• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মেঘ হামলে পড়ছে মানবসভ্যতার ওপর!


বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক মে ১৩, ২০১৭, ০৮:৩৭ পিএম
মেঘ হামলে পড়ছে মানবসভ্যতার ওপর!

বর্ষার মেঘ

ঢাকা: মেঘের ভেলায় চড়ে স্বপ্ন উড়ানোর দিন বুঝি শেষ হয়ে আসছে। ধীরে ধীরে মেঘ পরিণত হচ্ছে দানবে। নিকট ভবিষ্যতে হিংস্র থাবা নিয়ে হামলে পড়তে পারে মানবসভ্যতার ওপর। একেবারেই সাম্প্রতিককালের একটি গবেষণার ফলাফল থেকে গায়ে কাঁটা দেয়া সেই আশঙ্কার আভাস দিয়েছে নাসা।

গেল ১৫ বছর ধরে পৃথিবীর প্রায় সব প্রান্তের আকাশে মেঘের আকার-আকৃতি, আচার-আচরণ পর্যবেক্ষণ করছে মহাকাশে পাঠানো নাসার ‘টেরা’ উপগ্রহ।

মেঘেদের সেসব তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ থেকে টেরা জানাচ্ছে, মেঘের দঙ্গল ধীরে ধীরে নেমে আসছে ভূমির দিকে। হামলে পড়তে চলেছে মানবজাতির ওপর! যেন মেঘই তাদের ‘কালোছায়ায়’ ঢেকেঢুকে দেবে আমাদের জীবন, যাপন!

অপরদিকে, নাসার একটি গবেষণার ফলাফল বলছে, মেঘ একটু একটু করে আমাদের ঘাড়ের ওপরে এসে যাচ্ছে। পাতলা হয়ে যাচ্ছে। ছোট হয়ে যাচ্ছে। চেহারায় খাটো হয়ে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে উজ্জ্বলতাও। তবে সেটাও যে খুব নিয়ম মেনে হচ্ছে, তা নয়। পৃথিবীর সর্বত্রই হচ্ছে, এমনটাও নয়। কখনও হচ্ছে, কখনও তা হচ্ছে না। কোথাও হচ্ছে, আবার কোথাও কোথাও তা হচ্ছে না। কেন হচ্ছে, খুব সঠিক ভাবে যে তা বোঝা যাচ্ছে না। এমনটাও স্বীকার করে নিয়েছেন নাসার গবেষকরা।

গেল ১৫ বছর ধরে পৃথিবীর দিকে মোট ৯টি ক্যামেরাকে তাক করে রেখে আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহটিকে চক্কর মেরে গিয়েছে নাসার ‘টেরা’ উপগ্রহ। আর বিভিন্ন কৌণিক অবস্থান থেকে ওইসব ক্যামেরায় তোলা মেঘেদের ছবি বিশ্লেষণ করেছে উপগ্রহটির ‘মাল্টি-অ্যাঙ্গেল ইমেজিং স্পেকট্রো-রেডিওমিটার (এমআইএসআর) ইনস্ট্রুমেন্ট। ছবিগুলি তোলা হয়েছে দৃশ্যমান আলো ও কাছের অবলোহিত রশ্মির (নিয়ার-ইনফ্রারেড) চারটি তরঙ্গদৈর্ঘ্যে (ওয়েভলেংথ)।

মেঘেদের ওপর নজর রাখতে এমআইএসআর মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছিল ১৯৯৯ সালে। এর পাঠানো প্রথম ১০ বছরের তথ্য নিয়ে ২০১২ সালে গবেষণাপত্র তৈরি করেন নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাকলে-গ্ল্যাভিশ চেয়ার’ প্রফেসর রজার ডেভিস।

বজ্রবিদ্যুতের মেঘ

প্রফেসর ডেভিস তার গবেষণাপত্রে দেখিয়েছেন, গত এক দশকে পৃথিবীর কোথাও কোথাও মেঘ নেমে আসছে আমাদের ঘাড়ের ওপর। কোনো কোনো বছরে বা বছরের বিশেষ কোনো সময়ে। পরের ৫ বছরের তথ্য যদিও দেখিয়েছে, এই ওঠা-নামার কোনো নির্দিষ্ট ধারবাহিকতা (ট্রেন্ড) নেই। তবে এক বছর থেকে অন্য বছরে মেঘেদের উচ্চতা যে পৃথিবীর কোনো কোনো অঞ্চলে কমছে, তা নিয়ে অন্তত কোনো সন্দেহ নেই। মেঘ নিচে নেমে আসছে আগের বছর থেকে পরের বছরে।

খুব ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে আমরা যেমন গায়ে চাদর জড়াই, বিছানায় শোওয়ার সময় রাতে গায়ে টেনে নিই কম্বল, ঠিক তেমনই প্রখর সূর্যের তাপ আর মারাত্মক বিকিরণের হাত থেকে একেবারে ‘কম্বলে’র মতোই আমাদের আগলে রাখে মেঘ। ছায়া দেয়, শীতলতা দেয়, দেয় কিছুটা প্রাণজুড়োনো শান্তিও। তবে সেই মেঘই হয়ে উঠছে দানব হিংস্র হিসেবে।

তাহলে হু হু করে নিচে নেমে আসা দানব মেঘ কি আমাদের জাপটে ধরবে? ফাঁস হয়ে বসবে গলায়? নিশ্চিহ্ন করে দেবে আমাদের? অদূর ভবিষ্যতই বলে দেবে এসব প্রশ্নের উত্তর।

সোনালীনিউজ/এন 

Wordbridge School
Link copied!