যে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে পাঁচলাইশ থানায় দায়ের হওয়া মিতু হত্যা মামলাটি সোমবার (৬ জুন) নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

এদিকে মিতু হত্যার ঘটনায় আটককৃতদের এখনো গ্রেফতার দেখানো হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানায়নি পুলিশ। আটককৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!