যুবলীগ নেতার হাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খুন

ঠাকুরগাঁও: অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজিব দত্তের হাতে খুন হয়েছেন জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ সম্পাদক আব্দুল মান্নান। হত্যাকাণ্ডের সময় ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জুম্মন খান।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ঠাকুরগাঁও শহরের মুন্সিরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি (তদন্ত) এটিএম শিফায়াতুল মাজদার সিফাত।

নিহত আব্দুল মান্নান ঠাকুরগাঁও রোডস্থ ইসলামনগর এলাকার মৃত তসিরউদ্দিনের ছেলে। আহত জুম্মন খান শহরের আশ্রমপাড়া এলাকার মুকুলের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’দিন আগে সজিব দত্তের সঙ্গে আব্দুল মান্নানের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সেটি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত আব্দুল মান্নানকে হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

পূর্বের ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের মুন্সিরহাট এলাকায় আব্দুল মান্নানের ওপর সজিব দত্ত ও আরেক যুবলীগ নেতা শান্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুম্মন খান আব্দুল মান্নাকে বাচাঁনোর চেষ্টা করলে সজিব ও শান্ত তাকেও ছুরিকাঘাত করে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায়।

পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আনার পথে আব্দুল মান্নান মারা যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা জুম্মন খানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঠাকুরগাঁও সদর থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাকিল চৌধুরী জানান, নিহত আব্দুল মান্নান ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ছিল। এছাড়া এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জুম্মন খান গুরুতর আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে সদর থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা কামাল জানান, সজিব দত্ত ঠাকুরগাঁও সদর থানা যুবলীগের যু্গ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুব্রত কুমার বর্মন বলেন, শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণে হাসপাতালে আনার আগেই আব্দুল মান্নানের মৃত্যু হয়েছে। আহত জুম্মন খানকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) এটিএম শিফায়াতুল মাজদার সিফাত জানান, পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

পরে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ও পুলিশ সুপার ফারহাত আহম্মেদ হাসপাতালে নিহত আব্দুল মান্নান ও আহত জুম্মনকে দেখতে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আসেন। তারা জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন।

এ ঘটনায় সেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালসহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন