• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারে ২৫ রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ১৪, ২০১৬, ০৪:২৯ পিএম
মিয়ানমারে ২৫ রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোববার ২৫ রোহিঙ্গা মুসলিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, অশান্ত অঞ্চলটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনতেই ওই ২৫ জনকে হত্যা করেছে তারা।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নিহতদের সবার কাছেই ধারালো অস্ত্র ও কাঠের লাঠি ছিল। শনিবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে হেলিকপ্টার গানশিপ নিয়ে সামরিক অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। প্রথম দিনের অভিযানে দুই সেনা সদস্যসহ আটজন নিহত হয়।

সেনাবাহিনীর দাবি, জঙ্গিদের লক্ষ্য করেই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যায়, নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশুও রয়েছে। সেনা অভিযান থেকে বাঁচতে শত শত রোহিঙ্গা মুসলিম ঘরবাড়ি ছাড়ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বর্তমানে কোনো মাধ্যমকে রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না সেনাবাহিনী। তাই সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া কোনো বিবৃতি না বুঝে গ্রহণ করা ঠিক হবে না বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গারা ধারালো অস্ত্র ও কাঠের লাঠি নিয়ে সেনাদের ওপর হামলা করেছে- সেনাবাহিনীর এই দাবি যদি সঠিকও হয় তবু সেনাবাহিনীর এর প্রতিবাদে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।

দেশটির সরকারি গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে রোহিঙ্গারা একে মিথ্যা বলে দাবি করেছে। রোববার রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে ১৩০টির বেশি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দেখা যায়, একটি বাড়িতে নিহত এক নারী ও কয়েক শিশুর লাশ পড়ে আছে। অন্যরা তাদের জ্বলন্ত বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে এবং সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার গানশিপ মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে।

এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত নীরব রয়েছেন মিয়ানমারের শান্তিতে নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি। যদিও এখন পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ রয়ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে। তবু সু চির ভূমিকা সমালোচিত হচ্ছে। ওই অঞ্চলে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনে কূটনৈতিকদের দাবিও তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন।

গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি সীমান্ত ফাঁড়িতে বেশ কিছু হামলার ঘটনার পর থেকে সেখানে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। ওই এলাকায় সাংবাদিক এবং সাহায্যকর্মীদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা ও মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, রাখাইন অঞ্চলের মানুষের ওপর মিয়ানমারের সেনারা নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানকার নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে এবং বাড়িঘরে আগুন দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।

২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে কয়েকশ মানুষ নিহত হওয়ার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সেখানে সবচেয়ে সহিংস অবস্থা চলছে। প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার বাস। তবে মিয়ানমার সরকার তাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। আর এ কারণে অনেকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বাংলাদেশে পাড়ি জমায়।

সোনালীনিউজ/ ঢাকা/ আরএস

Wordbridge School
Link copied!