• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে বিভাজনের আশঙ্কা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ১০, ২০১৬, ১০:২১ এএম
যুক্তরাষ্ট্রে বিভাজনের আশঙ্কা

ট্রাম্পের জয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আবারও দেখা দিয়েছে বিভাজনের আশঙ্কা। কয়েকশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে দাসপ্রথার পক্ষে এবং বিপক্ষে নিজেদের মধ্যে লড়াই করতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে বহুবারই ক্ষমতায় এসেছে রিপাবলিকান কিংবা ডেমোক্রেট দল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এমন বিভাজন কখনোই দেখা যায়নি।

বুধবার (৯ নভেম্বর) ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় ঘোষণার পরপরই শুরু হয় এ বিক্ষোভ। সংবাদ মাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস, সিএনএনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর ফলাও করে প্রকাশ করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে নিউইয়র্ক, শিকাগোসহ বেশ কয়েকটি শহরে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে অন্যান্য শহরেও। নির্বাচনের আগেই মুসলিম, অভিবাসী, হিস্প্যানিকসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ধনকুবের ট্রাম্প। এজন্য তার জেতার পর অনেকেই ক্ষুব্ধ। সে ক্ষোভ থেকেই অসংখ্য মানুষ হোয়াইটহাউসের কাছে জড়ো হয়ে ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন, 'ট্রাম্প আমাদের প্রেসিডেন্ট না, আমরা তাকে মানি না'।

ট্রাম্পের বিজয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেরিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছে অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে পরিচিত ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলের মানুষ। তারা ট্রাম্প ‘আমার প্রেসিডেন্ট নয়’ বলে স্লোগান দেয়।

ইয়েস ক্যালিফোর্নিয়া গোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ অর্থনীতির অঞ্চল ক্যালিফোর্নিয়া অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ফ্রান্সের চেয়ে শক্তিশালী। এর জনসংখ্যা পোল্যান্ডের চেয়ে বেশি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ৪৯টি অঙ্গরাজ্যের সঙ্গেই নয়, বিভিন্ন বিবেচনায় যেকোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে ক্যালিফোর্নিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মূল্যবোধ আছে যেগুলোর সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ার বিরোধ আছে। এভাবে থাকার অর্থ হলো আমরা অন্য রাজ্যগুলোর জন্য অব্যাহতভাবে আমাদের ক্ষতি করে যাব, আমাদের শিশুদের অকল্যাণ বয়ে আনব।’

ইয়েস ক্যালিফোর্নিয়া গোষ্ঠীর প্রধান লুইস ম্যারিনেলি বলেন, এখন এ অঙ্গরাজ্যের প্রচুর মানুষ তাদের কাছে চিঠি পাঠাচ্ছে। অনেকেই স্বাধীনতার জন্য গণভোট চেয়ে তাদের তৈরি দাবিনামার অনলাইন সংস্করণ দেখতে চেয়েছেন।

ট্রাম্পের জয় নিশ্চিতের পরে বুধবার সকালেই রাস্তায় নেমে আসে ক্যালিফোর্নিয়ার শিক্ষার্থীরা। তারা ট্রাম্প বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয় এবং ভাঙচুর চালায়। বিক্ষোভ হয়েছে শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া, বোস্টন, নিউইয়র্ক এবং আইওয়াতে। বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করেন এবং ভাঙচুর চালান। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ ঘটনা বিরল।

অন্যদিকে, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক-বাল্টার স্টাইনমেইয়ার বুধবার ট্রাম্পের বিজয়ে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি আরো বেশি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এবং পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে যাবে। বুধবার (৯ নভেম্বর) ট্রাম্পের বিজয়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের অবশ্যই ধারণা করতে হবে যে, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি আমাদের জন্য আরো কম অনুমেয় হয়ে উঠবে এবং আমাদের এটিও ধারণা করতে হবে যে, যুক্তরাষ্ট্র এখন একাই সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিকে বেশি ঝুঁকবে।’

স্টাইনমেইয়ার বলেন, ‘অন্য কথায় রাখঢাক না করে বললে, কোন কিছুই সহজ হবে না। অনেক বিষয়ই আরো কঠিন হয়ে যাবে।’ তবে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী সুসম্পর্কের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, তিনি মার্কিন এ সম্পর্কের ব্যাপারে হাল ছাড়বেন না।

এদিকে পৃথকভাবে জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল বলেছেন, ট্রাম্পের বিজয় আমাদের জন্য একটি সতর্ক বার্তা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School

আরও পড়ুন