• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ধসের চার বছর পূর্ণ আজ

রানা প্লাজা জায়গাটি এখন ময়লা-আবর্জনার স্তূপ


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২৪, ২০১৭, ১০:৪৪ এএম
রানা প্লাজা জায়গাটি এখন ময়লা-আবর্জনার স্তূপ

ঢাকা : সাভারের রানা প্লাজা ধসের চার বছর পূর্ণ হল আজ সোমবার (২৪ এপ্রিল)। কিন্তু আজও দুর্ঘটনাস্থলে হাসপাতাল নিমার্নের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। নিহতদের স্মরণে একটি স্মৃতিফলক নিমার্ণ করলেও অযত্ন ও অবহেলায় তা ক্রমেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানটি সংরক্ষনের উদ্যোগ না থাকায় জায়গাটি এখন পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সংঘটিত ওই দুর্ঘটনায় সহস্রাধিক শ্রমিক নিহত ও আড়াই হাজারের মতো আহত হন যাদের অধিকাংশ পঙ্গুত্ব বরণ করেন। বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই শিল্প দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।

সেদিনের বীভৎসতায় প্রাণ হারানো ও নিখোঁজ মানুষগুলোর আর্তনাদ এখনো ভেসে বেড়ায় সেখানে। স্বজনহারা অনেককে মাঝেমধ্যে দেখা যায় সেখানে। প্রিয়জনের খোঁজে আসা এসব মানুষ ধ্বংসস্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলেন।

বিধ্বস্ত রানা প্লাজা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জায়গাটি কচুরিপানায় ভরা। নানা ময়লা-আবর্জনার স্তূপ তৈরি হচ্ছে সেখানে। অরক্ষিত থাকায় জায়গাটি মলমূত্র ত্যাগের জন্য বেছে নিয়েছে পথচারী ও আশপাশের দোকানিরা।

এর আগে অনেকবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে রানা প্লাজার জায়গাটি সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তার দেখা মিলেছে কম। শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে তখন যেনতেনভাবে কাঁটাতারের বেড়া লাগানো হলেও তত্ত্বাবধানের অভাবে সেগুলো উধাও হয়ে গেছে।

রানা প্লাজা ধসে হতাহত শ্রমিকদের স্মরণে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হলেও তা পড়ে রয়েছে অবহেলায়। আর সামনের খালি জায়গাটুকু ব্যবহৃত হচ্ছে রেন্ট-এ-কারের গাড়ি রাখার জন্য।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ট্রেড ইউনিয়নের শিল্পাঞ্চল সাভার শাখার সঞ্চালক কে এম মিন্টু জানান, প্রতি বছর রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির দিনটি স্মরণে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত শ্রমিক জড়ো হন বিধ্বস্ত জায়গাটির সামনে। এদিন সকালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে নিহত সহকর্মী ভাই-বোনদের স্মরণ করেন তারা। এই উপলক্ষে কেবল জায়গাটি শ্রমিকদের পক্ষ থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। তা ছাড়া পোশাকশিল্পের মালিকদের পক্ষ থেকে কোনো শ্রদ্ধা জানানো হয় না এদিন।

মিন্টু উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, নিম্ন আয়ের শ্রমিক বলেই তাদের প্রাণ হারানো স্থানটিকে অবজ্ঞার চোখে দেখা হচ্ছে। এখানে যদি মালিকশ্রেণির কয়েকজন মারা যেতেন তাহলে হয়তো স্থানটির এমন অমর্যাদা হতো না।

এ ধরনের ঘটনা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন উল্লেখ করে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপতি তসলিমা আক্তার বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক ও লজ্জাকর যে আমরা ভয়াবহ ওই ঘটনার চার বছরেও দিনটি সঠিকভাবে পালনে ব্যর্থ হচ্ছি। তা না হলে কেন ২৪ এপ্রিল আমাদের হাজারো ভাই-বোনের প্রয়াণ দিবসে গার্মেন্ট মালিকরা একটিবারের জন্যও শোক প্রকাশ করবেন না।’

সেদিন পোশাকশিল্পের সব মালিক ও শ্রমিককে কালো ব্যাচ ধারণের আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি রানা প্লাজার নিহত শ্রমিকদের স্মরণে দেশে ২৪ এপ্রিল জাতীয়ভাবে ‘শ্রমিক শোক দিবস’ পালনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

 

 

Wordbridge School
Link copied!