• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের হিসাবে অসঙ্গতি


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৭, ২০১৮, ০১:৪৫ পিএম
রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের হিসাবে অসঙ্গতি

ঢাকা : রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের গরমিলের তথ্য পাওয়া গেছে খোদ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ে এ গরমিল পাওয়া গেছে।

এনবিআর ও প্রতিষ্ঠানের মাঠপর্যায়ের তথ্য বলছে, রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠানটি ১৩ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব দেখিয়েছিল ওই অর্থবছর। ওই অর্থবছর রাজস্ব আদায়ের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তীতে তা কমিয়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকায়। অর্থবছর শেষে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে বলেও জানায় এনবিআর।

কিন্তু এক বছর পর মাঠ পর্যায়ের অফিস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেখা গেল, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এনবিআর এখন ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের হিসাব ধরেই এগোচ্ছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কমিশনারেটগুলোকেও এ তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমাপ্ত হতে যাওয়া চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছর ও আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাও মাঠ পর্যায় থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আদায়ের ভিত্তি ধরেই নির্ধারণ করা হচ্ছে।  

অবশ্য এনবিআর যে রাজস্ব আদায়ের তথ্য দিয়েছিল তার সঙ্গে একমত পোষণ করেনি সরকারের হিসাব সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান মহা-হিসাব নিয়ন্ত্রক (সিজিএ) কার্যালয়। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব প্রাপ্তি ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলো থেকে প্রাপ্ত হিসাব মেলানোর পর দেখা গেল সিজিএ’র দেওয়া তথ্যের সঙ্গেই রাজস্ব আদায়ের প্রায় মিল পাওয়া যাচ্ছে। সিজিএ’র দেওয়া তথ্যের সঙ্গে ব্যবধান হচ্ছে ১৪৬ কোটি টাকা।

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এ বিষয়ে বলেন, অতীতের ব্যবধান কমিয়ে আনার পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এটি আর না বাড়ে এ চেষ্টা থাকবে। এ লক্ষ্যে অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গেও বসব।  

অভিযোগ রয়েছে, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন দেখাতে ক্ষেত্র বিশেষে এনবিআরের মাঠ পর্যায়ের অফিস কৌশলে বাড়তি রাজস্ব আদায় দেখায়। কখনো কখনো শীর্ষ পর্যায়ের ইচ্ছায় কৃত্রিম বর্ধিত রাজস্ব আদায়ের হিসাবও দেখানো হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কর অঞ্চল-২ থেকেই ৮ হাজার কোটি টাকার বাড়তি রাজস্ব দেখানো হয়েছিল বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে এনবিআরের তৎকালীন পরিসংখ্যান বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও যোগসাজশ ছিল বলে  অভিযোগ রয়েছে।

এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ ইস্যুতে নতুন করে গুরুত্ব দিয়েছে বর্তমান রাজস্ব প্রশাসন। এ লক্ষ্যে অতীতের কয়েকটি অর্থবছরে প্রকৃত রাজস্ব আদায় কত ছিল তা বের করার নির্দেশনা দেওয়া হয় শীর্ষ প্রশাসন থেকে।  

সূত্র জানিয়েছে, অনেক সময় একই আদায় দুই দফা হিসাব হওয়ার ফলে রাজস্ব আদায় বেশি দেখা যায়। আবার ভুল কোডে জমা দেওয়ার কারণেও দুই অফিস আদায় দেখায়। আবার জমা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট অফিসে ট্রেজারি চালান সময়মতো জমা না হওয়া কিংবা পরবর্তী মাসের রাজস্বকে আগেই আদায় হিসেবে দেখানোর কারণেও হিসাবে ভুল হতে পারে।

এ ছাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে আদায় বেশি দেখানোর জন্যও বাড়তি হিসাব দেখানো হয়ে থাকে। তবে এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক সময় সিজিএ অফিসও সঠিক হিসাব না করার কারণে এ সমস্যা হয়ে থাকে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!