• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১০, ২০১৬, ০৬:৩৪ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন

সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে কে যাবেন, বিশ্বব্যাপী কয়েক মাস ধরে এনিয়ে ছিল নানা চুলচেরা বিশ্লেষণ। নির্বাচনে ডোনাল্ডের মুসলিমবিদ্বেষ, অভিবাসী বিতাড়নসহ নানা ধরনের উত্তেজক ইস্যু ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করে বিতর্ক তৈরি করা হলেও, আমেরিকার জনগণ শেষপর্যন্ত তাদের পরবর্তী শাসক হিসাবে ট্রাম্পকেই বেছে নিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি পেলেই চলে, সেখানে ট্রাম্প পেয়েছেন ২৭৮টি ভোট; প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন পেয়েছেন ২১৮টি। সুতরাং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পই এখন যুক্তরাষ্ট্রের মহাশক্তিধর প্রেসিডেন্ট। যিনি বারাক ওবামার স্থলাভিষিক্ত হবেন। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টকে জানাই অভিনন্দন।  

ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হতে চলেছেন, বুধবার বিশ্ব গণমাধ্যমে এমন খবরের পর থেকেই নানা আলোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে নানা বিতর্ক ও বিশ্লেষণ। বিবিসি মার্কিন নির্বাচনের এই ফলাফলকে স্মরণকালের সবচে বড় রাজনৈতিক বিপর্যয় বলে অভিহিত করেছেন। বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন একজন ব্যক্তি রাজনীতিতে যার কোনো পূর্বাভিজ্ঞতা নেই। যিনি কখনো কোনো ধরনের নির্বাচনে জয়ী হয়ে  কোনো দায়িত্ব পালন করেননি, তিনিই কিনা প্রতিষ্ঠিত রীতিকে পাল্টে দিলেন। বিশ্ববাসী এ ফলাফলে হতবাক হয়েছেন। কারণ যেখানে হিলারির একচ্ছত্র আধিপত্য, এমন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যেও অবলীলায় জয় পেয়েছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প জেতার পর বিশ্বের অর্থনৈতিক ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এমন ভাবনার কথাও উঠে এসেছে নানা বিশ্লেষণে। ইতিমধ্যে ডলারের দরপতন এবং বিশ্ব পুঁজিবাজারে ব্যাপক ধস নেমেছে। নির্বাচনের আগের দিনও এক জরিপে হিলারিকে এগিয়ে রাখার খবরের প্রভাবে পড়ে বিশ্ব বাজারে। বিশ্বের অর্থনীতিতেও চাঙা ভাব পরিলক্ষিত হয়। আর ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় ডলারের বিপরীতে মেক্সিকান পেসোরও দরপতন হয়ে এ যাবতকালের মধ্যে সর্বনিু পর্যায়ে ঠেকেছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, মেক্সিকোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ছিড়ে ফেলবেন। গণমাধ্যম বলছে, ইউরোপীয় শেয়ারগুলোও ৪ শতাংশ দর হারিয়েছে। সভরেন বন্ড ও সোনার দাম বেড়েছে, সঙ্গে বেড়েছে জাপানি ইয়েনের দরও। ফলে অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিকে বিশ্বের অর্থনীতিবিদরা অশনিসঙ্কেত হিসেবেই দেখছেন। ধনী ও প্রভাবশালীদের কবল থেকে দেশকে ফিরিয়ে আনতে আমেরিকার একজন শক্তিশালী নেতা দরকার- এমন প্রত্যয়ের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র এখন ধনকুবের ট্রাম্পের হাতে। সুতরাং দেখার বিষয় অর্থনীতি চাঙাভাব সৃষ্টি এবং গোটা বিশ্বকে স্থিতিশীল করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূরদর্শী নীতি আসলে কী হয়।

একুশ শতকের বিশ্ব পরিস্থিতিতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে, ট্রাম্প বিজয়ের পর এর কি অবসান হবে? পাশাপাশি ট্রাম্পের নীতিগুলো যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করবে না, বরং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে সে ভাবনাও অমূলক নয়। আবার এটাও ঠিক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আসলে একজনই থাকেন; তাদের মুখের আদলটাই শুধু বদলায়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতির স্থিতিশীলতা বোঝাতে বলা হলেও দুনিয়াজুড়ে যে সহিংসতা ঘটে চলেছে তার কী হবে- এমন প্রশ্নকেও সামনে নিয়ে আসে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের সদিচ্ছাই পারে বিশ্ববাসীর অনিশ্চয়তা নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে- বিশেষজ্ঞদের মতো আমরাও এমনটি বিশ্বাস করি। পাশাপাশি এটিও বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। জিএসপি সহ অমীমাংসিত বিষয়গুলোর দ্রুত সমাধান হবে।  

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!