• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যত ঝড় আ.লীগ-বিএনপিতে, এরশাদের নো-টেনশন


হৃদয় আজিজ ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮, ০২:৩৮ পিএম
যত ঝড় আ.লীগ-বিএনপিতে, এরশাদের নো-টেনশন

আওয়ামী লীগের যগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের সঙ্গে এরশাদ

ঢাকা: বাংলাদেশের রাজনীতিতে দাবার গুটির মতো ব্যবহার হন সাবেক স্বৈরশাসক ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জেনারেল এইচ এম এরশাদ। দীর্ঘ নয় বছর তার একদলীয় শাসনের পর ১৯৯১ সালে পতন হলে বিএনপি সরকারের আমলে তিনি জেল খেটেছেন। এরপর ১৯৯৬ সালের নির্বাচন থেকে শুরু করে গত চারটি সংসদ নির্বাচনেই তিনি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধেছেন। 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের আগেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে একমত হয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন, তবে শেষ পর্যন্ত তার স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যায়। এমনকি তিনি নিজেও এখন বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে বহল আছেন। যেহেতু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আরো প্রায় দশ মাস বাকি আছে। তাই এরশাদ আসলেই কার সঙ্গে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তা বোঝা এখনো কঠিন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

বর্তমানে এরশাদের অবস্থান এই

এদিকে দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের সংঘাতে না জড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে দলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সচেষ্ট থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

দলটি বর্তমান অবস্থায় কোনো রাজনৈতিক প্রতিরোধে যেতে চায় না। যে কারণে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসনের ৫ বছরের কারাদণ্ডের পর কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শফীর কাছে দোয়া নিতে চট্টগ্রামে যান এরশাদ

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, খালেদা জিয়ার সাজা এবং জেলে থাকা নিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান আমাদের (নেতাদের) নির্দেশনা দিয়েছেন, কোনো কথা বলা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে এ মুহূর্তে মুখ বন্ধ রাখতে বলেছেন। তিনি নিজেও এ নিয়ে কোনো কথা বলবেন না। যখন প্রয়োজন হবে, তখন তিনি নিজেই বলবেন। 

দেশের প্রধান দুই জোট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৮ দল এবং বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলের সঙ্গে কোনো জোট বাঁধবেন না বলে আগেই জানিয়েছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়ে নাম সর্বস্ব ৫৮টি দল নিয়ে একটি জোট গঠন করেছেন, যার নাম দিয়েছেন ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’। 

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিতে শেষ বলতে যেহেতু কিছু নেই, তাছাড়া এরশাদ নিজেই তার সিদ্ধান্তে কখনো অটল থাকতে পারেন না। আর নির্বাচনের এখনো দশ মাস বাঁকি রয়েছে, তাই কিছু বলা যাচ্ছে না।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে এরশাদ

ওই নেতাও বিশ্লেষকদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির কী ভূমিকা হবে, কোন দিকে যাবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ অবস্থায় বিএনপির সঙ্গে কোনো শত্রুতার সৃষ্টি হোক, তা পার্টির চেয়ারম্যান চান না।  

ইতোমধ্যে এরশাদ নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি সিলেটে মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন পার্টিপ্রধান এরশাদ। এরপর গত সপ্তাহে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-১৭ আসনে তিনটি জনসভাও করেন তিনি। 

এছাড়াও, জাতীয় পার্টির নেতারা তাদের নির্বাচনী এলাকায় সভাসমাবেশ করছেন। এরশাদও বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। খালেদার রায়ে আগে তিনি রংপুর অঞ্চল সফর করেছেন।

এরশাদের ৫৮ দলীয় জোট

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা ঘটনা ঘটবে। তাই আমরা কারো সঙ্গে বিরোধে যেতে চাই না। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ নির্বাচনকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।

তবে এরশাদ যতই পরিকল্পনা করুক না কেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাকে নিজেদের স্বার্থেই ব্যবহার করবে বলে মনে করেন বিশ্লষকরা। এক্ষেত্রে এরশাদ যদি আওয়ামী লীগকে পাশ কাটতে চান, তাহলে তার বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির কয়েকটি মামলার রায় প্রদান ঝুঁলে আছে, তা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হতে পারে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই/জেএ

Wordbridge School
Link copied!