• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মির্জার সুর নরম, জিয়াকে কাস্ত্রোর সঙ্গে তুলনা


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৩, ২০১৬, ০৬:১১ পিএম
মির্জার সুর নরম, জিয়াকে কাস্ত্রোর সঙ্গে তুলনা

ঢাকা: বিশ্বখ্যাত স্থপতি লুই আই কানের করা জাতীয় সংসদ ভবনের মূল নকশাবহির্ভূত সব স্থাপনা সরিয়ে ফেলা বিষয়ে উদ্বিগ্ন দেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপি। কেননা,  নকশাবহির্ভূত স্থাপনা সরানো হলে দলটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধিও সরানো হতে পারে।

এ ব্যাপারে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের ক্ষমতা আছে বলে যা খুশি করছে। কিন্তু জনগণের মন থেকে তারা জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে পারবে না।

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বর্তমান শাসনামলে সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদ ও আইনের শাসন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এভাবে কথা বলেন।

এসময় মির্জা ফখরুল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য দেন। এতে বলেন, ‘কাস্ত্রোর মৃত্যুর পর বিভিন্ন দেশের তরুণেরা তার জন্য কাঁদছে। জিয়াউর রহমানও এমন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুর পর লাখ লাখ মানুষ তার জন্য কেঁদেছিল।’

সরকারের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম পদক কেড়ে নিয়ে তার চরিত্র হননের চেষ্টা করছে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না। কারণ, জিয়াউর রহমানকে মানুষ হৃদয়ে ধারণ করে।’

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, লুই কানের মূলনকশা আনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে জিয়াউর রহমানের কবর সরানো। স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান গণমাধ্যমের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, লুই কানের নকশায় ইতিমধ্যে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাড়ি হয়েছে সংসদ এলাকায়, সেখানে একটি কবরস্থান, একটি সম্মেলন কেন্দ্রসহ আরও কিছু স্থাপনা সেখানে দৃশ্যমান। এসব স্থাপনার কারণে সংসদ কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটার অভিযোগ কেউ করেননি।

সরকারের সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, পাকিস্তান আমলের নকশার প্রতি এই সরকারের এত ভালোবাসা সন্দেহজনক। কেন এই ভালোবাসা তা বুঝতে কারও বাকি থাকার কথা নয়।

সূত্রমতে, পাকিস্তান আমলে ১৯৬১ সালে মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের নকশা অনুযায়ী সংসদ ভবন কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৮২ সালে। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে জিয়ার মাজারকে কেন্দ্র করে চন্দ্রিমা উদ্যানের নাম পরিবর্তন করে জিয়া উদ্যান রাখে। এরপর সেখানে সুদৃশ্য সমাধিসৌধ নির্মাণ করে। এ ছাড়া মাজারে যাওয়ার জন্য স্থাপন করে একটি আকর্ষণীয় বেইলি ব্রিজ। তবে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার জিয়া উদ্যানকে ফিরিয়ে দেয় তার আগের পরিচয় ‘চন্দ্রিমা উদ্যান’-এ। ক্রিসেন্ট লেকের ওপর থেকে বেইলি ব্রিজটিও সরিয়ে দেয়া হয়। পরে আবার বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেখানে কংক্রিটের ঝুলন্ত সেতু নির্মাণসহ একটি কমপ্লেক্স গড়ে তোলে। সেখানে জিয়ার মাজারের চারদিকে থাকা চারটি প্রবেশপথের শুরু বা শেষ প্রান্তে রয়েছে ঝুলন্ত সেতু, সম্মেলন কেন্দ্র ও মসজিদসহ চারটি স্থাপনা। এ ছাড়া বিএনপি সরকার চন্দ্রিমা উদ্যানের পাশে ১০ একর জমিতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র গড়ে তোলে; যা পরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র নামকরণ করা হয়। 

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!