সাত বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর রাশেদ আর অনন্যা বিয়ে করে অবশেষে সংসার শুরু করলো। এই সংসার নিয়ে দুজনেরই অনেক স্বপ্ন ছিল। মনের মাধুরী দিয়ে সাজাবে দুজনার ছোট্ট সংসার। যেখানে থাকবেনা ভালবাসার কোন অভাব। বিয়ের আগে যখন ওরা গল্প করতো, সেখানে বেশিরভাগ সময় জুড়েই থাকতো এইসব জল্পনা-কল্পনা।
আজ সেই স্বপ্ন সত্যি হলো। পরিবারের সকলের আশীর্বাদেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলো রাশেদ এবং অনন্যা। রাশেদ কদিন আগেই একটা স্বনামধন্য ব্যাংকে অফিসার হিসাবে যোগদান করেছে। আর অনন্যা স্নাতক ৩য় বর্ষের ছাত্রী। ভার্সিটি থেকে এসে একটা লম্বা সময় অনন্যাকে এখন একা থাকতে হয়। অফিস আর রাস্তার যানজট ঠেলে রাশেদের বাসায় পৌছাতে রাত ৮টা-৯টা বেজে যায়। প্রথম প্রথম এটা নিয়ে কোন সমস্যা ছিলনা। কিন্তু কদিন পরেই একাকীত্ব গ্রাস করতে শুরু করে অনন্যার চারপাশ।
ক্যারিয়ার সবে শুরু হয়েছে, তাই রাশেদের চিন্তা শুধু কিভাবে তাকে উপরের দিকে উঠতে হবে। এভাবে দিন গড়িয়ে মাসের পর মাস পেরোতে থাকে, বাড়তে থাকে দুজনার মধ্যকার দূরত্ব। এমন একসময় ছিল যে সারাদিনের জমে থাকা কথা রাতের বেলা না বলে কারো ঘুম আসতোনা। কিন্তু এখন প্রয়োজনীয় কথা ছাড়া অন্যকোন কথা, এমনকি “আমি তোমাকে ভালবাসি” অতিপ্রিয় এই বাক্যটিও দিনে একবার উচ্চারণ কেউ করে কিনা সন্দেহ।
আসলে যাদের প্রেমের বিয়ে অনেকেরই হয়তো কোন না কোন সময়ে এই ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। প্রত্যেকটি ভালবাসার শুরু হয় অনেক আশা আকাঙ্ক্ষা এবং চাওয়া-পাওয়ার মধ্যদিয়ে। এজন্য সম্পর্কে মধ্যে কম্প্রোমাইজ শব্দটার স্থান থাকেনা। দুজন দুজনার দৃষ্টিতে সবকিছুর ব্যাখ্যা খোঁজে। যার ফলে শুরু হয় দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।
এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে সবাই মনে করে যে সে তার অবস্থানে ঠিক। মূল সমস্যা এটাই। সঙ্গী-সঙ্গিনী যদি একে অপরের সুবিধা-অসুবিধা বুঝে চলার চেষ্টা করে তাহলে অনেক সমস্যার গোঁড়া থেকেই সমাধান হয়ে যায়। মানুষের সব দিন একরকম যায়না। একদিন ভুল হলে যে আরেকদিনও ভুল হবে এরকম চিন্তা করা ঠিক নয়। একবার কথা না রাখতে পারলে দুজনারই উচিত পরের বার যেভাবেই হোক কথা রাখার চেষ্টা করার। শত ব্যস্ততার মাঝেও যেটুকু সময় পাওয়া যায়, সেখানেই নিজেদের জন্য কিছু একান্ত সময় বের করে নেয়া প্রয়োজন। যেখানে ঝালাই করে নিতে হবে ভালবাসার সব স্মৃতিগুলো।
লেখক: নুসরাত নীলিমা
সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন
*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।
আপনার মতামত লিখুন :