• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘মেকআপম্যান হারুনকে জোর করে ভিক্ষা করানো হয়’


বিনোদন প্রতিবেদক অক্টোবর ১৫, ২০১৮, ০৪:৫৯ পিএম
‘মেকআপম্যান হারুনকে জোর করে ভিক্ষা করানো হয়’

স্ত্রীর সঙ্গে কাজী হারুন

ঢাকা: ‘মেকআপম্যান কাজী হারুকে জোর করে ভিক্ষা করানো হয়’ বলেছেন মানিক নামের এক মেকআপম্যান। বিষয়টির সঙ্গে বেশ কয়েকজন মেকআপম্যান একমত পোষণ করেন। মানিক বলেন, ‘দেখুন, তার দুই ছেলে। দুইজন মানুষ শ্রমিকের কাজ করলেও তো বৃদ্ধ বাবার ভাতের অভাব হয় না। আর সমিতি থেকে তো আমরা ওষুধের টাকা দিতামই। আসলে হারুন ভাই কথা বলতে পারেন না। তাকে একপ্রকার জোর করে ভিক্ষা করানো হয়।’

মেকআপম্যান সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘গত রোজার ঈদে আমি হারুন সাহেবের বাসায় গিয়েছিলাম। হাতে টাকা দিলে এটা অন্যভাবে খরচ করা হয় দেখে একটা ফার্মেসিতে চুক্তি করি। তারা নিয়মিত ৩ হাজার টাকার ওষুধ দিতো। কিন্তু পরে দেখি সেই ওষুধ নিয়ে অন্য জায়গায় বিক্রি করা হয়। কারণ, তাদের পুরো পরিবারই মাদকে আসক্ত। এরপর সে টাকাটা দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছি।’

ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘বেদের মেয়ে জোসনা’র মেকআপম্যান ছিলেন  কাজী হারুন। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’ ছবিতে কাজের জন্য তিনি পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। 

স্ট্রোক করার পর এক পা অসাড় হয়ে যায় ও বাকশক্তি হারান। এরপর একপ্রকার বাধ্য হয়েই ভিক্ষাবৃত্তিতে নামেন তিনি। জানা যায়, কাজী হারুনের বিষয়টি নিয়ে বেশ আগে থেকেই অবগত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র মেকআপম্যান সমিতি। বেশ কয়েকবার তাকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলামের। এমনকি সমিতির পক্ষ থেকে কাজী হারুনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর আবেদন করার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।

 ‘২০০৯ সালে গাজীপুরের হোতাপাড়া থেকে একটি সিনেমার শুটিং শেষ করে বাড়ি ফেরেন। তারপর বাথরুমে ব্রেন স্ট্রোক করেছেন। প্রায় তিন মাস হাসপাতালে থাকতে হয়। বাড়িতে যে জমানো টাকা ছিল, সব খরচ হয় হাসপাতালে। এখনো তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। শরীরের ডান পাশটা প্রায় কাজ করে না বললেই চলে। এছাড়া মেয়ের বিয়ের সময় জাতীয় পুরস্কার হিসেবে প্রাপ্ত সোনার মেডেল বিক্রি করে দিতে হয়।’

তাদের একমাত্র মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পর ঘরে আর কোনও টাকা অবশিষ্ট ছিল না। বাড়ি ভাড়া দিতে পারছিলে না, ঘরে খাবার নাই। এরই মধ্যে পাশের এক বাড়িতে কাজ করে কিছু খাবার সংগ্রহ করেন মহুয়া। একদিন তিনি অসুস্থ হলে খুব খারাপ অবস্থা তৈরি হয়। তখন হারুনকে ঘর থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছুই যখন করতে পারেন না, যান ভিক্ষা করেন।’

সোনালীনিউজ/বিএইচ
 

Wordbridge School
Link copied!