• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাতে হাসিনা-মোদির বৈঠক লন্ডনে


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৯, ২০১৮, ০৩:৫৪ পিএম
রাতে হাসিনা-মোদির বৈঠক লন্ডনে

ফাইল ছবি

ঢাকা : অবশেষে বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদির বৈঠক হতে যাচ্ছে। কমনওয়েলথ হেড অব গভর্নমেন্ট মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে সেখানে দুই প্রধানমন্ত্রী অবস্থান করছেন। 

প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম বৈঠকের কথাটি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার (১৬ এপ্রিল) সৌদি আরব থেকে লন্ডনে যান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে আগে থেকেই গুরুত্ব দিয়েছিল কূটনীতিক বিশ্লেষকরা। কেননা এই সফরে ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হবে বলে গুঞ্জন ছিল।

দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র অনুযায়ী, এই বৈঠকে বাংলাদেশের বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তির বিষয়ে কোনো পাকা কথা দিচ্ছেন না মোদি। তবে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে কথা হবে। 

মাত্র বছর খানিকের আগেই মোদি-হাসিনার বৈঠক হয়েছে। এর মধ্যে কোনো তৃতীয় দেশের সঙ্গে দুই দেশই দ্বিতীয় বার বৈঠকে বসেনি। তার মধ্যে দু’টি দেশেই নির্বাচন কড়া নাড়ছে। লন্ডনের বৈঠকটি সম্ভব হলে, কূটনৈতিক শিবিরের হিসেব মতো বর্তমান সরকারের আমলে এটাই দু’দেশের শেষ শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হবে। ফলে এই বৈঠকের গুরুত্ব গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই যথেষ্ট।

তাদের এই বৈঠকের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে গত ৮ এপ্রিল ঢাকা সফরে এসেছিলেন দেশটির নবনিযুক্ত পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে। তার ওই সফরে তিনি জানিয়ে দেন আপাতত মোদি তিস্তা সম্পর্কে খুশির খবর দিতে পারছেন না। সফরকালে ভারতের সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

তারও আগে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল বিমস্টেক-এর নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকা এসেছিলেন। তিনিও মোদি ও শেখ হাসিনার বৈঠকের বিষয়টি জানিয়েছিলেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর।

গোটা দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের ওপরই চীনের প্রভাব বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের গুরুত্ব দিল্লির কাছে অনেক বেশি। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। ওই নির্বাচন বিএনপি বর্জন করায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউসহ পশ্চিমারা হতাশ হয়েছিল। কিন্তু সুজাতা সিং ওই নির্বাচনের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন। 

আনন্দবাজার বলছে, লন্ডনের এই বৈঠকে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করবেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিস্তা ছাড়াও আরো অনেকগুলি দিক রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভারত পাশে রয়েছে। যে কাজগুলি ইতিমধ্যেই চলছে তার পাশাপাশি, নতুন কোন ক্ষেত্রে সমন্বয় বাড়ানো যায়, তা নিয়ে কথা বলবেন মোদি-হাসিনা। কথা হবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়েও।

সন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে পারস্পরিক সহযোগিতা আগামি দিনগুলিতে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করে ভারত। প্রতিবেশী রাষ্ট্রে নির্বাচনের মুখে প্রতিহিংসার ঘটনা বাড়লে তার প্রভাব সীমান্তে পড়তে পারে— এই উদ্বেগও রয়েছে নয়াদিল্লির। নিরাপত্তা সহযোগিতা আরো জোড়দার করা নিয়ে কথা চলছে দু’দেশের।

তিস্তা নিয়ে খুশির সংবাদ না দিতে পারার বিষয়ে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, তিস্তা চুক্তি সই করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সম্মতি এখনো পাওয়া যায়নি। তার সম্মতির পাওয়া গেলে মোদি ভোটের আগেই বাংলাদেশ সফরে আসবেন। তবে মমতা তার দেশের রাজনীতিতে মোদির বিরোধিতায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। ফলে তিস্তার ব্যাপারে তার সম্মতি পাওয়া এখনও সুদূরপরাহত।

তবে তিস্তা নিয়ে আশু নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য তাদের আগ্রহের কথা জানাবে মোদি। রাখাইন প্রদেশকে আর্থ সামাজিকভাবে ঢেলে সাজার জন্য কী পদক্ষেপ করলে সুবিধা হয়, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের কাছে জানতে চেয়েছে ভারত।

তারই অংশ হিসেবে বিজয় গোখলের সফরে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে ভারত বাংলাদেশকে ত্রাণ সহায়তা বাড়ানো আশ্বাস দিয়েছে। তাছাড়া রোহিঙ্গদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে সহায়তা করবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের এই নতুন কূটনীতিক। 

যদিও, গত বছরের শেষে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলা রাখাইনের উন্নয়নের জন্য একটি চুক্তিপত্রে সই করেছে ভারত। সেখানে প্রস্তাবিত আবাসন তৈরির প্রকল্পগুলি শুরু করে দিতে সক্রিয় হচ্ছে মোদি সরকার। 

ব্রিটেনে সাত দিনের সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৩ এপ্রিল ঢাকায় ফিরবেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!