• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে অর্থ পাচার’


নিজস্ব প্রতিবেদক  জুন ২৫, ২০১৬, ০৬:০৮ পিএম
‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে অর্থ পাচার’

দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবকে অর্থ পাচারের অন্যতম কারণ মনে করা হচ্ছে। এছাড়া বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের অভাবেও বিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাও অর্থ পাচারের অন্যতম কারণ। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত আলোচনা সভায় এমন মতামত ব্যক্ত করেছেন বক্তারা।

শনিবার (২৫ জুন) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে  ‘আন্তঃদেশীয় অবৈধ অর্থ প্রবাহ’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাস উদ্দিন আহমেদ মনে করেন রাজনৈতিক অস্থিরতাই অর্থ পাচারের অন্যতম প্রধান কারণ। তিনি আরও বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে ২০০৭ সালের তুলনায় ২০০৮ সালে ৬০ ভাগ বেশি অর্থ পাচার হয়েছিল। আর ২০১৪ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালে আরও ৩৫ শতাংশ অর্থ পাচার বেড়ে যায়।’

অর্থ পাচারে বিনিয়োগবান্ধব প্রতিকূলতাও অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্ণর। অর্থ পাচাররোধে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি ও স্বর্ণ চোরাচালান ধরার পাশাপাশি বিচার করতে হবে বলেও জানান তিনি।

সভায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘অর্থ পাচারের জন্য বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের অভাব একটি অন্যতম কারণ। এছাড়া দেশের ভেতরে নিরাপত্তার অভাবেও অর্থ পাচার হয়। তিনি আরও বলেন, বিদেশে অর্থ পাচাররোধে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, অপরাধীদের দৃশ্যমান শাস্তি, ঋণ খেলাপিদের ক্ষেত্রে বিদেশে টাকা পাঠাতে না দেওয়া ও শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহের পর তার সঠিক ব্যবহার নিয়ে যথাযথ তদারকির প্রয়োজন।’

নানা কারণে অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান। তিনি বলেন, ‘আইনের প্রয়োগ না করা, কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা, নিরাপত্তার অভাব ইত্যাদি কারণে অর্থ পাচার হচ্ছে। এ অর্থ পাচার একটি অত্যন্ত জটিল বিষয়, এটা রাতারাতি সমাধান হওয়া সম্ভব না। ধীরে ধীরে পাচাররোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দুদকের উচিত অর্থ পাচাররোধ করা, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি পারবে না। তাই অর্থ পাচাররোধে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান করতে হবে।’

এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘২০১৩ সালে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের খবর শুনে হতবাক হয়েছি। গাছের গোড়ায় না গিয়ে পাতা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করায় এ অবস্থা। অর্থ পাচাররোধে মূল জায়গায় কাজ করতে হবে এবং মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। অন্যথায় অর্থ পাচার ৮০ হাজার কোটি থেকে বেড়ে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকায় চলে যাবে।’

সর্বশেষে সভার সভাপতি সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘কয়েকটি বিষয়ে কাজ করলে অর্থ পাচাররোধ সম্ভব। এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তি উন্নত ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, পাচার হওয়া অর্থের চেয়ে পাচাররোধে বেশি সময় দেওয়া, আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সমন্বয়, অর্থ পাচারকারীদের দৃশ্যমান শাস্তি ও দুদক, রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক ইত্যাদির মধ্যে সমন্বয়, সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!