• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেগা প্রজেক্টে হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জুন ১৭, ২০১৭, ০৭:২৪ পিএম
মেগা প্রজেক্টে হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি

সিপিডি আয়োজিত প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় আমির খসরু মাহমুদ চৌধূরী

ঢাকা: সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া সরকার এই বাজেট বাস্তবায়ন করতে পরবে না, এটি সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান না হলে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে না। অবৈধ সরকারের নেয়া মেগা প্রজেক্ট হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির ক্ষেত্র তৈরি করেছে। আট হাজার কোটি টাকার সেতু নির্মাণের খরচ বেড়ে হয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকায়।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি। শনিবার (১৭ জুন) সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে নতুন অর্থবছরের (২০১৭-১৮) প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সংস্থাটি। সিপিডির চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আলোচক হিসেবে সরকারের মন্ত্রী ও নীতি-নির্ধারক, দেশি-বিদেশি অতিথি ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

আমির খসরু তার বক্তব্যে বলেন, ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ ছাড়া কিছু দুর যাওয়া যায়। কিন্তু অনেক দুর যাওয়া যায় না। সরকার বিনিয়োগে কোন খাতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে তা দেখতে হবে। সরকার মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে। মেগা প্রজেক্ট দরকার কিন্তু প্রকৃত অর্থনীতিতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অন্য খাতে বিনিয়োগ আগে করতে হবে। এজন্য ডেমোগ্রাফিক ডিভিন্টে (মনবসম্পদ) বিনিয়োগ আগে করতে হবে। মানবসম্দ উন্নয়নে সরকারের মনোযোগ নিই। 

তিনি বলেন, দশ বছর আগে আমাদের মোট দেশজ উৎপাদন ছিল ৭.০৬। দশ বছর ধরেই আমরা প্রবৃদ্ধির এক জায়গায় আটকে আছি। মানব সম্পদ উন্নয়নে আমরা বিনিয়োগ করছি না। স্বাস্থ্য, শিক্ষায় বিনিয়োগ করিনি। আমরা মেগা প্রজেক্টে বিনিয়োগ করছি। আট হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু এখন ২৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। মেগা প্রজেক্টের খরচ বাড়লে আলাদা হিসাব থাকে সবার। প্রবৃদ্ধিতে সতিক্যার অর্থে এটার প্রতিফলন দেখতে পারছি না। 

মেগা প্রজেক্টগুলো দুর্নীতির নতুন ক্ষেত্র তৈরি করছে। হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। এই দুর্নীতির হিসাব কে দিবে প্রশ্নে করেন তিনি। আমাদের প্রকৃত আয় কমে গিয়েছে। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ প্রয়োজন। দেশে বেকারত্ব দুর না হলে এটি জনবান্ধব হয় কিভাবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা।

আমির খসরু বলেন, বেসরকারী বিনিয়োগের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। গণতন্ত্রই যদি না থাকে তাহলে বিনিয়োগ হবে কিভাবে। রাজনৈতিক সংকটের কারণেই প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। রিয়েল ইনভেস্টমেন্ট দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমরা যদি এখনো গণতন্ত্র আনার কথা বলি, তাহলে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের কাছে কী বার্তা যাচ্ছে। সরকার বেসরকারি বিনিয়োগ ছাড়াই বিনিয়োগে আগাতে চাচ্ছে। এটা সম্ভব হবে না বলে ইতিমধ্যে প্রমানিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় তিনি আরো বলেন, আমাদের বাজেট বাস্তবায়ন সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। গত অর্থবছরে ২০০৯ সাল থেকে বাজেট বাস্তবায়ন সক্ষমতা ৯০ শতাংশ থেকে কমে ৭৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। কারণ আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করতে পারছে না। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। মেধাবী কর্মকর্তারা কাজ করতে পারছেন না। তারা সাইড লাইন হয়ে যাচ্ছেন। অতিরিক্ত রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন হচ্ছে। এই সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় কর্মকর্তারাও কাজ করতে পারছেন না। স্বাধীন দেশে এখনো একটি সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তা কি ভাল বলে প্রশ্ন করেন তিনি।

আমির খসরু বলেন, যখন কোনো দেশে অবৈধ সরকার আসে, তখন তারা আকর্ষণ সৃষ্টি করতে বড় বড় ভবন, ব্রিজ ও সড়ক তৈরি করে। যেহেতু এই সরকারের বৈধতা নেই, তাই বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ শুরু করেছে। যেখান থেকে কর আসার কথা ছিল তা আসছে না। রিয়েল ইকোনমি কাজ করছে না। এজন্য প্রত্যক্ষ করের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে সরকারকে। এখানেই সামাজিক ন্যায় বিচার হচ্ছে না।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/তালেব

Wordbridge School
Link copied!