• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রভাষা থেকে জনতার আন্দোলনের রূপ ধারণ


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭, ০৯:৩১ এএম
রাষ্ট্রভাষা থেকে জনতার আন্দোলনের রূপ ধারণ

ঢাকা : ভাষা আন্দোলনের ডাকে পাকিস্তানের প্রথম হরতাল পালিত হয় ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ। এ সময় ভাষা আন্দোলনের অফিস ছিল ফজলুল হক হলে। হরতাল সফল করার যাবতীয় কর্মসূচি এখানেই গ্রহণ করা হয়। যে পুস্তিকার মাধ্যমে মহান ভাষা আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হয়, ভাষা আন্দোলনের কারণ ব্যখ্যা করা হয় এবং ভাষা আন্দোলন পরিাচালনার দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়, সেটিকেই ভাষা আন্দোলনের ঘোষণাপত্র বলা হয়। ঘোষণাপত্রটির নাম ছিল ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’।

১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ভাষা আন্দোলনের অফিসে ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন অধ্যাপক আবুল কাসেম। সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এ কে এম আহসান, নুরল হক ভুঁইয়া প্রমুখ ভাষাসংগ্রামী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ঘোষণাপত্র পুস্তিকায় তিনটি নিবন্ধ স্থান পায়। প্রথমটি অধ্যাপক আবুল কাসেমের ‘আমাদের প্রস্তাব’, দ্বিতীয়টি ড. কাজী মোতাহার হোসেনের ‘রাষ্ট্রভাষা ও পূর্ব পাকিস্তানের ভারসাম্য’ এবং তৃতীয়টি আবুল মনসুর আহমেদের ‘বাংলাই আমাদের রাষ্ট্রভাষা হবে’।

তৎকালীন পাকিস্তান সরকার জোর করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চাইলে তাদের সেই প্রচষ্টায় বাধাদান ও দেশবাসীকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ঘোষণাপত্রে বলা হয়, একে (উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রচেষ্টাকে) সর্বপ্রকারে বাধা দিতে হবে এবং এর বিরুদ্ধে বিরাট আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বস্তুত এ আহ্বানে আস্তে আস্তে দেশের মানুষ সাড়া দিতে শুরু করে এবং ভাষা আন্দেলনের প্রতি জনসমর্থন বাড়তে থাকে। প্রাথমিকভাবে ভাষা আন্দোলন শুরু করার জন্য দেশের মানুষের করণীয় কর্মসূচি স্থির করে দেয়া হয়। এসব কর্মসূচিই ভাষা আন্দোলনের পক্ষে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে সাহায্য করে। 

কর্মসূচিগুলো ছিল- ১. প্রত্যেক স্কুল, কলেজ এবং শহরে সভা করে অপর ভাষাকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস করে কায়দে আজম এবং অন্যান্য নেতার কাছে পাঠাতে হবে। এবং ২. গণপরিষদের প্রত্যেক সদস্যের কাছে গিয়ে তারা যেন বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে মত দিয়ে বাঙালির আত্মহত্যার পথ সুগম না করেন, তা স্পষ্ট করে বোঝাতে হবে। 

আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের কিছুদিনের মধ্যে ভাষা আন্দোলনের লিখিত ঘোষণাপত্র ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ পুস্তিকা বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, শিক্ষক, পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সাড়া জাগায় ধাপে ধাপে। এভাবেই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন জনতার আন্দোলনে রূপ ধারণ করে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!