• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যৌতুকের জন্য মারাত্মক জখমে যাবজ্জীবন


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ৩০, ২০১৭, ০৮:৩৭ পিএম
যৌতুকের জন্য মারাত্মক জখমে যাবজ্জীবন

ঢাকা: বিদ্যমান আইনে যৌতুক দাবির ক্ষেত্রে ‘বর’ অথবা ‘কনে’ যে কোনো পক্ষকে অভিযুক্ত করার সুযোগ আছে। এখন শুধু বরপক্ষকে যৌতুক দাবিকারী হিসেবে উল্লেখ করে প্রস্তাবিত আইনের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। অর্থাৎ এ আইনে শুধু বরপক্ষকেই আসামি করা যাবে।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।

নতুন ‘যৌতুক নিরোধ আইন-২০১৭’-তে যৌতুকের প্ররোচনায় কোনো নারীর আত্মহত্যা করার প্রমাণ পাওয়া গেলে আসামিকে ১৪ বছরের জেল খাটতে হবে। এছাড়া যৌতুকের কারণে কোনো নারীকে মারাত্মক জখম করলে যাবজ্জীবন সাজার বিধানসহ উভয় ক্ষেত্রে জরিমানার বিধানও যুক্ত করা হয়েছে। বিদ্যমান ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনে যৌতুক দাবি ও লেনদেনের শাস্তি নির্দিষ্ট করা থাকলেও যৌতুক চেয়ে নির্যাতনের শাস্তির বিষয়ে কিছু বলা ছিল না।

সংশোধিত আইনে যৌতুকের সংজ্ঞা বদলে বর বা বরের বাবা-মা বা প্রত্যক্ষভাবে বিয়েতে জড়িত বরপক্ষের অন্য কোনো ব্যক্তির কোনো কিছু দাবি করাকেও বোঝানো হয়েছে। যৌতুক চাওয়ার ক্ষেত্রে শুধু বরপক্ষকে উল্লেখ করার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, বরপক্ষকেই আসামিভুক্ত করা হয়েছে, কারণ বরপক্ষই যৌতুক নেয়। কনেপক্ষ যৌতুক নেয় এমন উদাহরণ নেই।

মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের সামনে প্রস্তাবিত আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে জানান, ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন পরে তিন দফা সংশোধন করা হয়েছিল। এবার সব মিলিয়ে এ নতুন আইন হচ্ছে, যাতে যৌতুকের সংজ্ঞাও বদলাচ্ছে। কোনো এক পক্ষের (বর বা কনে) বাবা-মা বা ব্যক্তি অন্য পক্ষের কাছে কোনো কিছু দাবি করলে এতদিন তা যৌতুক হিসেবে গণ্য হতো।

যৌতুকের জন্য আত্মহত্যায় প্ররোচনা বা অঙ্গহানি করলে প্রস্তাবিত আইনে ‘কঠোর শাস্তির বিধান’ যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আত্মহত্যার প্ররোচনার জন্য ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তবে জরিমানার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। এছাড়া মারাত্মক জখম করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, সেইসঙ্গে অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ আইনের খসড়া করার সময় যৌতুকের জন্য আত্মহত্যার প্ররোচনার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রাখার সুপারিশ করলেও শেষ সময়ে তা কমিয়ে এনে মন্ত্রিসভায় তোলা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, যৌতুকের জন্য সাধারণ জখম করলে এক থেকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে খসড়ায়। ভিকটিমের ক্ষতি বিবেচনায় অর্থদণ্ডসহ আমৃত্যু ভরণপোষণ দেয়ার রায়ও আদালত দিতে পারবেন।

যৌতুকের লেনদেন বা সহযোগিতার জন্য এক থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান থাকছে নতুন আইনে। আগের আইনে এ অপরাধে পাঁচ বছর কারাদণ্ডের কথা বলা থাকলেও জরিমানার পরিমাণ নির্দিষ্ট করা ছিল না।

যৌতুক নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ বা মামলা করলে তাও নতুন আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এজন্য এক বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া যাবে বলে শফিউল আলম জানান।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!