‘রগ কর্তনকারী’ কে এই ছাত্রলীগ নেত্রী?

ঝিনাইদহ: সরকারি চাকরিতে বিদ্যামান কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন ও এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়ার অভিযোগে বহিষ্কৃত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশা উগ্র মেজাজের মেয়ে।

এশার বাড়ি ঝিনাইদহে। তিনি জেলা শহরের আরাপপুরের মো. ইসমাইল হোসেন বাদশার মেয়ে। বাদশা ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)।

ইশরাত মাহফুজা নামে ঢাবির এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এশার যাপিত জীবনের কিছু ভিডিও চিত্র ও ছবি আপলোড করেছেন, যেখানে দেখা যায় এশার জন্মদিনে সুফিয়া কামাল হলে বিশেষ আয়োজন করা হয়। সেই সাথে তার পোশাক ও আচার আচারণে ‘নেতা-নেতা’ ভাব।

এশার পরিবারের ঘণিষ্ঠ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এশা ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি ও ২০১২ সালে ঝিনাইদহ সরকারি নুরুন্নাহার মহিলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ নিয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।

বিতর্কিত এই ছাত্রলীগ নেত্রীর বাবা ইসমাইল হোসেন বাদশা বলেন, আমার মেয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সব মিথ্যা, ভুয়া। এটা টোটালি একটা ষড়যন্ত্র।

ভিসির বাসভবনে যারা হামলা করে মিথ্যা রটিয়েছে এটাও এমন মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে তার মেয়ের বিরুদ্ধে বলে দাবি করেন এশার বাবা।

এদিকে এক শিক্ষার্থীর পায়ের রগ কেটে দেয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেত্রী এশাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিষয় নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী।

এর আগে তিনি এশাকে হল থেকে বহিষ্কারের আদেশ দেন। একইসাথে তাকে সুফিয়া কামাল হলের সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সুফিয়া কামাল হলের সাধারণ ছাত্রীরা জানান, মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী মোর্শেদা আক্তারকে নিজের কক্ষে নিয়ে মারধর করেন ইফফাত জাহান। একপর্যায়ে মোর্শেদার পায়ের রগ কেটে দেন। খবরেটি হলে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এবং হলে মূলফটকে এসে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এবং ইফফাত জাহানকে বহিষ্কারের দাবিতে তোলা হয়।

মোর্শেদার কাটা পায়ের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে। দিবাগত রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে হাজারো শিক্ষার্থী কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে জড়ো হন। কোটা সংস্কারের পক্ষের এই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এবং ইফফাত জাহানকে বহিষ্কারের দাবি তোলা হয়।

ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা এশাকে তার রুম থেকে বের করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। এবং তার সব অন্যায় আচারণের কথা উচ্চস্বরে বলতে থাকে।  

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই