• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মিয়ানমারের বিচার বাংলাদেশেও সম্ভব


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭, ০৬:৪৯ পিএম
মিয়ানমারের বিচার বাংলাদেশেও সম্ভব

ঢাকা: মিয়ানমার সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনীর চলমান গণহত্যা ও লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে দেশত্যাগে বাধ্য করার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের পাশাপাশি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও এ ঘটনার বিচার সম্ভব বলে মনে করছেন আইন বিশ্লেষকরা।  তারা বলছেন, ‘বিচারের পাশাপাশি বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারের কাছে ক্ষতিপূরণও দাবি করতে পারে।’

এরইমধ্যে মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক গণআদালতের শুনানিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছেন রোহিঙ্গা, কাচিন, কারেনসহ কয়েকটি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।

এদিকে ‘রোম স্ট্যাটু অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট ১৯৯৮’ এর অনুচ্ছেদ ১৩ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করার পাশাপাশি মিয়ানমারের সেনাপ্রধানকে ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলির’ দায়ে অভিযুক্ত করা সম্ভব, বলে মত দিয়েছেন গণহত্যা নিয়ে কাজ করছেন এমন গবেষকরা।

রোম স্ট্যাটু অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট ১৯৯৮ এ বলা হয়েছে, ‘যেসব সদস্য দেশ রেকটিফাই করে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের (আইসিসি) পূর্ণাঙ্গ সদস্য হয়েছে তারা যদি এ ধরনের কোনও অপরাধ সংঘটিত করে তাদের বিচার আইসিসি করতে পারবে।’

কিন্তু মিয়ানমার রেকটিফাই করেনি। তবে আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, এক্ষেত্রেও উপায় আছে। নিরাপত্তা পরিষদ একটি রেজুলেশন পাশ করে সরাসরি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টকে (আইসিসি) বিচারের জন্য বলতে পারে। এছাড়াও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে।

যেহেতু মিয়ানমার নির্যাতন করে তাদের নাগরিকদের আমাদের দেশে পাঠিয়েছে, সেহেতু ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) গিয়ে রোহিঙ্গাদের খাবার, আশ্রয়, ভরণপোষণ চেয়ে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবে বাংলাদেশ।

এদিকে মালয়েশিয়ার গণ আদালতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক অংশ নিয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে বলেছেন, ‘মিয়ানমারের নাগরিকদের হত্যা ও নির্যাতনের করণে জাতিসংঘ, আশিয়ান, ওআইসিসহ বিশ্বের অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। যাতে এই নির্যাতন বন্ধ হয় এবং যেসব নাগরিক বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হয়েছে তাদের যেন নিজ দেশে ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়।’

‘এ ধরণের গণহত্যার বিচারের জন্য বিশ্বে একটি স্থায়ী আদালত আছে। রোম স্ট্যাটু অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট ১৯৯৮ এর অনুচ্ছেদ ১৩ অনুযায়ী আইসিসিতে মিয়ানমারের বিচার করা সম্ভব’ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সেরু সাগু একজন সিভিলিয়ান ছিলেন এবং তার বিচার রুয়ান্ডাতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে মিয়ানমারের ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলির’ দায়ভার অং সান সু চিকে নিতে হবে।

বাংলাদেশের আইনে কিভাবে বিচারটি করা সম্ভব প্রশ্নে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল জানান, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল আইন অনুসারে বিচার করতে হলে অপরাধটি বাংলাদেশে সংঘটিত হতে হবে।’

কিন্তু আইনের সার্বজনীন এখতিয়ারও রয়েছে। সে অনুযায়ী, অন্য দেশে মানবতাবিরোধী কোনও অপরাধ করে যদি আমাদের দেশে আশ্রয় নেয় তাহলে আমরা আমাদের আইন অনুযায়ী ওই ব্যক্তির বিচার করতে পারবো। অর্থাৎ অপরাধীকে বিচার করতে হলে তাকে কখনও না কখনও বাংলাদেশে আসতে হবে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!