• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘন্টা ডাণ্ডাবেড়ি!


কক্সবাজার প্রতিনিধি আগস্ট ১৬, ২০১৭, ১১:১৫ এএম
মৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘন্টা ডাণ্ডাবেড়ি!

কক্সবাজার: জেলা কারাগারে নির্যাতনে এক হাজতির মৃত্যু পরে প্রায় ২৪ ঘন্টা ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৪ আগষ্ট) দুপুরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ওই হাজতির মৃত্যু হয়।

ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় ডাণ্ডাবেড়ি খোলা হয়। এর আগে মৃত্যুর পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা তাকে ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থাতেই হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়েছিল।

সেই ছবি ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

ওই হাজতির নাম মোহাম্মদ রায়হান (২৪), বাড়ি কক্সবাজার সদরের নূরপাড়ায়। স্বজনরা জানায়, রায়হান ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা ছিলেন। পুলিশ কয়েক দিন আগে তাকে আটক করে। পরে দুটি চুরির মামলার আসামি হিসেবে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

রায়হানের ছোট ভাই আরমান জানান, গত রোববার কারাগারে রায়হানকে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময় রায়হান তাকে বলেছিলেন, কারা ওয়ার্ডে শোয়ার জায়গা নিয়ে অন্য হাজতিদের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়েছিল।

এই ঝগড়াকে কেন্দ্র করে কারারক্ষীরা তাকে বেদম মারধর করেছেন। আরমানের ভাষ্য মতে, রায়হানের পেটে একবার অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। হয়তো কারারক্ষীদের মারধরের সময় অস্ত্রোপচারের জায়গায় আঘাত লেগেছিল। এ কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

কারা সূত্র জানায়, কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো অবস্থায় রায়হানকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।

জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীন আবদুর রহমান জানান, হাসপাতালে আনার সময়ই ওই হাজতির অবস্থা ছিল অত্যন্ত সংকটাপন্ন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের আগে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না।

তবে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করে কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক বজলুর রশীদ দাবি করেন, হাজতি রায়হান স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত বছর এক হাজতিকে কারাগারের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পর সে পালিয়ে গিয়েছিল। এর পর থেকে কোনো আসামি বা হাজতিকে কারাগারের বাইরে বের করা হলেই পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হয়। সে কারণে রায়হানকেও ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হয়েছিল।

ডাণ্ডাবেড়ি খুলে নিতে দেরি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বজলুর রশীদ বলেন, ডাণ্ডাবেড়ি খোলাটা বেশ কষ্টসাধ্য। এ ক্ষেত্রে লোকজন আসতেও হয়তো দেরি হয়েছে কিছুটা। তাই খুলতে সময় লেগেছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!