• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যেসব পণ্যের দাম কমছে-বাড়ছে


বিশেষ প্রতিনিধি মে ৩১, ২০১৭, ০১:২১ পিএম
যেসব পণ্যের দাম কমছে-বাড়ছে

ঢাকা: চলতি অর্থবছর যেসব পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক রয়েছে তা বেড়ে ২৫ শতাংশ হচ্ছে। আর যেসব পণ্য আমদানিতে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক দিতে হয়, সে হার বেড়ে ৫০ শতাংশ হচ্ছে।

ফলে দাম বাড়তে পারে এমন পণ্যের মধ্যে রয়েছে সব ধরনের মাছ, শুঁটকি, গুঁড়া দুধ (আড়াই কেজি পর্যন্ত), আঙুর, আপেল, নাশপাতি, ব্ল্যাক চা (তিন কেজি পর্যন্ত), জিরা, এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, চকোলেট, শিশুদের খাদ্যপণ্য, জ্যাম, জেলি, ফলের রস, সস, আইসক্রিম, সাবান, ডিটারজেন্ট, দিয়াশলাই, মশার কয়েল, অ্যারোসল, চামড়া, প্লাস্টিক বা কাপড়ের তৈরি সরঞ্জামাদি, কার্পেট, রঙিন টিভি ও টিভি কার্ডসহ পার্টস, সিম কার্ড ও সব ধরনের টুথব্রাশ।

এ ছাড়া আমদানি পর্যায়ে ৪৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক করায়, মিষ্টি বিস্কুট, বিভিন্ন ধরনের চকোলেট ও চিপস, প্রসাধনসামগ্রী, প্লাস্টিক ও চামড়াজাত জিনিসপত্রের দামও বাড়তে পারে।

একেবারেই শুল্ক উঠে যাওয়ায় ও কিছু পণ্যে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক কমে ২৫ এবং ৬০ শতাংশের জায়গায় ৫০ শতাংশ সম্পূরক আরোপ হওয়ায় এসব পণ্যের আমদানির খরচ কমবে, দামও কমার কথা। এসব পণ্য হলো সব ধরনের প্লাইউড সামগ্রী, ছাপানো পণ্যসামগ্রী, স্মার্ট কার্ড, পকেট সাইজ রেডিও, গৃহস্থালি ও টয়লেট সামগ্রী, মসৃণ হীরা।

তবে নতুন করে সরবরাহ পর্যায়ে ১০ শতাংশ ও ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ হওয়ায় যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ফলের রস ও ফ্রুট ড্রিংক, ফাস্টফুড, পারফিউম, পাউডার, চুলের জেল, হোটেল ও রেস্টুরেন্টে মদ বিক্রি বা ফ্লোর শো ও বিদেশি শিল্পী এনে বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন, মিনারেল ওয়াটার (তিন কেজি পর্যন্ত), পেইন্টস, মোবাইল ফোনের সিম বা রিম কার্ড।

ভর্তুকিতে বরাদ্দ কমছে : বাজেটে ভর্তুকি বাবদ ২৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ২৮ হাজার কোটি টাকা।

আগামী বাজেটে চলতি বাজেটের তুলনায় ভর্তুকিতে বরাদ্দ কমছে ৫০০ কোটি টাকা। এর ফলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

ভ্যাট থাকছে না অনেক খাতে : বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও কৃষিজাত পণ্য, চিকিৎসাসেবা, জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ বেশ কিছু পণ্য ও সেবা খাতকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। এসব খাত ভ্যাটের আওতার বাইরে থাকায় জনগণ কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে।

এর মধ্যে চাল, চিনি, ভোজ্যতেলসহ মৌলিক খাদ্যপণ্য আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, গণপরিবহন, চিকিৎসা ও শিক্ষা, মৎস্যসহ বিভিন্ন কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, কোনো সরকারি সংস্থা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের দান করা গণস্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত যে কোনো ধরনের উপকরণ, প্রতিবন্ধীদের শিক্ষায় ব্যবহৃত যে কোনো উপকরণ, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর, ভোজ্যতেল, হার্টের রোগীর রিং, দেশি সফটওয়্যার, ডায়ালিসিসের কৃত্রিম কিডনি ইত্যাদি। এর ফলে এসব পণ্যের দাম কমবে।

সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বাড়ছে: সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ ও উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দও বাড়ছে। মাসিক ভাতার পরিমাণ একশ’ থেকে দুইশ’ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে।

সেই সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের বছরে দুটি উৎসব ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসছে বাজেটে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে।

যে সব খাত ও প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ছে: বাজেটে এডিপির আকার ১ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৫১ ভাগ বেশি। পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকছে পরিবহন খাতে।

সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া খাতগুলোর মধ্যে পরিবহন খাতে ৪১ হাজার ৫৩ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ২৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ ও বিদ্যুৎ খাতে ১৮ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা (১২.৩০%)। এ ছাড়া শিক্ষা ও ধর্ম, ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ ও কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়ছে। নতুন অর্থবছরে এডিপিতে সব মিলিয়ে প্রকল্প সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৩১১টি।

এমনতর নানা চ্যালেঞ্জ ও স্বপ্ন নিয়েই বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট পেশ করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এটি বাংলাদেশের ৪৬তম বাজেট এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ১৮তম।

একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের চতুর্থ এবং অর্থমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ১১তম বাজেটও বটে। একাধারে নয় বার বাজেট দিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে যাচ্ছেন। গত কয়েকবারের মতো এবারও ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থাৎ পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী।

সম্প্রসারণশীল অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিশাল বাজেটের আকার ধরা হয়েছে চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। বাজেটের শিরোনাম ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের’।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/আকন

Wordbridge School
Link copied!