• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
বিচিত্র সম্প্রদায়

মেয়ে-বউদের ঠেলে দেয়া হয় দালালদের কাছে!


বিচিত্র সংবাদ ডেস্ক জানুয়ারি ৭, ২০১৭, ০৯:১৭ পিএম
মেয়ে-বউদের ঠেলে দেয়া হয় দালালদের কাছে!

ঢাকা: দূর মহাদেশের কোনো আদিবাসী সম্প্রদায় নয়। বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতেই তাদের বসবাস। তাও আবার খোদ রাজধানী দিল্লীতেই। চোখ ধাঁধানো এই শহরের অদূরে নজফগড়ের পরনা সম্প্রদায়ের মধ্যেই এমন ভয়াবহ রীতি প্রচলিত।

এই সম্প্রদায়ের লোকেরা বাড়ির বউদের ঠেলে দেন চূড়ান্ত লজ্জাজনক পেশায়। আর সাত-আট বছর বয়স হলেই বাবা-মা তার মেয়েকে পাঠিয়ে দেন কোনো দালালের কাছে। সেই দালালের কাজ হচ্ছে, ওই মেয়েকে যৌনপেশায় প্রশিক্ষিত করা।

দেশ স্বাধীন হয়েছে ৭০ বছর হতে  চলল। আজও সেই নারীরা প্রাপ্য সম্মানটুকুও পাননি। যদিও নারীর অবমাননার এমন অজস্র ঘটনা দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিনই ঘটে চলেছে। তবে খোদ রাজধানীর কাছেই যে এমন ভয়াবহ রীতি প্রচলিত, তা কল্পনাও করা যায় না। বাড়ির বউদের যৌনপেশায় নামানো ও তা থেকে উপার্জন করাই এ সম্প্রদায়ের রীতি। আর এই অসম্মানজনক পেশায় বউদের ঠেলে দেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই।

কীভাবে চলে আসছে এই রীতি?
পরনা সম্প্রদায়ভুক্ত লোকদের বাড়িতে কন্যাসন্তান জন্ম নিলে বাড়ির লোকজন খুশিয়ে হেসে ওঠেন। তারা জানেন, একটু বড় হয়ে ওঠার পরে ‘পণ্য’ হিসেবে এই মেয়েই খুলে দেবে তাদের উপার্জনের রাস্তা। পরনাদের মধ্যে ছোটবেলায় মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর কোনো রীতি নেই। তারচে মেয়ের বয়স সাত-আট বছর হলেই বাবা-মা তাকে পাঠিয়ে দেন কোনো দালালের কাছে। সেই দালালের কাজ হচ্ছে, সেই মেয়ে যৌনপেশায় শিখিয়ে পড়িয়ে দ্ক্ষ করে তোলা।

আবার অনেক ক্ষেত্রে মেয়েদের বিয়ে দেয়া হয় ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যেই। যদিও বিয়েটাও একরকম সওদাই। কারণ মেয়েকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়ের বাবা-মার হাতে তুলে দেন মোটা অঙ্কের টাকা। যারা যত বেশি দর হাঁকতে পারেন, তাদের ঘরেই যায় মেয়ে।

বিয়ের কয়েকদিন পর থেকেই বাড়ির বউয়ের জন্য খোজা শুরু করা হয় ‘কাস্টমার’। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় ‘দালাল’-এর কাজ করেন মেয়েটির স্বামী। প্রত্যেক রাতে নতুন নতুন খদ্দের আসে যৌনপেশায় নামা নতুন বউয়ের কাছে। নববধূর পারিশ্রমিক ওঠে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের হাতে।

বহুকাল ধরে পরনাদের মধ্যে চলে এসেছে এ রীতি। দারিদ্রপীড়িত পরনাদের সংসার চলে মূলত যৌনপেশার মাধ্যমে বাড়ির বউয়ের উপার্জনের অর্থে। মেয়েদের অভিভাবকরাও মেনে নিয়েছেন এ রীতি-প্রথা।

কী বলেন পরনা মেয়েরা? 
অসম্মানজনক এই রীতি-প্রথ নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ রয়েছে পরনা সম্প্রদায়ের মেয়েদের মধ্যে। কিন্তু কারোই প্রতিবাদের সাহস নেই। কেননা, যৌনপেশায় আসতে রাজি না হলে শ্বশুরবাড়িতে নেমে আসে অকথ্য নির্যাতন। এমনকি অনেক সময় হত্যাও করা হয়। কোনো মানবাধিকার কিংবা নারীবাদী সংগঠনকে পরনা নারীদের অধিকার রক্ষায় কখনও সরব হতে দেখা যায়নি। কোনো সরকারও তাদের দিকে বাড়িয়ে দেয়নি সাহায্যের হাত। 

কারণ হিসেবে অনেকেই বলছেন, পরনাদের মধ্যে প্রচলিত এই ভয়াবহ প্রথার কথা সম্প্রদায়ের বাইরে খুব একটা বেশি কেউ জানে না। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একটু একটু করে প্রকাশ পাচ্ছে এই আদিম প্রথার খবর। এতে পরনা নারীদের দুর্দশা মোচনে সরকার উদ্যোগী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!