• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বিএফএসএ’র পর্যবেক্ষণ

মিনিকেটের পুষ্টিমান কম, নেই ক্যানসারের ঝুঁকি


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১০, ২০১৮, ১২:০৭ পিএম
মিনিকেটের পুষ্টিমান কম, নেই ক্যানসারের ঝুঁকি

ঢাকা : পর্যবেক্ষণ চালিয়ে বাজারে প্রচলিত মিনিকেট নামের চালে ক্যানসার সৃষ্টির ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)। তবে পালিশ করার কারণে চালটির পুষ্টিমান কমে যায় বলে পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।

প্রচলিত রয়েছে, চাল পলিশ করার সময় বিভিন্ন রাসায়নিকের ব্যবহার করায় এসব চাল দীর্ঘদিন খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে, এমনকি ক্যানসারও হতে পারে। এমন আলোচনা-সমালোচনার ফলে তিন মাস আগে বিএফএসএ একটি কমিটি গঠন করে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নেয়। এই কমিটি সরেজমিনে কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন রাইস মিল পরিদর্শন এবং সেখান থেকে মিনিকেট, বিআর ২৮ ও হাইব্রিড হীরা চালের নমুনা সংগ্রহ করে।

নমুনাগুলো নিয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্সে চালের পুষ্টিগুণসহ বিভিন্ন বিষয় পরীক্ষা করা হয়েছে।

ফলাফলে উঠে এসেছে, মিনিকেট জাতের চাল খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকির কোনো শঙ্কা নেই। দীর্ঘদিন ধরে খাওয়ার কারণে ক্যানসারের ঝুঁকিরও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নির্ধারিত মাত্রার বেশি কোনো দূষক, বিশেষ করে আর্সেনিক উপস্থিত না থাকলে সাদা চাল নিরাপদ বলে জানানো হয়েছে। বিএফএসএ’র চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে বুধবার (৯ মে) প্রতিষ্ঠানের সভাকক্ষে এ বিষয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

তবে মিনিকেটসহ পলিশ করা চালে ব্রাউন চালের চেয়ে পুষ্টিগুণ বেশ খানিকটা কমে যায়। কারণ এর ওপরের লেয়ার ফেলে দেওয়া হয়। যেমন প্রোটিনের পরিমাণ ব্রাউন চালের তুলনায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। একইভাবে ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ফাইবারের পরিমাণও কমে যায়। তবে কমে যাওয়ার পরও যে পুষ্টিগুণ থাকে তা সাদা চালের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ীই থাকে বলে পরীক্ষায় উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ও ১৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন বলেন, পরীক্ষায় এটা প্রমাণ হয়েছে, মিনিকেট বা সাদা চালে পুষ্টিগুণ অনেকটাই কমে যায়। তবে সেটা স্ট্যান্ডার্ড মানের চেয়ে বেশি। সুতরাং এই চাল খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বা ক্যানসারের কোনো সম্ভাবনা নেই।

মিনিকেট চালের অস্তিত্ব নিয়ে বিএফএসএ বলছে, মিনিকেট নামে এক ধরনের ধানের চাষ এদেশে হয়, যার ফলন সীমিত। কুষ্টিয়া জেলায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিভিন্ন প্রকারের ধান উৎপাদিত হয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টনের কিছু বেশি, যার মধ্যে ৩ হাজার ৪৭৪ মেট্রিক টন ধান মিনিকেট নামে চাষ হয়।

তবে দেশে মিনিকেট নামে কোনো জাতের নিবন্ধন নেই। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ‘শতাব্দী’ নামক এক জাতের ধানের বীজ একটি প্যাকেটে কিছু সার কীটনাশকসহকারে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছিল। যেটা পরবর্তী সময়ে ‘মিনি কিট’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সেই কিট বাংলাদেশের কৃষকদের কাছেও চলে আসে। চালটা সরু ও চিকন বিধায় সেটা কৃষক ও ভোক্তার মাঝে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এখনো এই জাতের বীজ ভারত থেকে আসে বলে জানা গেছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!