• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮, ০৩:০২ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান

ঢাকা : বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছি। এ অবস্থাতেও বাংলাদেশে এখন ব্যবসার জন্য অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগও আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।

তাই আমি আপনাদের আহ্বান জানাই, আমাদের পারস্পরিক লাভের জন্য ব্যবসা, প্রযুক্তি ও নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আপনারা বাংলাদেশে আসুন। সরকার আপনাদের পূর্ণ সহযোগিতা দেবে।

সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে স্থানীয় সময় রাতে যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের এক মধ্যাহ্নভোজে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী মার্কিন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে বেশকিছু অঞ্চল বরাদ্দও হয়েছে। তৈরি হচ্ছে বিনিয়োগের পরিবেশ। আর এসব কারণেই দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে বৈশ্বিক তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থানও সুদৃঢ় হচ্ছে। বৈশ্বিক শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থানও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিভিন্ন আকর্ষণীয় দিক তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের রয়েছে বিপুল জনশক্তি, যারা কর্মঠ, এবং খুব সহজেই তাদের বৈচিত্র্যময় কাজের জন্য প্রশিক্ষিত করে তোলা যায়। তাদের মজুরিও বিশ্বের যেকোনো দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক। বাংলাদেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার খরচ কম, বিপুল পরিমাণ পণ্যের জন্য রয়েছে কোটামুক্ত বাজার, পানি ও বিদ্যুতের খরচও কম।

তিনি আরও বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ ও বৈশ্বিক আউটসোর্সিংয়ের অন্যতম হাবে পরিণত হয়েছে। এছাড়া আমরা ভারত ও চীনসহ দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বাড়াতেও উদ্যোগ নিয়েছি। দুই অঙ্কের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য অবকাঠামো, যোগাযোগ ও আধুনিক প্রযুক্তির বৈচিত্র্যময় সব খাতের বিস্তৃতি ঘটাতে আমরা প্রস্তুত। আর এসব খাতকে সুবিধা দিতে ব্যাংকিং ও ফিন্যান্স, পর্যটন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো সেবা খাতগুলোরও সম্প্রসারণ করে যাচ্ছি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে একক বৃহত্তম অংশীদার। ২০১৬-১৭ সালে সাড়ে সাতশ কোটি ডলারের বাণিজ্য ছিল দুই দেশের মধ্য। একইসঙ্গে তিনশ কোটি ডলারের দ্বিতীয় বিনিয়োগ সহযোগীও যুক্তরাষ্ট্র।

তার সরকারের আমলে বেশকিছু সূচক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের সাড়ে ৯ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগামী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে যা দাঁড়াবে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশে।

তিনি বলেন, ১২ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশে। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৩ বিলিয়ন ডলার। ২০০৯ সালে এর পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, ২০০৯ সালে যেখানে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ, আমরা তা ২১ দশমিক ৮ শতাংশে কমিয়ে এনেছি।

বাংলাদেশ এখন ৩০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ, যা বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম। শিগগিরই বাংলাদেশ এই তালিকায় প্রথম অবস্থানে চলে আসবে বলেও জানান তিনি। দেশের ওষুধ শিল্পের বিকাশ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১২৫টি দেশে রফতানি করেও দেশের ৯৮ শতাংশ চাহিদা মেটাচ্ছে দেশের ওষুধ শিল্প।

এছাড়াও, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, চাল উৎপাদনে চতুর্থ ও অভ্যন্তরীণ মৎস্য সম্পদ উৎপাদনে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ বলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে, একই দিন সকালে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে জাতিসংঘ সদর দফতরে বৈশ্বিক মাদক সমস্যা এবং বিকেলে শিক্ষা বিষয়ক দু’টি আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র্রের প্রেসিডেন্টের নৈশভোজে যোগ দেন তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!