• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীর দশ গজব!


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭, ০১:৫০ পিএম
রাজধানীর দশ গজব!

ঢাকা : ঢাকাবাসীর নাগরিক জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে দশ সমস্যা। এই সমস্যাগুলোকে ঢাকাবাসী রাজধানীর গজব হিসেবেই অভিহিত করছেন। এর মধ্যে বাসা-বাড়িতে মশা, তেলাপোকা, ছারপোকা, ইঁদুর, মাছি এবং টিকটিকি। আর বাইরে যানজট, যত্রতত্র ময়লা আবর্জনায় দুর্গন্ধ এবং জলাবদ্ধতা। আর লোডশেডিংতো আছেই।

সরকারের পক্ষ থেকে এসব সমস্যা সমাধানে যেসকল উদ্যোগ নেয়া হয়, তা একেবারেই অপ্রতুল। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নাগরিকরা যদি নিজ উদ্যোগ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগি হয়, তাহলে সমস্যা অনেক কমে আসবে। এজন্য কিছু কলাকৌশলের কথাও উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টরা।

ক্ষতিকর পোকা  তেলাপোকা ময়লা আবর্জনা ও অন্ধকারে বাস করে। এরা দেখতে ঘিনঘিনে ভীতিকর, নোংরা ও রোগের বাহক। তেলাপোকার অত্যাচারে কোনো জিনিসই ঠিক রাখা যায় না। এই প্রাণীর সাথে ঢাকাবাসীর নিত্যদিনের বসবাস- যা দমনে কীটনাশক স্প্রে, কীটনাশক চক ব্যবহার করা হয়।

কীটনাশকে থাকা রাসায়নিক উপাদান শরীরের ক্ষতি করে, পরিবেশ দূষণ করে। তাই তেলাপোকা মারতে ব্যবহার করা যেতে পারে- বেকিং সোডা, চিনি এবং বোরিক এসিডের মতো সাধারণ উপাদান। গোলমরিচ গুঁড়া, পেঁয়াজ, রসূন এবং পানি দিয়ে পেষ্ট তৈরি করে তরল করে স্প্রের বোতলে ভরে যেখানে তেলাপোকা সেখানে স্প্রে করা যেতে পারে।

ইঁদুর একটি আতঙ্কের নাম। বই পুস্তক থেকে শুরু করে কাপড় কোন কিছুই যেন নিরাপদ নয়। ইঁদুর দূর করতে পারে পেপারমেন্ট। একটি তুলোর বলে পেপারমেন্ট অয়েল ডুবিয়ে তুলোর বলটি ইদুরের কাছে রাখা যেতে পারে। পেপারমেন্টের গন্ধ শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করে নিঃশ্বাস নেওয়া বন্ধ করে দিবে এবং ইদুর মারা যাবে।

মাছি বিরক্তিকর একটি পতঙ্গ। মাছি তাড়ানোর সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায় হলো তুলসী পাতা। বারান্দায় বা জানলার কাছে একটি তুলসী গাছ রাখুন। দেখবেন মাছি আপনার বাসায় আসছে না। এছাড়া বিভিন্ন এ্যাসেন্সিয়াল অয়েল যেমন ল্যাভেন্ডার এবং ইউক্যালিপ্টাস অয়েল মাছি তাড়াতে অনেক বেশি কার্যকর।

ছোট্ট পরজীবী পতঙ্গ ছারপোকা মানুষ ও উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট অন্যান্য পোষকের রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে। বিছানা, মশারী, বালিশের একপ্রান্তে বাসা বাঁধে। বিছানার পোকা হলেও এর অন্যতম পছন্দের আবাসস্থল হচ্ছে- ম্যাট্রেস, সোফা এবং অন্যান্য আসবাবপত্র। পুরোপুরি নিশাচর না হলেও ছারপোকা সাধারণত রাতেই অধিক সক্রিয় থাকে এবং মানুষের অগোচরে রক্ত চোষে নেয়। মশার ন্যায় ছোট্ট কামড় বসিয়ে এরা স্থান ত্যাগ করে। ছারপোকা দূর করতে একটি স্প্রে বোতলে পেঁয়াজের রস ভরে এটি স্প্রে করে দিন বিছানা, সোফার চারপাশে যেখানে ছারপোকা রয়েছে।

টিকটিকি থেকে বাঁচার জন্য ঘরে কোণে, বিশেষ করে ভেন্টিলেটরের কাছে কাঁচা ডিমের খালি খোসা ঝুলিয়ে রাখুন। এছাড়াও ঘরে ময়ূরের পালক রাখতে পারেন।টিকটিকি ঘরের ত্রি-সীমানায় ঘেঁষবে না।

মশা জীবাণু ছড়ায়। একে তাড়ানোর সবচেয়ে সহজ আর কার্যকরী উপায় হল নিমের তেলের ব্যবহার। প্রতিদিন শরীরে নিমের তেল ব্যবহার করুন। এটি আপনাকে মশা থেকে দূরে রাখবে এবং তার সাথে সাথে ত্বকও সুস্থ এবং ভালো রাখবে।

যানজটে নাকাল হয় ঢাকাবাসী। ঢাকায় সড়কপথে সড়ক ব্যবহারকারী যানবাহনের সংখ্যা সড়কের ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। যানবাহনগুলো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে না। এ কারণে শ্রমঘন্টার অপচয় হয়। মানসিক বিরক্তি, শারীরিক কষ্ট ছাড়াও এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেক। এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা হাঁটা এবং ব্যাক্তিগত গাড়ী ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দেন।

লোডশেডিংয়ের বিড়ম্বনা মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ। বিদ্যুতের লুকোচুরির কারণে অফিস-আদালতেও ঠিকমত কাজ করতে পারে না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। লোডশেডিংয়ে সবচেয়ে অমানবিক পরিস্থিতির শিকার হয় হাসপাতালগুলো।

ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধ থেকে বাঁচার যেন কোন উপায় নেই। রাজধানী জুড়ে ময়লা আবর্জনা। যত্রতত্র ময়লার ভাগাড়। বৃষ্টির পানি আর ময়লা আবর্জনা যখন একাকার হয়, নগরবাসীকে চলাফেরা করতে হয় নাক টিপে প্রায় দম বন্ধ করে। গোটা নগরীই হয়ে ওঠে ময়লা-আবর্জনার ঢিবি। নানা ধরনের ময়লা-আবর্জনার উৎকট গন্ধ নাগরিক জীবনকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে।

ঢাকার অনেক জায়গায়ই অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় হাঁটুপানি জমে আর ভারি বর্ষণ হলে জুতা খুলে হাঁটতে হয়। গাড়ি সিএনজি ও রিক্সা চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে যায় রাস্তা। পানির সাথে ড্রেনের যেসব ময়লা মিশে একাকার হয়ে যায় সেদৃশ্য অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। এজন্য নাগরিকদের আরও সচেতন হওয়ার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন সংশ্লিস্টরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!