• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীর যানজট নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ নিন


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২১, ২০১৬, ১০:৩০ এএম
রাজধানীর যানজট নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ নিন

যানজট থেকে মুক্তি নেই রাজধানীবাসীর। ক্রমেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে রাজধানীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকা মানুষ পোহাচ্ছেন সীমাহীন ভোগান্তি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, পরিকল্পনাহীন খোঁড়াখুঁড়ি ও খানাখন্দে ভরা সড়কের বিরাট অংশজুড়ে শত শত গাড়ির এলোপাতাড়ি পার্কিং, সড়কে বাস-মিনিবাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামার মতো কারণে রাজধানীর ৩৭টি পয়েন্টে যানজট লেগেই থাকছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাফিক অব্যবস্থাই রাজধানীতে যানজটের অন্যতম কারণ। এ অবস্থার নিরসন না হওয়া পর্যন্ত রাজধানীর যানজট সমস্যার নিরসন সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের জরুরি ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।  

ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাস্তবে রাস্তার তুলনায় গাড়ি বেশি এবং গাড়ির তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা আরো কয়েক গুণ বেশি হওয়ায় নগরীতে যানজট সামাল দেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন গাড়ি নামছে, কিন্তু সড়ক বাড়ছে না। এ ছাড়া প্রতিটি সড়কে চলছে যথেচ্ছ ব্যবহার। সর্বোপরি রিকশা তো আছেই। এসব কারণে যানজট নিরসনে বিভিন্ন সংস্থার নানামুখী উদ্যোগ-আয়োজনও সুফল বয়ে আনতে পারছে না। এ ছাড়া রাজধানীর ২৯টি রেলগেট পেরিয়ে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৮০টি ট্রেন চলাচল করে। এতে আটকে যায় যানবাহন, হয় দীর্ঘ যানজট। রাজধানীর স্কুলগুলোর সামনে ছাত্রছাত্রী-অভিভাবকদের জটলা, এলোমেলো গাড়ি পার্কিং, প্রাইভেটকার, রিকশার জটলা- সব মিলিয়ে এক অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি করে। ফকিরেরপুল মোড়ে গড়ে ওঠা আন্তঃজেলা কোচস্ট্যান্ডটির কারণে নয়াপল্টন থেকে মতিঝিল এবং রাজউক ভবন থেকে শাহজাহানপুর  মোড় পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার এলাকায় দিন-রাত যানজট লেগেই থাকে। অভিন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করে কলাবাগান, কমলাপুর, কল্যাণপুর, শ্যামলী ও জয়কালী মন্দির এলাকায়। এসব স্থানে প্রধান রাস্তাজুড়ে দূরপাল্লার কোচকাউন্টার বসিয়ে এলোপাতাড়ি স্ট্যান্ডে পরিণত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কোচস্ট্যান্ডগুলো ঘিরে সৃষ্ট যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সীমাহীন ভোগান্তি পোহায় লোকজন। 

এদিকে নগরীতে চলাচলরত বাস, মিনিবাস, ম্যাক্সি, রাইডার, দুরন্তসহ মেট্রো সার্ভিসের প্রায় ২০ হাজার পরিবহনের জন্য নির্ধারিত কোনো টার্মিনাল না থাকায় ব্যস্ততম সড়কগুলোই টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। রাতে মহাখালী টার্মিনাল থেকে মহাখালী মোড় পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে তিন সারিতে শত শত কোচ পার্কিং করে রাখা হয়। ফাঁকা রাখা সামান্য একচিলতে সড়ক দিয়ে যাতায়াত কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। রাস্তাকে টার্মিনালে পরিণত করায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে প্রগতি সরণির কুড়িল-বাড্ডা-রামপুরা এলাকায়। মিরপুরগামী বাস-মিনিবাসের জমজমাট ছয়টি টার্মিনাল গড়ে উঠেছে প্রগতি সরণিতেই। নতুনবাজার, উত্তর বাড্ডা ও মেরুল বাড্ডা এলাকায় অবৈধ টার্মিনালগুলো ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি করে। 

এ ছাড়া রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানী-বারিধারারও একই চিত্র। এখানকার বেশিরভাগ এলাকায় স্থবির হয়ে পড়ছে জীবনযাত্রা। হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী, গ্রাহকসহ সব শ্রেণির মানুষের নিয়মিত যাতায়াত গুলশান-বনানীতে। তারা নিয়ে আসেন প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পাজেরো জিপসহ হরেকরকমের গাড়ি। এতসব গাড়ি বহনকৃত যাত্রীদের আবার ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আশপাশেই দিনভর পার্কিং করে রাখা হয়। ফলে ৫ সহস্রাধিক গাড়ির ভিড়ে সমগ্র গুলশান-বনানী সারা দিনই স্থবির থাকে। আমরা দ্রুত এ অব্যবস্থার অবসান চাই। নতুবা রাজধানীর জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়বে। স্থবির হয়ে পড়বে উন্নয়নের গতি।   

সোনালীনিউজ/ঢাকা
 

Wordbridge School
Link copied!