• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যৌনপল্লিকে বিদায়, আইনজীবী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এরা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ৩, ২০১৭, ০২:২৬ পিএম
যৌনপল্লিকে বিদায়, আইনজীবী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এরা

ঢাকা : মাত্র আট বছর বয়সেই কলকাতার যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেয়া হয় শবনম শিসোদিয়াকে। যৌনপল্লির সরদারনীর কাছে তুলে দিয়ে তার সামনেই হাত ভরে টাকা নিয়ে যান নিজেরই বাবা! এরপর থেকেই অন্য জগৎ। পুরুষের আনন্দ দেয়াই ছিল তার একমাত্র কাজ। না বললেই কপালে ঝুটতো মারধর, বন্ধ হয়ে যেত খাবার। কোথায় যেন হারিয়ে গেল খেলার সাথিরা।

তার থেকে মাত্র এক বছরের বড় আশা পটাবি ও সঙ্গীতা মণ্ডলেরও ঠিকানা হয় একই স্থানে। লোকের বাড়ি কাজে ঢুকে যৌন নির্যাতনের শিকার হন সঙ্গীতা। পরে বিক্রি হয়ে যান অন্ধকার এ পল্লিতে।

তাদের মতোই হতভাগী ১৬ বছরের কল্যাণী চক্রবর্তী। বিশোরী বয়সেই জোর করে বিয়ে দিয়েছিলেন অভিভাবকরা। ভাগ্যে যা হওয়ার ছিল তাহই হলো, দিনের পর দিন স্বামী নিজের বন্ধুদের সঙ্গে তাকে সহবাসে বাধ্য করছিলেন। এ যেন ঘরের মধ্যেই দেহব্যবসা।

 ওরা ১৯ জন। তীব্র লড়াই করে ঘুরে দাড়াচ্ছেন। নিজেদের ও তাদের মতো আরও অনেক মেয়ের জন্য ছিনিয়ে আনতে চাইছেন কাঙ্ক্ষিত অধিকার, পাশাপশি মুক্তি। যারা তাদের মতো অসংখ্য মেয়েকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে, তাদের আর রক্ষা নেই। পাষণ্ডদের শাস্তি দিতে সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে যুদ্ধে নামতে চলেছেন এই মেয়েরা।

যৌন অত্যাচার থেকে উদ্ধার হওয়ার পরে এরা ঠাঁই পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন হোমে। সেখানেই শুরু নতুন জীবন। দুই চোখে শুধু স্বপ্ন। দাঁতে দাঁত চেপে পড়াশোনা করে ভালো নম্বর পেয়ে পাস করেছেন উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক। পরে এক সর্বভারতীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ‘ফ্রি আ গার্ল মুভমেন্ট’-এর মাধ্যমে সামিল হয়েছেন আঘাতকারীদের পাল্টা আঘাত দেয়ার অভিযানে। 

এই ১৯ জনই এখন আইনজীবী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কলকাতার হোম থেকে রয়েছেন আশা, শবনম, কল্যাণী আর সঙ্গীতা। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। যাতে নিজেদের ও তাদের মতো অন্য নির্যাতিতাদের হয়ে মামলা লড়ে ন্যায়বিচার ছিনিয়ে আনতে পারেন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যাসাগর, বর্ধমান ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রাথমিক কথাও হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ এসও

Wordbridge School
Link copied!