• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রমনার বটমূলে প্রভাতি আয়োজন


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৪, ২০১৮, ১১:৩৬ এএম
রমনার বটমূলে প্রভাতি আয়োজন

ঢাকা: পুরাতন কে ভুলে নতুনকে বরণ করে নিচ্ছে দেশে মানুষ। বাঙলা নববর্ষের প্রথম আয়োজনটি হয় রমনা উদ্যানের বটমূলে যে খানে কয়েক দশক হলে ছায়ানট আয়োজন করে আসছে বর্ষবরণ উৎসব। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি, হাজারে লোকের সমগমে স্পন্দিত হয়ে উঠেছিল। শনিবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে বাংলা বর্ষবরণের কেন্দ্রবিন্দু রমনা উদ্যানের বটমূলে ছিল ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান।

ছায়ানটের বর্ষবরণের এবারের বিষয় ‘বিশ্বায়নের বাস্তবতায় শিকড়ের সন্ধান’। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প, সামাজিক অনাচারের বিপরীতে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আত্মশক্তির জাগরণ ঘটাতে এমন প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে। তাই তাদের বর্ষবরণের গানে, কবিতায় বিশ্বায়নের বাস্তবতায় শিকড়ের সন্ধান করে ছায়ানটের শিল্পীরা। এতে বাঙালি জাতিকে নতুন করে জেগে ওঠার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

ছায়ানটের আয়োজনে শামিল হতে ভোরেই রমনার বটমূলে নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষের সমাগম ঘটে। তাদের পরনে ছিল রঙিন পোশাক। তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ জানান দিচ্ছিল যে তারা এই উৎসবে একাত্ম। 

রমনার এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। রমনায় প্রবেশের ক্ষেত্রে করা হয় তল্লাশি।

পাকিস্তানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় জাগরণ গড়ে তুলতে ষাটের দশকে যে সংস্কৃতিকর্মীরা সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট গড়ে তুলেছিলেন তাদেরই একজন সনজীদা খাতুন। ছায়ানটের উদ্যোগেই ১৯৬৭ সালে রমনার বটমূলে হয় প্রথম বর্ষবরণের অনুষ্ঠান।

সন্‌জীদা খাতুন এখন ছায়ানটের সভাপতি। তার কথন পর্বের পর রীতি অনুযায়ী জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় ছায়ানটের এবারের প্রভাতি আয়োজন।

কথন পর্বে সন্‌জীদা খাতুন বলেন, ‘যে মাটি আমাদের পায়ের তলায় আশ্রয়, জন্মের শুভক্ষণে সেই মাটিতেই ভূমিষ্ঠ হয়েছি আমরা। জন্মসূত্রে এ মাটি আমাদের একান্ত আপন। সে মাটির বুকে শিকড়ের মতো পা ডুবিয়ে মাটি-মাতাকে জানব আমরা। এমন স্বভাবসম্মত প্রক্রিয়ায় বেড়ে ওঠে আত্মপরিচয়ের প্রত্যয়ী, আর প্রতিষ্ফিত হব আমরা বাংলাভূমির সর্বজন। আবার মাটির রসে পুষ্ট হয়ে আকাশের দিকেও হাত বাড়াব আমরা। আলো আর বাতাসের তেজ আর স্নিগ্ধতা সর্ব অঙ্গে মেখে আমাদের সত্তা সঞ্জীবিত হয়ে উজ্জ্বলতর হবে।’

সন্‌জীদা খাতুন বলেন, ‘মাটি আর আলো-বাতাসের রস-সম্পদ সব মিলে আমাদের করে তুলবে পূর্ণাঙ্গ মানুষ। এভাবে শাশ্বত মানব হওয়ার পথের অভিযাত্রা সফল হবে। বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস, পাহাড়-সমতল-প্রান্তর, নদী-সমুদ্র বৃক্ষ লতা, ফুল, ফল,পাখপাখালি আমাদের পরম প্রিয়। প্রিয় এ দেশের সকল মানুষ। পরস্পর সংবদ্ধ থেকে আমরা বিশ্বকেও যোগ করে নেব আমাদের সঙ্গে।’ 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!