• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধ করে জয় ছিনিয়ে এনেছি : খালেদা


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ৫, ২০১৭, ১০:৫২ এএম
যুদ্ধ করে জয় ছিনিয়ে এনেছি : খালেদা

ঢাকা : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ‘যুদ্ধ’ করে বিজয়ী হয়েছেন দাবি করে আগামীতে তার মতো নির্বাচনী যুদ্ধের জন্য দলের নেতাদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের মতো সব নির্বাচনে যুদ্ধ করে আমাদের জয় ছিনিয়ে আনতে হবে। যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনার থাকতো তাহলে আমাদের যুদ্ধ করতে হতো না।

মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বেগম খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে এলে চেয়ারপারসন এসব কথা বলেন।

এর আগে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৯টায় এই অনুষ্ঠানে মনিরুল হক সাক্কু ও তার স্ত্রী আফরোজা ইয়াসমীন টিকলী বিএনপি চেয়ারপারসনের হাতে ফুলের তোড়া দেন। এই বিজয়ের জন্য কুমিল্লার নাগরিকসহ ভোটার ও দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান সাক্কু।

বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ হলো চোরের দল। অতীতেও তারা চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে। তারা নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দিয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় তারা প্রকাশ্য সিল মেরেছে। তারপরও জনগণের প্রতিরোধে ও নীরব ভোটবিপ্লবে ধানের শীষের বিজয় হয়েছে।

এই নির্বাচন তার প্রথম ‘পরীক্ষা’ ছিল মন্তব্য করে বিএনপি প্রধান বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, অন্তত পক্ষে তিনি যে নিরপেক্ষ একজন ব্যক্তি একটা প্রতিষ্ঠানে বসেছেন তিনি সেটা দেখাবেন, প্রমাণ করবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, তিনি নিরপেক্ষ নন। তিনি আওয়ামী লীগের হয়েই কাজ করেছেন, সেখানে কোনো নিরপেক্ষতার প্রমাণ রাখেন নাই। কাজেই এই নির্বাচন কমিশনার আর হাসিনা- এরা থাকলে দেশে কখনো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।’

গত ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ধানের শীষের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়র পদে সাক্কু ১১ হাজার ভোটের ব্যবধানে সীমাকে হারিয়েছেন। ২০১২ সালে সীমার বাবা আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আফজাল খানকে হারিয়ে সাক্কু প্রথম মেয়র হন। সেই নির্বাচনে আফজালের ভোটের ব্যবধান ছিল ২৯ হাজার।

সুষ্ঠু ভোট হলে এবার সীমার সঙ্গে সাক্কুর ভোটের ব্যবধান ৫০ হাজার হত বলে দাবি করেন খালেদা জিয়া। কাজেই সেখানে সাক্কু যুদ্ধ করে জিতেছে। যেখানে তারা (ক্ষমতাসীন) দেখছে যে, একদমই আর কিছু করার উপায় নেই, সেখানে ব্যবধানটা কমিয়ে এটা করেছে।

বিএনপি নির্বাচনে এলে জনগণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে ভয়ে আওয়ামী লীগ নানা মামলা দিয়ে নেতাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তিনি ক্ষমতা থেকে এক চুলও সরতে চান না। ক্ষমতায় না থাকলে তিনি ক্ষমতার যে অস্ত্রগুলো আছে- প্রশাসনকে, পুলিশ বাহিনীকে তার গুন্ডাবাহিনী ছাত্রলীগ-যুবলীগ এসবকে ব্যবহার করতে পারবে না। সেজন্য সে সেখান থেকে সরতে চান না। তিনি চান ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করবেন। কিন্তু ক্ষমতায় থেকে নির্বাচনে কী হতে পারে, দেশের মানুষের সেটার ধারণা হয়েছে ’

বর্তমান সরকারের কোনো ‘বৈধতা নেই’ দাবি করে আগামীতে দেশে ‘গণতন্ত্র আনতে’ দলকে তৈরি করার কথা বলেন খালেদা জিয়া। দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এবার নবীনদের নিয়ে এসেছি। জেলা কমিটি আপনারা করবেন, সেখানে নবীনদের মূল্যায়ন করবেন, যাতে জেলা কমিটিটা শক্তিশালী হবে।

সাক্কুর স্ত্রীর বক্তব্যের প্রশংসা করে তাকেসহ নবীনদের নিয়ে কুমিল্লা মহানগর ও জেলা কমিটি করতে নেতাদের পরামর্শ দেন তিনি। নির্বাচনী ভোট কেন্দ্রে এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার তাগাদা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, লোকজনকে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে ওদের সাথে পারা যাবে না। আমাদের এগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।

একই সঙ্গে এটাও খেয়াল রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ কী ষড়যন্ত্র করছে, কৌশল করতেছে, সেগুলোতে আমাদের নজর রাখতে হবে, খবর রাখতে হবে। যাতে তার কাউন্টার আমরা তাদের দিতে পারি, তার চিন্তা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। যারা দলের বিরুদ্ধে কাজ করবে ও বেঈমানি করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি প্রধান।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, কুমিল্লা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াসীন বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া দলের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আনোয়ারুল আজীম, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মোস্তাক মিয়া, আবদুল আউয়াল খান, খন্দকার মারুফ হোসেন, গফুর ভুঁইয়া, মোবাশ্বের আলম ভুঁইয়া, শাহিদুর রহমান তামান্না, কাইয়ুম হক রিংকুসহ কুমিল্লার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!