• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
নায়ক ফারুকের জন্মদিন আজ

যে কারণে ঘটা করে জন্মদিন পালন করে না মিয়া ভাই


বাবুল হৃদয় আগস্ট ১৮, ২০১৮, ০১:১৩ পিএম
যে কারণে ঘটা করে জন্মদিন পালন করে না  মিয়া ভাই

নায়ক ফারুক

ঢাকা: বাংলা সিনেমার জীবন্ত কিংবদন্তী মিয়া ভাই খ্যাত নায়ক ফারুকের আজ জন্মদিন।  প্রিয় এই নায়কের জন্মদিনে সোনালীনিউজ পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছ ও ভালোবাসা।

কিংবদন্তি চলচ্চিত্র এই অভিনেতা ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পরো নাম আকবর হোসেন পাঠান দুলু । তার বাবা আজগার হোসেন পাঠান, মা আফজালুন্নেসা।

মিয়া ভাই ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রয়াণের পর আর কখনোই নিজের জন্মদিন বিশেষভাবে উদযাপন করেননি এই নায়ক। এমনকি ছোটবেলা থেকেই তার জন্মদিন বিশেষভাবে উদযাপিত হতো না। কারণ মাত্র আট বছর বয়সে ফারুক তার মা আফজালুন্নেসাকে হারিয়েছেন। মাকে হারানোর পর থেকেই যেন ফারুক জীবন সংগ্রামে পড়ে যান। তাই জন্মদিন নিয়ে কখনোই তার বিশেষ কোনো আগ্রহ ছিল না।

চিত্রনায়ক ফারুকের শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায় । তিনি স্কুল জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৬ সালে তিনি ছয় দফা আন্দোলনে যোগ দেন এবং সেসময়ে তার নামে প্রায় ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন।

কর্মজীবনে ফারুক ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে আগমন করেন। তার বিপরীতে নায়িকা হিসেবে কবরী অভিনয় করেন। এর পরে তিনি ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ দুটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন।

১৯৭৫ সালে গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত সুজন সখী ও লাঠিয়াল দুটি ব্যবসাসফল ও আলোচিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং সে বছর লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এরপরে ১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত তিনটি ছায়াছবি ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’ ও ‘নয়নমনি’।

চলচ্চিত্র তিনটি বিভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। পরের বছর শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত কালজয়ী উপন্যাস সারেং বৌ অবলম্বনে নির্মিত ‘সারেং বৌ’ ও আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র দুটি নারীকেন্দ্রিক হলেও তার অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। 

১৯৭৯ সালে তার অভিনীত ‘নাগরদোলা’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘কথা দিলাম’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব’, ‘ছোট মা’, ‘এতিম’, ‘ঘরজামাই’ চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসাসফল হয়। ১৯৮০ সালে ‘সখী তুমি কার’ ছায়াছবিতে শাবানার বিপরীতে শহুরে ধনী যুবকের চরিত্রে অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে মিয়া ভাই চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে মিয়া ভাই হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে রূপালী পর্দার গুনী এ নায়ক ফারজানা পাঠানকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। কন্যা ফারিহা তাবাসসুম পাঠান ও পুত্র রওশন হোসেন।

এদিকে কিংবদন্তি নায়ক ফারুক অভিনীত প্রায় নব্বই ভাগ চলচ্চিত্র ব্যবসা সফল হয়েছে। তার দরুন কিছুদিন আগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬-এর পুরস্কারে (যৌথ ভাবে) আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় নায়ক ফারুক ও নায়িকা ববিতাকে।

চলচ্চিত্রের বাইরে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। গাজীপুরে অবস্থিত নিজ শিল্প প্রতিষ্ঠান ফারুক নিটিং ডাইং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন তিনি। মাঝে তিনি দীর্ঘ সময় কিডনি জনিত রোগে ভোগছিলেন। পরে সিঙ্গাপুরে থেকে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। বর্তমানে তিনি খুব সুস্থ্য জীবন যাপন করছেন।

সোনালীনিউজ/বিএইচ

Wordbridge School
Link copied!