• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারের সেনাপ্রধানকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে: জাতিসংঘ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ২৭, ২০১৮, ০৬:৩৫ পিএম
মিয়ানমারের সেনাপ্রধানকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে: জাতিসংঘ

ঢাকা: মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে সেদেশের সেনাবহিনীর প্রধানসহ প্রথমসারির সেনা কর্মকর্তাদের অবশ্যই গণহত্যার দায়ে শাস্তি পেতে হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ২৫ বছর আগে যেভাবে বসনিয়া ও রুয়ান্ডায় গণহত্যার দায়ে দোষীদের বিচার করা হয়েছে, ঠিক সেভাবে তাদের বিচার করতে হবে বলে দাবি জানায় সংস্থাটির মানবাধিকার কাউন্সিল।

সোমবার (২৭ অঅগস্ট) এই আহ্বান জানানো হয় বলে বার্তা সংস্থা এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়। মিয়ানমারের সহিংসতা উপলক্ষে ২০১৭ সালের মার্চে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল এই ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গঠন করে।

জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন জানায়, ২৫ বছর আগে বসনিয়া ও রুয়ান্ডায় গণহত্যার দায়ে যেভাবে বিচার করা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ ঊর্ধতন সেনা কর্মকর্তাদের সেভাবে বিচার করতে হবে।

প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, রাখাইন, কাচিন, শান রাজ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইংসহ এই শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া উচিত। বিশেষ করে প্রকৃত নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে সেনাবাহিনীর কৌশল একেবারে সামঞ্জস্যহীন।

আরো বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা পরিস্থিতির গুরুত্ব ও সুযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গণহত্যার সমান। সহিংসতার মাত্রা, নিষ্ঠুরতা ও ধরনে স্পষ্ট যে একটি সভ্য জনগোষ্ঠীকে ভয় দেখাতে এবং শাস্তি দিতেই এমনটা করা হয়েছে, যা সাধারণত যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এদিকে রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে এবং একটি তদন্ত কমিশন গঠন করতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

সোমবার (২৭ আগস্ট) এক বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়া সরকার জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়া জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের স্বাধীন তদন্তে সহায়তা করেছে। দোষীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। সেপ্টেম্বরে হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপিত হলে আমরা প্রতিক্রিয়া জানাবো।

আসুন আমরা রাখাইনে কফি আনানের পরামর্শক কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে তার প্রতি সম্মান জানাই বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এতে।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে মিয়ানমার ইস্যুতে অনেকগুলো রিপোর্ট প্রকাশ করা হলেও এই প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ এত কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে। এর আগে জাতিসংঘ মিয়ানমার সরকারকেই জড়িত সেনা সদস্যদের বিচারে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছিল। তবে এবারই প্রথম সংগঠনটি বলছে রুয়ান্ডা ও বসনিয়ার কসাইদের যেভাবে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে, তাদেরও সেভাবেই বিচার করা হবে।

এদিকে জাতিসংঘের এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মিয়ানমার সেনা প্রধান ও ঊর্ধতন সেনা কর্মকর্তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানায়, মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্যালেং ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক আইডি ব্লক করে দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!