• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুশফিক-মিরাজ বীরত্বে বাংলাদেশ ৩২২/৬


ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৭, ০৪:১৬ পিএম
মুশফিক-মিরাজ বীরত্বে  বাংলাদেশ ৩২২/৬

ঢাকা: হায়দরাবাদ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬৮৭ রানের পাহাড় গড়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে স্বাগতিক ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিনের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম সেশনেই একে একে সাঝঘরে ফেরেন তামিম, মমিনুল আর মাহমুদুল্লাহ। দলের প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম আর সকিব আল হাসান। মুশফিক সতর্কতার সঙ্গে খেললেও খানিকটা ওয়ানডে স্টাইলে খেলে ৬৯ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন সাকিব। তবে ইনিংসটাকে দীর্ঘ করতে পারেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ৮২  রান করে বিদায় নেন তিনি। তবে হাল ছাড়েননি মুশফিক। উদীয়মান অলরাউন্ডার মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করছেন ক্যাপ্টেন কুল মুশি।

মুশফিক আর মিরাজের বীরত্বপুর্ণ ব্যাটিংয়ে ভর করে তৃতীয় দিন শেষে ছয় উইকেট হারিয়ে ৩২২ রান সংগ্রহ করেছে সফরকারি বাংলাদেশ। ফলে ভারতের প্রথম ইনিংসের চেয়ে এখনো ৩৬৫ রানে পিছিয়ে টাইগাররা। মুশফিকুর রহীম ৮১ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ৫১ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) চতুর্থ দিনে ব্যাট হাতে মাঠে নামবেন তারা।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগের দিনের এক উইকেটে ৪১ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। এদিন শুরুতেই ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন তামিম ইকবাল। তামিমের বিদায়ে ক্রিজে আসা মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে ভারতের পাহাড় সমান রান পাড়ি দেয়ার দায়িত্ব নেন আরেক বাঁহাতি মমিনুল হক। কিন্তু বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি মমিনুলের ইনিংসও। দলীয় ৬৪ রানে উমেশ যাদবের রিভার্স সুইংয়ে স্ট্যাম্পের সামনে ব্যক্তিগত ১২ রানে ধরা পড়েন মমিনুল হক।

ভারতীয় পেসার উমেশ যাদব তখন দুর্দান্ত রিভার্স সুইং স্পেলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো। নতুন ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসানকে ব্যাটের দুই পাশ দিয়ে কয়েকদফা পরাস্ত করেন তিনি। দুই-তিন বার লেগ বিফরের আবেদন থেকে বেঁচে যান তিনি। অন্য প্রান্তে থাকা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ভালো শুরু করলেও লম্বা ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। ইশান্ত শর্মার প্রথম স্পেলেই সেই রিভার্স সুইং পড়তে ব্যর্থ হন ২৯ রান করা রিয়াদ। লেন্থ থেকে ভেতরে আসা বলটি রিয়াদের পেছনে পায়ে আঘাত হানে এবং রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি তিনি।

রিয়াদে বিদায়ে ক্রিজে এসে ইনিংস মেরামতের কঠিন কাজ করতে নামেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। প্রথম সেশনের ২৯ ওভার শেষে চার উইকেটে ১২৫ রানে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

 বিরতির পর ভুবনেশ্বর কুমারকে ড্রাইভ ও লেট কাটে কয়েকদফা বাউন্ডারি ছাড়া করেন সাকিব। মুশফিকও সুইপ শটে বাউন্ডারি খুজে পান। ৪৮তম ওভারে অশ্বিনকে কাভারে চার মেরে ৭০ বলে অর্ধশত পূর্ণ করেন সাকিব। সেই সাথে দলের স্কোরও ১৫০ পার করে। অশ্বিনের পরের ওভারে অর্ধশত জুটি পূর্ণ করেন সাকিব-মুশফিক। একই ওভারে অল্পের জন্য রান আউট থেকে রক্ষা পান মুশফিক। তবে সাকিব আল হাসান আরেক প্রান্তে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যেতে থাকেন।

উমেশ যাদবের করা ৫৫তম ওভারে দুইবার কাভার বাউন্ডারি খুজে পান সাকিব। পাঁচের উপর রান তুলে নিয়ে ৫৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় চার উইকেটে ১৯৯ রান।

ইনিংসের ৬০তম ওভারে জাদেজার বলে মুশফিক লেট কাট করে চার রান তুলে নিয়ে সাকিব-মুশফিকের শত রানের জুটি পূর্ণ করেন। কিন্তু অশ্বিনের করা ৬৩তম ওভারে এসে ভুল করে বসেন উইকেটে থিতু হওয়া ব্যাটসম্যান সাকিব। ৮২ রান করা সাকিব লেগ স্ট্যাম্প থেকে টার্ন করা বলটি তুলে মিড উইকেটে তুলে মারতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ তোলেন তিনি। ফিল্ডার উমেশ যাদব কোন ভুল করলেন না।। সহজ ক্যাচ শেষ হয় সাকিবের দুর্দান্ত ৮২ রানের ইনিংসটি।

সাকিবের আউটে মুশফিককে অল্প কিছুক্ষণের জন্য সঙ্গ দিয়ে জাদেজার প্রথম শিকার হয়ে ফিরে যান সাব্বির রহমান। আউট হওয়া আগে ১৫ রান যোগ করেন তিনি। এ পর্যায়ে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তরুণ এই অলরাউন্ডারকে নিয়েই তৃতীয় দিন পার  করে অধিনায়ক মুশফিক।

এর আগে ভারত তাদের প্রথম ইনিংসে ওপেনার মুরলি বিজয়ের সেঞ্চুরির পর অধিনায়ক ভিরাট কোহলির ডাবল সেঞ্চুরি ও উইকেট কিপার ঋদ্ধিমান সাহার সেঞ্চুরিতে ছয় উইকেটে ৬৮৭ রান ইনিংস ঘোষণা করে।

জবাবে দ্বিতীয় দিনের শেষ বেলায় ব্যাট করতে নেমে দারুন সূচনা করে দুই বাংলাদেশি ওপেনার সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। কিন্তু দিনের দুই ওভার বাকি থাকতে ভিরাট কোহলি রিভিউতে ধরা পড়েন দারুন শুরু করা সৌম্য। বাংলাদেশ দল শেষ পর্যন্ত এক উইকেটে ৪১ রান দিন শেষ করে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!