• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনীতিতে সুবাতাস দেখতে চায় দেশবাসী


জাকিরুল আহসান ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮, ০৯:৩২ পিএম
রাজনীতিতে সুবাতাস দেখতে চায় দেশবাসী

ঢাকা: কয়েক বছর ধরেই রাজনীতিতে অস্থিরতা চলে আসছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি যেন দুই মেরুতে অবস্থান করছে। এতে করে দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীর মাঝেও রয়েছে হতাসা। সর্বশেষ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ায় তা যেন আরও ঘনীভূত হয়। 

তবে খালেদা গ্রেপ্তারের পর রাজনীতিতে কিছুটা হলেও পরিবর্তনের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। দলীয় নেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে অহিংস আন্দোলনের ঘোষণা এবং তা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে ওঠে বিএনপি নেতাকর্মীরা। প্রথম দিকে বিরোধী নেতাকর্মীদের কর্মসূচিতে হার্ডলাইনে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সহিংসতায় জড়ায়নি দলটির নেতাকর্মীরা।  

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বৃহৎ দুই জোট নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে সারা দেশে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হন। পরবর্তি সময়ে এক এগারোর সরকারের ব্যর্থ মাইনাস টু ফর্মুলা। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বিজয়। তারপরে সংবিধান সংশোধনীতে তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হওয়ার পর থেকে দুই জোট দুই মেরুতে অবস্থান করছে। 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে নবম জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অধিকাংশ দল বর্জন করে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী জোট বিজয় লাভ করার পর দুই জোটের মধ্যে দূরত্ব আরো বেড়ে যায়। দীর্ঘ দিন চলতে থাকে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন। প্রণহানিও ঘটে দলীয় নেতাকর্মী থেকে সাধারণ মানুষের। চলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরপাকড়।

এরপর গত দুই বছর ধরে অপ্রীতিকর আর নাশকতামূলক তৎপরতা ছিল না। এমনকি কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পেরেছে। তবে হঠাৎ করেই রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একটি দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে খালেদা গ্রেপ্তার পরবর্তী জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন নিয়ে। 

কিন্তু খালেদা কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানান, অহিংস আন্দোলনের নির্দেশ দিয়েছেন দলের নেত্রী। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বলেছেন। আমরা সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁকে মুক্ত করে আনবো।

শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে তা পালন করে আসছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঝামেলা এড়িয়ে চলছেন। এতে করে বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। এতে কিছুটা হলেও সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। আগের মতো জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন দেখতে হচ্ছে না, রাস্তা চলতে পোহাতে হচ্ছে না আতঙ্ক। 

এদিকে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি বন্ধ করলে বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দেয়া হবে না। 

সরকার কারো গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করতে চায় না মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার কোনো দলেরই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দেয় না। তবে বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি বন্ধ করলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আর যদি জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি বন্ধ না করে, তা হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

উভয় পক্ষ যতি সত্যি সত্যি সহনশীল অবস্থানে আসতে পারে, তাহলে কিছুটা হলেও দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বয়ে যাওয়ার আশা করছে সাধারণ মানুষ। দেশবাসী চাচ্ছে যে করেই হোক বহুদিনের অস্থির রাজনীতিতে সুবাতাস বইতে শুরু করুক। তবে এ আশা কতটা পূরণ হবে, তা দেখতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!