ঢাকা : পবিত্র রমজান মাস চলছে। আর এই মাস শেষ হলেই বাঙালি মুসলমানের সর্ববৃহৎ উৎসব ‘ঈদ’। এদিন বাঙালিরা নিজেকে সাজিয়ে তুলতে নানা রকম প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। আর তাই রমজান মাসে ঈদের ঠিক ২-৩ দিন আগে থেকে চুল ও ত্বকের যত্ন নেয়ার জন্য তাড়াহুড়ো লেগে পরে।
কিন্তু সেটাতে কোনো লাভই হয় না। চুল আর ত্বকের যত্ন নেয়া খুবই ধৈর্য আর সময়ের বিষয়। তাই ঈদের অন্তত ২০-২৫ দিন আগে থেকেই যত্ন নেয়া শুরু করুন। ত্বক, চুলের অন্যান্য যত্ন এখন থেকে প্রতিদিন একটু একটু করে নিলে ঈদের আগে আপনার ত্বক ও চুল প্রাণহীন দেখাবে না।
আর এই রমজানে কীভাবে ত্বক ও চুলের যত্ন নেবেন সে বিষয়ে জানাতেই রইলো কিছু টিপস-
ত্বকের যত্নে
সারাদিন রোজা রেখে ত্বক কিছুটা প্রাণহীন হয়ে পড়ে। এ সময় যত্ন নেয়ার সময়টা তাই পাল্টাতে হয়। যেহেতু পানির অভাবে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়। তাই ইফতারের পর থেকে শুরু করতে পারেন ত্বকের যত্ন।
১. পানির অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই ইফতারের পর বা নামাজের পর ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা লোশন ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে পারেন। মুখে লোশন লাগিয়ে কমপক্ষে তিন ঘণ্টা থাকুন। চেহারায় ক্লান্তির ছাপ পড়বে না।
২. এ সময় সব রকমের টোনার জাতীয় প্রসাধন এড়িয়ে চলুন। মেকআপ কম ব্যবহার করুন।
৩. অনেক সময় চোখের নিচে কালো হয়ে থাকে ক্লান্তির কারণে। তাই ঘুম ঠিক সময়মতো দরকার। আলু, টমেটো ও শসার রস লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে কালো দাগ দূর হবে। ঘুমানোর আগে ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ত্বকের সাথে যেসব ফেসপ্যাক সুট করে সেগুলো ব্যবহার করুন।
৪. এ সময় যেহেতু গরম বেশি থাকে। রোদের তাপে মুখে কালো দাগ হতে পারে। সেসব থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে পারেন লেবুর ফেসপ্যাক। লেবু, মধু আর মুলতানিমাটি একসাথে মিশিয়ে মুখে ৩০ মিনিট লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। গোলাপ জল আর শশা দিয়ে তৈরি ফেস প্যাক নিয়মিত ব্যবহার করুন। এটি যেকোনো ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
৫. ঠোঁটের আলাদাভাবে যত্ন নিন। কারণ এ সময় ঠোঁট ফেটে যায়। রাতে ঘুমাবার আগে ঠোঁটে বিটরুট আর দুধ একসাথে মিশিয়ে ঠোঁটে ম্যাসেজ করুন। এছাড়া ঠোঁটের যত্নে নারিকেল তেল ম্যাসাজ করতে পারেন।
৬. গরমে বডি-লোশন ব্যবহার করতে না চাইলে নিয়মিত ত্বকের উপযোগী ভালো কোন সাবান ব্যবহার করুন।
৭. বাড়িতে এ সময় বিভিন্ন ধরনের ফল থাকে। রাতে কলা, পাকা পেঁপে একসঙ্গে মিশিয়ে নিন সাথে শসার রস নিন এবং মুখে লাগিয়ে ২০ মিন রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক উজ্জ্বল হবে।
৮. রোজায় ঠোঁটে কোনো লিপস্টিক বা প্রসাধনী না লাগানোই ভালো। এ সময় ভাজাপোড়া কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। ইফতারির একটি ভালো খাবার হলো সরবত। তাজা ফল, টক-দই বা দুধ মিশিয়ে শরবত তৈরি করা যেতে পারে। এতে ত্বক শক্তি ফিরে পাবে।
চুলের যত্নে
সারা দিন পানি পান করা হয় না। এ কারণে চুলও রুক্ষ হয়ে যায়। অনেকের চুল পড়তে শুরু করে। তাই এ সময় চুলের যত্নে এ সময় স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে এবং অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে।
১. সপ্তাহে দু-তিন দিন ইফতারের পর চুলে তেল মালিশ করুন। এতে রক্ত চলাচল ভালো হবে।
২. চুল নরম আর উজ্জ্বল করতে টক দই অথবা কলা লাগিয়ে ১০ মিন পর ধুয়ে ফেলুন। মাথায় আলোভেরা জেল লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে চুল শ্যাম্পু করে ফেলুন।
৩. চুল ফেটে গেলে লেবুর রস লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সারাদিনের রোজা থাকার ক্লান্তি আপনার ত্বক এবং চুলকেও নির্জীব করে ফেলে। তাই এ সময়ে এসবের সঠিক যত্নের প্রয়োজন।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :