• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
না.গঞ্জ ৭ খুন মামলা

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ নিহতদের পরিবারের


নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানুয়ারি ১৬, ২০১৭, ১২:০০ পিএম
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ নিহতদের পরিবারের

নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের দুই মামলায় প্রধান আসামি নূর হোসেন এবং র‌্যাবের তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। 
  
মামলার বাকি নয় আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জের নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। 
  
রায় ঘোষণার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আপনাদের-আমাদের সবার চেষ্টায় রায় ঘোষণা হয়েছে। এই রায়ের পেছনে সবাই পরিশ্রম করেছেন। বিশেষ করে সাখাওয়াত ভাই মামলা নিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। এছাড়া সাংবাদিক ভাই আপনারাও অনেক কষ্ট করেছেন। সবার প্রচেষ্টায় আমরা বিচার পেয়েছি। 
  
তিনি বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। কিন্তু আমরা চাই, এই রায় দ্রুত কার্যকর হোক। হাইকোর্টে যাতে এই রায় বহাল থাকে। 

সেলিনা আরো বলেন, আজও হুমকি আসে। স্বামীর মতো পরিণতি বরণ করতে হবে বলে উড়ো চিঠি আসে। এ রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত শান্তি নেই।

নূর হোসেনের কী হবে তা নিয়ে শঙ্কিত : আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহীমের বাবা ওহাব রায়ের প্রতিক্রিয়ার সাংবাদিকদের বলেন, আজ রায় হবে- এ খবর শুনে আমরা আদালতে আসি। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে নূর হোসেরনকের কী হবে এটা নিয়ে আমরা এখনো শঙ্কিত। একই সঙ্গে আসামি নজিবর, আনারুলেরও মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন ছেলে হারানো এই বাবা।  

সন্তানের মুখের দিকে তাকানো যায় না : ইব্রাহিমের স্ত্রী মাহমুদা বলেন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। সন্তানের মুখের দিকে তাকানো যায় না। আজ স্বামী হত্যার বিচারের রায় শুনতে সন্তানদের নিয়ে এসেছি।  ইব্রাহিমের ছেলে দশম শ্রেণির ছাত্র রনি বলেন, বাবাকে তো আর ফিরে পাবো না। কিন্তু বাবাকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার তো হবে। 

পলাতকদের গ্রেফতারে উচ্চ আদালতের আশ্রয় চাওয়া হবে : বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন বলেন, যারা পলাতক আছেন তাদের গ্রেফতারে করে আইনের আওতায় আনতে উচ্চ আদালতের আশ্রয় চাওয়া হবে। রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়ে তিনি বিচারককে ধন্যবাদ জানান। 

রায় ঘোষণার সময় মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে ২৩ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৭ জন র‍্যাবের সদস্য। মামলার শুরু থেকেই র‍্যাবের সাবেক ৮ সদস্যসহ ১২ আসামি পলাতক। 
  
এদিকে রায় ঘিরে সকাল থেকেই আদালতপাড়া ও এর আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। 

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। পরদিন ২৮ এপ্রিল ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নজরুল ইসলামের স্ত্রী। ওই মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর হোসেনকে প্রধান করে ৬ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ের জামাই বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় আরও একটি মামলা করেন। ৩০ এপ্রিল বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জন এবং ১ মে সকালে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।  পরে স্বজনরা লাশগুলো শনাক্ত করেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!