• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যে ৩ মাধ্যমে বিএনপির জমায়েত ঠেকাতে চায় আ.লীগ


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৮, ০৩:২৯ পিএম
যে ৩ মাধ্যমে বিএনপির জমায়েত ঠেকাতে চায় আ.লীগ

২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনের রাস্তায় পুলিশ এমন উপস্থিতি দেখা যেতো

ঢাকা: ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলায় রায়কে সামনে রেখে রাজধানীতে বড় ধরণের জমায়েতের কথা ভাবছে দলটি। আর সেই জমায়েত ঠেকাতে প্রস্তুতি গ্রহণও করেছে সরকার। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এমনটাই জানা গেছে।

তবে, সেই জমায়েতকে কেন্দ্র করে কোনো সহিংসতা সৃষ্টি হলে সরকারেরই লাভ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এতে পুনরায় দলটিকে ‘সহিংস শক্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে দমন করা যাবে। গত মঙ্গলবার প্রিজন ভ্যানে হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেয়া ও পুলিশকে মারধর করার ঘটনা সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়ক হয়েছে বলে মনে করছে সরকার ও আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো।

বিএনপির জমায়েতকে ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি, গণপরিবহনে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি এবং মামলা-গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখানোর পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি রয়েছে।

আদালতে খালেদা জিয়া

৮ ফেব্রুয়ারি রাজপথে জমায়েত রেখে ওই দিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায় শুনতে আদালতে যাবেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ লক্ষ্যে কয়েক দিন ধরে সাংগঠনিক প্রস্তুতি চলছে। জেলা পর্যায়েও ওই দিন জমায়েত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

এরই মধ্যে ঢাকায় বড় ধরণের জমায়েত করতে ৩ ফেব্রুয়ারি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভা ডেকেছে বিএনপি। এতে ৭০০ নেতাকে ডাকা হয়েছে। যেখানে খালেদা জিয়া গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেবেন বলে জানিয়েছেন রুহুল কবির রিজভী।

এদিকে, বিএনপির এই জমায়েত ঠেকাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা বিএনপি যেন কোনো ধরণের সহিংসতায় যেতে না পারে এই অযুহাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মাঠে নামাবে। ঢাকার প্রতিটি এলাকা ও সারা দেশেই দলীয় নেতাকর্মীকে শক্ত অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। তাছাড়া গণপরিবহনের কৃত্রিম সংকটও তৈরি করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসা ঠেকাবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছেন, বিএনপি যেভাবে পুলিশের ওপর জঙ্গিদের মতো হামলা করেছে, তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আছে। তারা হয়তো খালেদার রায়কে কেন্দ্র করে জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে চাইবে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক থাকবে। কোনো সহিংসতা করতে চাইলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। আওয়ামী লীগ ও ১৪-দলীয় জোটও বিএনপির কর্মকাণ্ডে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে।

অতীতে দেখা গেছে, ঢাকায় বিএনপির কর্মসূচিতে বড় জমায়েত ঠেকাতে সরকার-সমর্থক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ৮ ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করেও এমন পরিকল্পনা আছে। ঢাকা পরিবহন সমিতি ৬ ফেব্রুয়ারি বৈঠক ডেকেছে। তাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা হচ্ছে রাজধানীর প্রতিটি বাস টার্মিনালে মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো অবস্থান নেবে।

২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত রাজধানীতে পুলিশের এমন উপস্থিতি নিয়মিত ছিল 

পরিবহননেতারা বলছেন, জ্বালাও-পোড়াও যাতে না হয়, সেই সতর্কতা থেকে তাঁরা এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন। একাধিক পরিবহন নেতা জানিয়েছেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য বিএনপির জমায়েত ঠেকানো।

এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেছেন, অতীতে বিএনপি-জামায়াত মাঠে নেমে জ্বালাও-পোড়াও করে পরিবহনের শ্রমিক পর্যন্ত হত্যা করেছে। এ জন্য সতর্কতা অবলম্বন করবেন, টার্মিনাল পাহারা দেবেন তাঁরা। ৬ ফেব্রুয়ারি বৈঠক করে করণীয় চূড়ান্ত করা হবে বলে তিনি জানান।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি অতীতের মতো জ্বালাও-পোড়াও করলে তা ঠেকানোর ক্ষমতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আছে। তবে ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের দিন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!